নয়াদিল্লি: প্রথমবার ক্ষমতায় আসার পর বছরে ২ কোটি করে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এখন দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার এক বছর পূর্তি হয়ে যাওয়ার পরেও সেই প্রতিশ্রুতি বহাল রাখতে পারেননি তিনি। উল্টে ধীরে ধীরে দেশের বেকারত্বের পরিমাণ বেড়েই চলেছে। লোকসভা নির্বাচনের সময়ে ভারতের বেকারত্বের হার বিগত ৪৫ বছরের তুলনায় সবচেয়ে নিম্নতম ছিল। সেই নিয়ে কংগ্রেসসহ বিরোধীদল কটাক্ষ করতে ছাড়েনি কেন্দ্রীয় সরকারকে। কিন্তু এখনও পরিস্থিতি খুব একটা বদলায়নি। শেষ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, অক্টোবর মাসের ভারতের বেকারত্বের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৭ শতাংশে। তবে বাংলার হালও খুব একটা ভালো নয়। পশ্চিমবঙ্গে বেকারত্বের হার ছুঁয়েছে ১০ শতাংশ। এমনই রিপোর্ট দিয়েছে সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকোনমি বা সি এম আই ই।
রাজ্যগুলির পরিসংখ্যান দেখতে গেলে দেখা যায়, হরিয়ানায় বেকারত্বের হার সবচেয়ে বেশি, ২৭.৩ শতাংশ, তার পরেই রয়েছে রাজস্থান ২৪.১ শতাংশ এবং জম্মু-কাশ্মীর ১৬.১ শতাংশ। এদিকে, অগাস্ট মাসে পশ্চিমবঙ্গের বেকারত্বের হার ছিল ১৪.৯ শতাংশ, সেপ্টেম্বর মাসে তা কমে দাঁড়ায় ৯.৩ শতাংশ। যদিও উৎসবের মাস অর্থাৎ অক্টোবরে বেকারত্বের হার আবারো বেড়ে প্রায় ১০ শতাংশে পৌঁছেছে। এক্ষেত্রে দেশের বেকারত্বের হারের তুলনায় পশ্চিমবঙ্গের বেকারত্বের হার যে বেশি তা স্পষ্ট৷
সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকোনমি’র রিপোর্ট আরও বলছে, গ্রাম্য এলাকায় বেকারত্বের হার বিগত কিছু মাসে কিছুটা হলেও কমে ছিল, তবে শহরাঞ্চলে যতদিন গেছে বেকারত্বের হার বেড়েছে। মূলত গত মাসে সেই হার সবচেয়ে বেশি। তবে এইভাবে বেকারত্বের হার বাড়ার কারণ কি? সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজলে জানা যাবে, করোনাভাইরাস পরিস্থিতি এবং লকডাউন এর জন্য দায়ী। কারণ লকডাউন প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর দেশের বিভিন্ন রাজ্যের বহু শতাংশ মানুষ নিজেদের কাজ হারিয়েছেন। মাসের-পর-মাস একাধিক সংস্থার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বেকারত্বের হার এইভাবে ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তথ্য বলছে, চলতি বছর মে থেকে অগাস্ট মাসের মধ্যে প্রায় ৬ কোটি লক্ষ মানুষ তাদের কাজ হারিয়েছে।
এর আগে সি এম আই ই দাবি করেছিল, মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময়ে দেশের বেকারত্বের হার ছিল ৮.৪ শতাংশ, এপ্রিলের শুরুতেই সেটা বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ২৩.৪ শতাংশ। একইসঙ্গে লকডাউনের প্রথম দুই সপ্তাহে ভারতজুড়ে প্রায় ৫ কোটি মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছিলেন। তখনই আন্দাজ করা গিয়েছিল পরিস্থিতি আরো ভয়ানক হবে ভবিষ্যতে। এখন দেশ তথা একাধিক রাজ্যের বেকারত্বের পরিসংখ্যান সামনে আসার পর সেই আশঙ্কাই স্পষ্ট হচ্ছে।