কলকাতা: ফের পুলিশের ভূমিকায় অসন্তোষ প্রকাশ করল কলকাতা হাইকোর্ট৷ পুজোর ছুটির অবসরকালীন বেঞ্চে বিধাননগর পুলিশ কমিশনারকে তুলোধোনা কলকাতা হাইকোর্টের৷ স্কুল সার্ভিস কমিশনে শিক্ষক সংগঠনের বিক্ষোভ কর্মসূচিতে পুলিশ অনুমতি না দেওয়ায় কলকাতা হাইকোর্টে বিধাননগর পুলিশকে তীব্র ভর্ৎসনা করা হয়৷ মিছিল-মিটিং করা নাগরিক অধিকার কিছুতেই হরণ করা যাবে না বলে আজ মামলার শুনানিতে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি শম্পা সরকার৷
নাগরিক অধিকার হরণ না করার পাশাপাশি শিক্ষক সংগঠনকে অবিলম্বে ডেপুটেশন দেওয়ার ব্যবস্থা করাতে পুলিশকে প্রয়োজনিয় ব্যবস্থা নিতেও বলেছে আদালত৷ আজ বিকালে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি শম্পা সরকারের এজলাসে মামলা ওঠে৷ স্কুল সার্ভিস কমিশনের নিয়োগ দুর্নীতির প্রতিবাদ জানিয়ে শিক্ষক ঐক্য মঞ্চের বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অনুমতি না দেওয়ায় দায়ের হয় মামলা৷ সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আজ কলকাতা হাইকোর্টের তরফে পুলিশকে তীব্র ভাষায় সমালোচনা করা হয়৷
মামলার শুনানি প্রসঙ্গে শিক্ষক ঐক্য মুক্তমঞ্চের আইনজীবী ফিরদৌস সামিম জানিয়েছেন, ‘‘আজ বিকেলে এই মামলা উঠেছিল৷ সেখানে কলকাতা হাইকোর্টের তরফে মিছিলের অনুমতি দিতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে৷ কিন্তু পুলিশের তরফে জানানো হয় ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে তাঁরা পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা করতে পারবে না৷ ফলে এক সপ্তার মধ্যে পুলিশকে সময় দেওয়া হয়৷ শিক্ষক ঐক্য মঞ্চ নতুন করে আবেদন করতে পারলে পুলিশ এক সপ্তার মধ্যে জানিয়ে দেবে কবে তাদের অনুমতি দেওয়া হবে৷ বিচারপতি শম্পা সরকারের জানিয়েছেন, ডেপুটেশন দেওয়ার অধিকার, জমায়েত করার অধিকার নাগরিক অধিকার৷ নাগরিক অধিকারকে কোন ভাবে হরণ করা যাবে না৷’’
এই প্রসঙ্গে শিক্ষক ঐক্য মুক্তমঞ্চের সাধারণ সম্পাদক মইদুল ইসলাম বলেন, ‘‘এই জয় গণতন্ত্রের জয়৷ প্রশাসন কখনও সাধারণ মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিতে পারে না৷ এই আইনি জয় অন্যান্য গণসংগঠন গুলিকেও উদ্বুদ্ধ করবে৷ দূর্ভাগ্যবশতঃ এই রাজ্যে অতি সাধারণ গণতান্ত্রিক অধিকার পুনরুদ্ধারের জন্য, মহামান্য আদালতের দ্বারস্থ হতে হচ্ছে৷ এটা শাসকের কাছে লজ্জার৷’’
সংগঠনের সহ সম্পাদক শ্রীমন্ত ঘোষ বলেন, ‘‘আবারও প্রমাণিত হল, দেশের সংবিধানের উর্দ্ধে কেউ না৷ এটা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার জন্য শিক্ষক ঐক্য মুক্তমঞ্চ শেষ দিন পর্যন্ত লড়াই করবে৷ এই দৃষ্টান্তমূলক রায়ের ফলে, সাধারণ মানুষের আস্থা কিছুটা হলেও ফিরে আসবে বিচারব্যবস্থার উপর৷ ফলে, আগামী শুক্রবার বিক্ষোভ কর্মসূচি বাতিল করে আগামী ২৫ অক্টোবর আমরা ডেপুটেশন দিতে যাব কমিশনের দপ্তরে৷ ওই দিন আদালতের নির্দেশিত উচ্চ প্রাথমিকে মেধাতালিকা প্রসঙ্গে অভিযোগ জানানোর শেষ দিন৷’’ যদিও এর আগে শিক্ষক সংগঠনের তরফে উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের মেধাতালিকায় দুর্নীতির অভিযোগ তুলে কমিশনের দপ্তর ঘেরাও কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়৷ কিন্তু, পুলিশের তরফে জানানো হয়, এসএসসির দপ্তরে ১৪৪ ধারা জারি আছে৷ ফলে, কোনও মিছিল-মিটিং করা যাবে না৷ পুলিশের তরফে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হয় মামলা৷ আজ ছিল সেই মামলার শুনানি৷