কলকাতা: একের পর এক দুর্নীতি, মেধাতালিকায় চূড়ান্ত অনিয়মের জেরে মামলা ঝুলছে কলকাতা হাইকোর্টে৷ লাগামছাড়া দুর্নীতির দৌলতে থমকে গিয়েছে শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া৷ দীর্ঘ ৬-৭ বছর ধরে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ থাকায় চূড়ান্ত ক্ষতির মুখে বাংলার কয়েক লক্ষ প্রশিক্ষিত চাকরিপ্রার্থী৷ নিয়োগ না পেয়ে ক্ষোভে ফুঁসছেন চাকরি প্রার্থীদের একাংশ৷ দ্রুত নিয়োগের দাবিতে লকডাউন আবহে চলছে চাকরিপ্রার্থীদের নানান কর্মসূচি৷ এবার কুরবানির ইদের দিনেও শিক্ষক নিয়োগ চেয়ে পোস্টার হাতে ‘দিদি’র কাছে নিজেদের করুন আর্জি তুলে ধরলেন রাজ্যের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বেশ কয়েকজন শিক্ষক চাকরিপ্রার্থী৷
আজ শনিবার ইদের দিনে কয়েক চাকরিপ্রার্থী ভার্চুয়াল মাধ্যমে পোস্টার হাতে নিজেদের দাবি-দাওয়া তুলে ধরার চেষ্টা করেন৷ তাঁদের মধ্যে বেশিরভাগ প্রশিক্ষিত প্রাথমিক টেট উত্তীর্ণ প্রার্থী৷ টেট উত্তীর্ণ হওয়ার পরও নিয়োগ হয়নি পাননি বহু প্রার্থী৷ পাননি টেট পাসের সার্টিফিকেট৷ এই নিয়েও চলছে মামলা৷ কিন্তু, সরকারের প্রতিশ্রুতি ছিল দ্রুত হবে নিয়োগ৷ কিন্তু, এখনও তা হয়নি৷ লকডাউন, করোনা পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলেছে৷
দীর্ঘ দিন ধরে নিয়োগ না হওয়ায় আজ ইদের দিনেও প্রতিবাদে সামিল বেশ কয়েকজন চাকরিপ্রার্থী৷ আজ ‘দিদি’র কাছে নিয়োগের আর্জি জানিয়ে এক চাকরিপ্রার্থী লিখেছেন,‘দিদি আজ কুরবানি দেওয়ার সামর্থ নেই, কিন্তু শিক্ষক হওয়ার শর্ত পূরণ করেছি৷’ #Firiyedinadhirkar ট্যাগ ব্যবহার করে আরও লেখা হয়েছে, ‘প্রাথমিক টেট পাস প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত ২০১৫-১৭ চাকরিপ্রার্থী৷’ অন্য এক চাকরিপ্রার্থী লিখেছেন, ‘যথা সময়ে প্রশিক্ষণ শেষ করালে আমিও কুরবানি দিতে পারতাম৷ ইনশাআল্লাহ’ পোস্টারের নিচে লেখা, মীরকাশিম শেখ, প্রাথমিক টেট পাস প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ২০১৫-১৭ চাকরিপ্রার্থী৷ সোশ্যাল মিডিয়ায় নিয়োগের দাবিতে দু’ই চাকরিপ্রার্থীর পোস্ট ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়ে গিয়েছে৷
চাকরিপ্রার্থীদের অভিযোগ, ২০১৪ এর প্রাথমিক টেটে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে৷ টেট উত্তীর্ণ হওয়ার পরও টেট পাসের কোনও সার্টিফিকেট দেওয়ার হয়নি৷ যা NCTE – নিয়মেরও পরিপন্থী বলেও উল্লেখ করা হয়েছে৷ পরে সার্টিফিকেট আদায় করতে বহু প্রাথমিক টেট উত্তীর্ণ প্রার্থী হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন৷ সেই মামলা এখনও নিস্পত্তি হয়নি৷ অভিযোগ, পরবর্তীকালে ২০১৪-২০১৬ ব্যাচ ও RCI স্বীকৃত ২০১৫-২০১৭ ডিএড ব্যাচকে নিয়োগ পর্বের আওতায় আনা হলেও পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ অধীনস্থ ২০১৫-২০১৭ ব্যাচকে সম্পূর্ণভাবে বঞ্চিত করা হয়েছে৷ এর বিরুদ্ধে সবর হয়েছেন চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ৷