ছত্তিশগড়: রাজস্থান, তামিলনাড়ুর পর এবার ছত্তিশগড়৷ নিয়ম মেনে শারীরিক সক্ষমতা যাচাই করে বৃহন্নলাদের কনস্টেবল পদে নিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিল ছত্তিশগড় সরকার৷ এবার নেওয়া হবে লিখিত পরীক্ষাও৷ ইতিমধ্যেই নিয়োগের প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গিয়েছে৷ প্রশাসন সূত্রে খবর, রাজ্যে ২৭টি জেলায় কনস্টেবলের শূন্যপদে বৃহন্নলাদের নিয়োগ করা হবে৷ কনস্টেবল পদে চাকরি করার জন্য বৃহন্নলাদের শারীরিক সক্ষমতা মাপকাঠি কী হবে, তা খতিয়ে দেখছে ছত্তিশগড় পুলিশ৷ সুপ্রিম কোর্টে তাঁদের সমানাধিকারের দাবিতে স্বীকৃতি দেওয়ার পর, রাজস্থান ও তামিলনাড়ুতে পুলিশের চাকরি পেয়েছেন মাত্র দু’জন বৃহন্নলা৷
২০১৪ সালে সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ের পর, তামিলনাড়ু ও রাজস্থানে পুলিশে চাকরি পান দু’জন বৃহন্নলা৷ এবার সেই পথে হাঁটতে চলেছে ছত্তিশগড়ও৷ প্রশাসন সূত্রে খবর, রাজ্যের ২৭টি জেলায় ৩৫ হাজার কনস্টেবল নিয়োগ করার প্রস্তাব দিয়েছে ছত্তিশগড় পুলিশ৷ সুপ্রিম কোর্টে নির্দেশ মতো কনস্টেবল পদে তৃতীয় লিঙ্গ মানুষদের নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ ১৭টি জেলা আবার মাওবাদী-অধ্যূষিত৷ কনস্টেবল পদে যেসব বৃহন্নলা চাকরি পাবেন, তাঁদের এই ১৭টি জেলাতেও মোতায়েন করা হবে৷
লিখিত পরীক্ষা তো বটেই, পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে কর্মপ্রার্থীদের শারীরিক সক্ষমতাও যাচাই করে নেওয়া হয়৷ তাই বৃহন্নলা কর্মপ্রার্থীর শারীরিক সক্ষমতা মাপকাঠি কি হবে, এখন তা খতিয়ে দেখছে ছত্তিশগড় পুলিশ৷ সাধারণ কর্মপ্রার্থীদের মতোই বৃহন্নলাদেরও বয়সসীমাও ২৮ বছর৷ ছত্তিশগড়ে বৃহন্নলা ওবিসি শ্রেণিভুক্ত৷ সেই সুবাদে শিক্ষা ও সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে তাঁদের ১৫ শতাংশ সংরক্ষণ দেওয়া হয়৷ পুলিশের আধিকারিক জানিয়েছে, কনস্টেবল পদে নিয়োগের ক্ষেত্রেও বৃহন্নলাদের সংরক্ষণের সুবিধা দেওয়া হবে৷
জন্মসূত্রে অদ্ভূত শারীরিক গঠনের জন্য নানাভাবে হেনস্তা হতে হয়৷ সমাজও এঁদের একঘরে করে রেখেছে৷ তাই একপ্রকাশ বাধ্য হয়েই রাস্তায় গাড়ি থামিয়ে কিংবা নবজাতকের বাড়ি গিয়ে টাকা আদায় করে জীবন নির্বাহ করেন বৃহন্নলারা। কিন্তু, শারীরিক গঠন যাই হোক না, আর পাঁচজনের মতো বৃহন্নলারাও তো এদেশেরই নাগরিক৷ সবচেয়ে বড় কথা, তাঁরাও তো মানুষ৷ তাই তাঁদের কেন সুস্থভাবে বাঁচার অধিকার থাকবে না? যোগ্যতার ভিত্তিতে কেনই বা জীবিকা নির্বাহ করতে পারবেন না বৃহন্নলারা? এ বিষয়ে একটি মামলা হয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট৷ সেই মামলায় বৃহন্নলাদের তৃতীয় লিঙ্গ বলে ঘোষণা করে শীর্ষ আদালত৷ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ, নাগরিকের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যাবে না তাঁদের৷