কলকাতা: মুখ্যমন্ত্রী নিজে আশ্বাস দিয়েছিলেন৷ শিক্ষামন্ত্রী গড়ে দিয়েছিলেন পাঁচ সদস্যের কমিটি৷ কমিটি গড়ে সাত দিনের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেও নেওয়া হয়৷ নিজেদের দাবি-দাওয়া কমিটির কাছে জানিয়ে আসেন স্কুল সার্ভিস কমিশনের অনশনরত সফল চাকরিপ্রার্থীদের প্রতিনিধি দল৷ সাত দিনের রিপোর্ট জমা হতে লেগে গেল ৬০ দিন৷ অবশেষে এসএসএসির অনশনরত চাকরিপ্রার্থীদের সমস্যা সমাধানে গঠিত পাঁচ সদস্যের কমিটি রিপোর্ট জমা দিল বিকাশ ভবনে৷
শিক্ষামন্ত্রী আগেই জানিয়েছিলেন, ‘‘সমস্যা মেটানোর জন্য পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গড়ে দিয়েছি৷ সেই কমিটিতে আছেন শিক্ষাসচিব মণীশ জৈন, এসএসসির চেয়ারম্যান সৌমিত্র সরকার৷ অনশনকারীদের অভিযোগ লিখিত ভাবে দিতে বলেছি৷ নবগঠিত কমিটি সেই সব অভিযোগ পরীক্ষা করবে৷ অভিযোগ সত্য হলে তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে ১৫ দিনের মধ্যে৷’’ তবে, এদিনের এই পাঁচ সদস্যের কমিটি ঠিক কী রিপোর্ট পেশ করেছেন, অশনরত চাকরিপ্রার্থীরা আদৌও চাকরি পাবেন কি না, তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে৷
কেননা, শিক্ষামন্ত্রী আগেই জানিয়েছিলেন, এসএসসির শূন্য পদ আপডেট বা হালতামামি হচ্ছে না বলে অনশনকারীরা যে-অভিযোগ করছেন, তা ঠিক নয়৷ এসএসসি-র গেজেটে পরিষ্কার লেখা আছে, নিয়োগ পরীক্ষার ফল যে-দিন বেরোবে, তার ১৫ দিন আগে পর্যন্ত যত শূন্য পদ থাকবে৷ সেটাই হল আপডেটেড খালি পদ। সেই নিয়মেই এখন নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে৷ ওয়েটিং লিস্ট মানেই প্যানেল, এটা ভুল ধারণা৷ ওয়েটিং লিস্টের কোনও আইনি বৈধতা নেই৷
অনশনকারী চারকিপ্রার্থীদের অভিযোগ, ৭ দিনের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলা কমিটি যদি ৬০ দিন পর বিকাশ ভবনে রিপোর্ট জমা দেয়, তাহলে ১৫ দিনের মধ্যে নিয়োগের প্রতিশ্রুতি কবে পূর্ণ হবে? এক্ষেত্রেও বাড়বে না তো সময়৷ গত ২৮ মার্চ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথার ওপর ভরসা রেখে অনশন প্রত্যাহার করেন SSC চাকরি-প্রার্থীদের একাংশ৷ এর আগে পরিস্থিতি মোকাবিলায় শিক্ষামন্ত্রীর তরফেও পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়৷ ওই কমিটির কাছে বিস্তারিত দাবি-দাওয়া জানিয়ে আসেন অনশনরত প্রার্থীরা৷ এর পর স্কুল শিক্ষা-দপ্তরের তরফেও পৃথক রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়৷ অভিযোগ, তাও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে হয়নি৷
সরাসরি এসএসসি অনশনকারী সঙ্গে দেখা করে মেয়ো রোডে অনশনস্থল থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ‘‘আপনাদের সমস্ত দাবিদাওয়া সহানুভূতি দিয়ে বিবেচনা করা হবে৷ মুখ্যমন্ত্রী অনশনকারীদের জানিয়েছিলেন, আদর্শ আচরনবিধি চালু হয়ে যাওয়ায় এখন কোনও প্রতিশ্রুতি তিনি দিতে পারবেন না। তবে জুনের প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই একটা ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে৷ তিনি যে অনশনকারীদের বিষয়টি অত্যন্ত মানবিকতার সঙ্গেই দেখছেন, তাও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তবে, মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাস অনুযায়ী তাঁদের দাবি পূরণ না হলে জুনের প্রথম সপ্তাহের পর থেকে ফের আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারিও দিয়ে রেখেছেন এসএসসি অনশনকারী মঞ্চের প্রতিনিধিরা৷