কলকাতা: ছিল আশা৷ জল্পনাও ছিল তুঙ্গে৷ আজ কলকাতা হাইকোর্টের দিকে তাকিয়ে ছিলেন রাজ্যের কয়েক লক্ষ চাকরিপ্রার্থী৷ কিন্তু সব আশা-ভরসা চুরমার করে ফের পিছিয়ে গেল উচ্চ প্রাথমিকে নিয়োগের ভবিষ্যৎ৷ ফলে পুজোর আগে উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়াটি আপাতত ঠাণ্ডা ঘরে চলে যাচ্ছে বলেই মনে করছেন পর্যবেক্ষক মহলের একাংশ৷
আদালত সূত্রে খবর, আজ ছিল উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের ওপর স্থগিতাদেশ মামলার শুনানি৷ শুনানির শুরুতেই কমিশনের তরফে জানানো হয়, নির্ধারিত অনুপাত বজায় রেখে সমস্ত সফল চাকরিপ্রার্থীদের বিস্তারিত তথ্য পিডিএফ আকারে প্রকাশ করা হবে৷ সফল চাকরিপ্রার্থীদের বিস্তারিত তথ্য পিডিএফ আকারে প্রকাশ করার সওয়াও করা হয়৷ কমিশনের তরফে আজ স্থগিতাদেশ তুলে নেওয়ার বিষয়ে জোর সকল করা হয়৷ একই সঙ্গে মেরিট লিস্ট প্রকাশের বিষয়ে আজই মেরিট লিস্ট প্রকাশ করা হবে বলেও কমিশনের তরফে যুক্ত দেওয়া হলেও কাজে আসেনি সেই যুক্তি৷ জানা গিয়েছে, ইন্টারভিউ পর্বে চাকরিপ্রার্থীদের প্রাপ্ত নম্বরের তালিকা প্রকাশের বিষয়ে কলকাতা হাইকোর্টের তরফ থেকে হলফনামা পেশ করতে কমিশনকে নির্দেশ দেওয়া হয়৷
যদিও, এর আগেও কলকাতা হাইকোর্টের তরফে মেরিট লিস্ট প্রকাশের বিষয়ে কমিশনকে নির্দেশ দেওয়া হয়৷ সেই নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে পাল্টা যুক্তি খাড়া করে কমিশন৷ এই নিয়ে মামলাকারীদের আইনজীবী তীব্র বিরোধিতা করেন৷ সওয়াল-জবাব শেষে কলকাতা হাইকোর্টের তরফে আগামী বৃহস্পতিবার ফের মামলার শুনানির দিন ধার্য করা হয়৷ তবে, নিয়োগের উপর স্থগিতাদেশ এখনও তুলে নেয়য়নি আদালত৷
কিন্তু, প্রশ্ন উঠছে, পুজোর আগে নিয়োগ শেষ করতে কমিশন কেন ১:১:৪ অনুপাতে প্যানেল করল করল না? তাহলে হঠাৎ কেন রাতারাতি প্যানেল প্রকাশের আশ্বাস দিচ্ছে? কমিশন কি আদৌ সফল চাকরিপ্রার্থীদের নম্বর-সহ পিডিএফের তালিকা প্রকাশ করবে? আপার মামলা জিতলেই কি ১৪৩৩৯ শূন্যপদে প্যানেল আজই প্রকাশ করে দিতে পারত কমিশন? তাহলে কেন এতদিনে তা প্রকাশ করা সম্ভব হল না? আগামী সপ্তাহে যদি মামলার নিয়োগের উপর স্থাগিতাদেশ উঠে যায়, তাহলে তার পর কমিশনের হাতে দু’তিন দিনের বেশি সময় থাকবে না৷ ফলে, যে নিয়োগ শেষ করতে চার বছর লেগে গেল, রাতারাতি দু’তিন দিনের মধ্যে প্যালেন কীভাবে প্রকাশ সম্ভব? প্রশ্ন তুলছেন চারকিপ্রার্থীদের একাংশ৷
গত ২০১৫ সালে ১৬ আগস্ট উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা নেয় স্কুল সার্ভিস কমিশন৷ ২০১৬-র ১৪ সেপ্টেম্বর ফলাফল প্রকাশিত হয়৷ এর দু’বছর পর ২০১৮ সালে চাকরিপ্রার্থীদের তথ্য যাচাইয়ের জন্য তালিকা প্রকাশ করে কমিশন৷ এরপর ২০১৯-এ ফেব্রুয়ারি লাগাতার আন্দোলনের পর কার্যত বাধ্য হয়ে ভেরিফিকেশনের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে স্কুল সার্ভিস কমিশন৷ ভোটের মধ্যে তৃতীয় দফার ফেরিফিকেশন করার কথা কমিশনের তরফে জানানো হলেও তা করা সম্ভব হয়নি৷ ফলে, তা বেশ খানিকটা পিছিয়ে দেওয়া হয়৷ ভোটের পর ফেরিফিকেশন পর্ব মিটিয়ে ইন্টারভিউ নেওয়ার কাজ শুরু করে কমিশন৷ এরপরই নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ তুলে হাইকোর্টে দায়ের হয় মামলা৷ নিয়োগে স্থাগিতাদেশ দেয় আদালত৷ এখনও চলছে সেই মামলা৷