কলকাতা: শিক্ষক নিয়োগে লাগামছাড়া দুর্নীতি সংক্রান্ত রিপোর্ট আগেই প্রকাশ করেছে সিএজি৷ মামলা-মোকদ্দমায় থমকে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া৷ একাধিক দুর্নীতি ও স্বজন-পোষণের অভিযোগও উঠেছে৷ এবার এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে উচ্চ প্রাথমিকে চলতি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় চূড়ান্ত মেধাতালিকায় মাল্টিপল ব়্যাঙ্কিং তুলে দেওয়ার পথে হাঁটতে চলেছে শিক্ষা দপ্তর৷ এই সংক্রান্ত পরামর্শ ইতিমধ্যেই স্কুল সার্ভিস কমিশনের দপ্তরে এসে পৌঁছেছে বলে খবর৷
তবে সব দিক বিবেচনা করে মাল্টিপল ব়্যাঙ্কিং তুলে দেওয়ার বিষয়টি ভাবনাচিন্তা করতে শুরু করেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন৷ কেননা, একাধিক সময় দেখা যায়, একজনের নাম দু’তিন জায়গায় থাকছে৷ সেটা উঠে গেলে তাড়াতাড়ি নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যায় বলেও মত এসএসসির৷ বিষয়টি চালু করলে আইনি কোনও জটিলতা দেখা দেবে কিনা তা নিয়েও তৎপরতা শুরু করেছে কমিশন৷
কিন্তু প্রশ্ন উঠছে আদতে মাল্টিপল ব়্যাঙ্কিং ব্যবস্থা কী? কমিশনের দেওয়া তথ্য বলছে, সংরক্ষিত শ্রেণির প্রার্থীর কোনও বিষয়ে প্রথম দিকে নাম থাকলে তাঁর নাম একই সঙ্গে অসংরক্ষিত শ্রেণির তালিকার উঠে আসে৷ পাশাপাশি ওই প্রার্থী যদি মহিলা হন, তাঁর নামও ওই সংশ্লিষ্ট ক্যাটাগরিতে থাকে৷ ফলে, একজন প্রার্থী একাধিত শূন্যপদ আগলে থাকেন৷ তার জেরে পিছনের দিকে থাকা প্রার্থীদের সমস্যায় পড়তে হয়৷ আদতে স্কুল সার্ভিস কমিশনের তৈরি এইমাল্টিপল ব়্যাঙ্কিং ব্যবস্থায় আদতে বিস্তর গোলমাল রয়েছে বলেও অভিযোগ তোলেন চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ৷ কেননা গোটা পদ্ধতিটি বেশ জটিল৷
মূলত চাকরিপ্রার্থীদের অভিযোগের ভিত্তিতে এবার নিয়োগের জট খুলতে মাল্টিপল ব়্যাঙ্কিং তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে কমিশন সূত্রে খবর৷ তবে উচ্চ প্রাথমিকে নিয়োগ চলাকালীন এখানেও নয়া ব্যবস্থা কার্যকর করা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন৷
অভিযোগ উঠছে, নিয়োগ চলাকালীন এহেন নিয়ম পরিবর্তনের ক্ষেত্রে কমিশন কোন পরিবর্তন আনতে পারে কি না৷ এমনকী, আদালতের কোন নির্দেশ নেই৷ এই মুহূর্তে উচ্চ প্রাথমিকে ১৪ হাজার ৩৩৯ শূন্যপদে ৩৭ হাজার প্রার্থীকে ডাকা হয়েছে৷ হাজিরা দিয়েছেন ২৪ হাজার ৫৬৪ জন৷ আদালতের নির্দেশে আরও সাড়ে চার হাজার প্রার্থীকে ইন্টারভিউতে ডাকা হয়েছে৷ কিন্তু প্যানেল প্রকাশের মুখে মাল্টিপল ব়্যাঙ্কিং ব্যবস্থায় তুলে দিয়ে নিয়ম পরিবর্তনের ভাবনা ঘিরে উঠছে প্রশ্ন৷
যদিও বাজেট অধিবেশনে বিধানসভায় দাঁড়িয়ে শিক্ষামন্ত্রী নিজে ঘোষণা করেছিলেন, শিক্ষক নিয়োগে যেভাবে আইনি জটিলতা বাড়ছে এই সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় আমূল পরিবর্তন আনা হতে পারে বলেও ঘোষণা করেন শিক্ষামন্ত্রী৷ আরও সরলীকরণ করা হতে পারে৷ শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ওয়েটিং লিস্ট তুলে দেওয়ার পক্ষেও সওয়াল করেন তিনি৷ এবার শিক্ষামন্ত্রীর সেই ঘোষণার পর নয়া ব্যবস্থার দিকে এগচ্ছে শিক্ষা দপ্তর৷