কলকাতা: রাজ্য ও দেশের অর্থনীতি চাঙ্গা করতে ফের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার৷ বাংলায় এক লক্ষ কর্মসংস্থানের ঘোষণা করে দেউচা-পাঁচামিতে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম কলয়া ব্লক চালু করার সিদ্ধান্তের কথা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ ১১ হাজার একর এলাকাজুড়ে এই ব্লক থেকে প্রায় ২২০ কোটি টনের মতো কয়লা পাওয়া যেতে পারে৷ এই ব্লক চালু করা গেলে বাংলা ও দেশের অর্থনীতিক পরিস্থিতি বদলে যাবে বলেও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷
দেউচা-পাঁচামি কয়লা ব্লক খোলা নিয়ে আজ নবান্নে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ বৈঠক শেষে মুখ্যমন্ত্রী জানান, খনি নিয়ে তিন বছর টানাপোড়েনের পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র৷ এই ব্লক চালু করা গেলে ১ লক্ষ কর্মসংস্থান হবে৷ বাণিজ্যিকভাবে কয়লা উত্তোলন করা গেলে বাংলাকে কেন্দ্র করে দেশের অর্থনীতি বদলে যাবে৷ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই ব্লক ৫ বছরের মধ্যে কাজ শুরু করবে৷ কয়লা ব্লকের কাজ শুরু হলে লক্ষাধিক মানুষের কর্মসংস্থান হবে৷ কাজ শুরু হলে আগামী ১০০ বছরের বাংলায় কয়লার অভাব হবে না৷
জমি জটের আশঙ্কা থাকায় স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলার জন্য কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ মমতা বন্দোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ওখানে ৪০০ পরিবার আছে৷ তার মধ্যে ৩০-৩৫ জন আদিবাসী৷ তাঁদের মতামত নিয়ে কাজ হবে৷ মুখ্যসচিবকে নেতৃত্বে তৈরি হচ্ছে নয়া কমিটি কমিটি৷ কমিটির রিপোর্টের ও বিশেষজ্ঞ কমিটির রিপোর্ট দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷ পরিবারগুলির দায়িত্ব রাজ্য সরকার নেবে বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী৷
বীরভূমের মহাম্মদ বাজার ব্লকের এই দেউচা-পাঁচামি খনিতে প্রায় ২২০ কোটি কোটি টনের ওপর কয়লা মজুদ রয়েছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় কয়লা মন্ত্রক৷ এর মধ্যে এক কোটি টন পাবে রাজ্য সরকার৷ এই প্রকল্পের জন্য ১২ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হবে বলেও আগেই জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বাঁকুড়া, বীরভূম, বর্ধমান ও মুর্শিদাবাদের বেশ কিছু অংশে আর্থিক ও সামাজিক চেহারা বদলে যাবে বলে জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী৷
জানা গিয়েছে, ওই এলাকারটির মধ্যে প্রায় ৩০ থেকে ৩৫টি আদিবাসী পরিবার রয়েছে৷ আদিবাসী গ্রামের জমি হস্তান্তরের ক্ষেত্রে যেহেতু আইনি জটিলতা রয়েছে, ফলে রাজ্য সরকার সমস্ত দিক ভেবে চিন্তে দেখছে খবর৷ কেননা, গত সাতের দশকে বিজ্ঞপ্তি জারি করে ওই অঞ্চলে প্রায় ৫০০ একরের মতো জমি নিজেদের হেফাজতে নিয়েছিলেন রাজ্য সরকার৷ সেই সময় জমির মালিকদের বাৎসরিক ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করেছিল পশ্চিমবঙ্গ খনি উন্নয়ন ও বৃত্তি নিয়ম৷ মনে করা হচ্ছে, এবারও ওই প্রকল্পের জন্য আদিবাসী সম্প্রদায়ের বিকল্প কর্মসংস্থান ও পুনর্বাসন ব্যবস্থা দেওয়ার পরই এই প্রকল্পে হাত লাগাতে পারে রাজ্য৷