কলকাতা: শিক্ষক বদলি নিয়ে একাধিক অভিযোগের মধ্যে নয়া নির্দেশিকা জারি করল স্কুলশিক্ষা দফতর। নির্দেশিকায় স্পষ্ট ভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, বদলির ক্ষেত্রে বাড়ি থেকে স্কুলের দূরত্ব এবং শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বয়সের বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। সেইসঙ্গে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, ন্যূনতম পাঁচ বছর কর্মরত কোনও শিক্ষক বদলির আবেদন করলে, সাতদিনের মধ্যে পদক্ষেপ করতে হবে৷
আরও পড়ুন- রাজ্যে করণিক নিয়োগে বেনিয়ম, PSC-র বিরুদ্ধে স্যাটে-তে মামলা দায়ের ১০৩ পরীক্ষার্থীর
বুধবার স্কুলশিক্ষা দফতরের প্রকাশিত নির্দেশিকা অনুযায়ী, বদলির ক্ষেত্রে শিক্ষকের বাড়ি থেকে স্কুলের দূরত্ব এবং বয়সের ভিত্তিতে নির্দিষ্ট নম্বর দেওয়া হবে। কী ভাবে হবে এই নম্বরের বন্টন? বলা হয়েছে, আবেদনকারী শিক্ষকের বয়স যদি ৪০-র মধ্যে হয়, তাহলে তিনি ১ নম্বর পাবেন। ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়সী আবেদনকারী শিক্ষকরা পাবেন দুই নম্বর। ৫০ বছরের ঊর্ধ্বে আবেদনকারী শিক্ষকদের জন্য বরাদ্দ রয়েছে তিন নম্বর৷ একইভাবে যে শিক্ষকের বাড়ি তাঁর স্কুলের চেয়ে বেশি দূরে হবে, তিনি বেশি নম্বর পাবেন৷
প্রসঙ্গত, শিক্ষকদের বদলির জন্য গত বছর থেকে উৎসশ্রী পোর্টাল চালু করেছে রাজ্য সরকার। ওই পোর্টালের মাধ্যমে বাড়িতে বসেই বদলির জন্য আবেদন করতে পারেন শিক্ষকরা। কিন্তু এই পোর্টাল নিয়েও নানা অভিযোগ রয়েছে শিক্ষকদের মধ্যে৷ পাশাপাশি বদলি চাওয়া শিক্ষকদের একাংশের অভিযোগ, ‘নো অবজেকশন সার্টিফিকেট’ বা এনওসি দিতে টালবাহানা করছে স্কুল৷ অনেক ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে এনওসি-ই দেওয়া হচ্ছে না। এ প্রসঙ্গে স্কুলগুলির বক্তব্য, অনেক ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে বেশ কয়েকটি বিষয় পড়ানোর দায়িত্ব রয়েছে একজন শিক্ষকের উপরে৷ সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক যদি বদলি নিয়ে অন্যত্র চলে যান, তাহলে ক্লাস করানোটাই মুশকিল হয়ে উঠবে৷ বদলি চাওয়া শিক্ষক আর স্কুল কর্তৃপক্ষের এই যুক্তি আর পালটা যুক্তির মধ্যেই প্রকাশিত রাজ্যের সংশোধিত নির্দেশিকা৷ সেখানে সাফ বলা হয়েছে, গোটা বিষয়টি দেখবে জেলার স্কুল পরিদর্শক (ডিআই)৷
রাজ্য সরকারের নয়া নির্দেশিকায় নিয়মের বদল আনা হয়েছে বিশেষভাবে সক্ষম শিক্ষকদের বদলির ক্ষেত্রে৷ বলা হয়েছে, যে সকল শিক্ষকদের শারীরিক প্রতিবন্ধকতা ৬০ শতাংশ বা তার বেশি, তাঁদের বদলির বিষয়টা গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হবে৷ আগে এই মাপকাঠি ছিল ৪০ শতাংশ।
নয়া নির্দেশিকায় আরও বলা হয়েছে, শারীরিক অসুস্থতার কারণে কোনও শিক্ষক বদলির আবেদন জানালে তাঁকে অবশ্যই চিকিৎসকের সার্টিফিকেট এবং প্রেসক্রিপশন দেখাতে হবে৷ শিক্ষক বা শিক্ষিকার স্ত্রী/ স্বামী বা সন্তানের থ্যালাযসেমিয়া বা হৃদরোগের মতো জটিল অসুখ থাকলে তাঁরা বদলির ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন৷