ইংরেজবাজার: বছরে দু’কোটি চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়েও রাখতে পারেনি বিজেপি সরকার৷ কিন্তু, সেই সরকারি দলের সভাপতির মুখেই এবার উঠে এল বাংলার কর্মসংস্থানের প্রসঙ্গ৷ মালদহের জনসভা মঞ্চ থেকে বাংলার কর্মসংস্থান ও সরকারি কর্মীদের বঞ্চনার কথা তুলে ধরলেন মোদির সেনাপতি অমিত শাহ৷ সরকারি চাকরিতে দুর্নীতি ও সপ্তম পে কমিশন চালু না হওয়ার প্রসঙ্গ তুলে তৃণমূল সরকারকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন তিনি৷
শুরুতেই মমতা সরকারের উৎখাতের ডাক দিয়ে বলেন, ‘‘আজ বাংলায় বেকারত্ব বাড়ছে৷ রাজ্য সরকার শিক্ষিত যুবক-যুবতীদের কর্মসংস্থান দিতে ব্যর্থ৷ বাংলায় চাকরি না থাকলেও বোম-পিস্তল তৈরির কারখানার বেড়েছে৷ শিল্প নেই, অস্ত্র তৈরি এখানে শিল্পে পরিণত হয়েছে৷ এর থেকে মুক্তি পাওয়া জরুরি৷’’ এদিন সরকারি কর্মীদের মোন পেতে বিজেপি সভাপতির মন্তব্য, ‘‘আজ বাংলার সরকারি কর্মচারীরা সব থেকে বঞ্চিত৷ সরকারি কর্মীদের প্রাপ্য দেওয়া হয় না৷’’ বকেয়া মহার্ঘভাতা ও রাজ্যে সপ্তম বেতন কমিশন কেন চালু করা হয়নি? তা নিয়েও রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খোলেন অমিত শাহ৷ রাজ্য সরকারি কর্মীদের বকেয়া ডিএ নিয়েও সরব হন অমিত শাহ। তিনি বলেন, ‘‘৪৯ শতাংশ ডিএ বাকি৷ ডিএ দিতে পারছে না, কোথায় গেল এইসব পয়সা? সেই সমস্ত পয়সা বের করতে হবে।’’ মালদহের সভায় তিনি বলেন, ‘‘ভারতীয় জনতা দলের সরকার বাংলায় ক্ষমতায় এলেই প্রথম ক্যাবিনেট বৈঠকে সপ্তম বেতন কমিশনের সুপারিশ কার্যকর করব৷’’
মঙ্গলবার ১০২ জ্বর নিয়ে বাংলায় এসে তৃণমূল সরকারকে উপড়ে ফেলার ডাক দিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ৷ মালদহের জনসভা মঞ্চ থেকে অমিত শাহের মন্তব্য, ‘‘বাংলায় ক্ষমতায় এলে আমরা সিন্ডিকেট ট্যাক্স ছাড় দেব৷ আমি কথা দিচ্ছি৷ আপনাদের আর সিন্ডিকেট ট্যাক্স দিতে হবে৷ আমরা ক্ষমতা এলে বাংলাকে সোনায় মুড়ে ফেলব৷’’ বলেন, ‘‘মমতাকে শিক্ষা দিতে হলে, লোকসভা নির্বাচনে যোগ্য জবাব দিতে হবে৷’’ মহাজোটের প্রসঙ্গ তুলে অমিতের মন্তব্য, ‘‘কীসের মহাজোট? যেখানে ভারত মাতার জয়েক ধনি ওঠে না, সেখানে বিরোধিরা বলছেন, দেশ বাঁচাবেন?’’ অমিতের মন্তব্য, ‘‘ব্রিগেডের মঞ্চে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার লাইন লেগে গিয়েছে৷ এক মঞ্চে ন’জন প্রধানমন্ত্রী? কিন্তু, আমাদের একজনই মুখ, মোদি৷’’ এদিন মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করে বলেন, ‘‘মমতা সরকারের ট্রান্সফর্মার বিকল হয়ে গিয়েছে৷ ট্রান্সফর্মার বিকল হয়ে গেলে আপনি কী করবেন? ফেলে দেবেন৷ তাহলে, তাই করুন৷’’
তাঁর মন্তব্য, ‘‘আজ আমি তৃণমূল সরকারের গণেশ উল্টে দিতে এসেছি৷’’ এদিন বাম সরকারের সঙ্গে বর্তামান সরকারের তুলনা টানেন অমিত শাহ৷ বলেন, ‘‘বাম সরকার তাও কিছুটা ভাল ছিল, কিন্তু, তৃণমূল সরকার আরও খারাপ৷’’ কেন্দ্র-রাজ্যের সংঘাতের প্রসঙ্গ তুলে ধরেও মমতা সরকারকে আক্রমণ করেন অমিত শাহ৷ মমতাকে কত টাকা দিয়েছে কেন্দ্র? বিজেপির জনসভা মঞ্চ থেকে ঘোষণা করেন অমিত শাহ৷
এদিন বলেন, ‘‘ইউপিএ আমলে কেন্দ্রের তরফে ১ লক্ষ ৩২ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়েছিল৷ কিন্তু, জানেন নরেন্দ্র মোদির সরকার বাংলাকে কত টাকা দিয়েছে? গত সাড়ে চার বছরে ৩ হাজার ৫৫ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে৷ কিন্তু, তার পরও দিদির টাকা কম পড়ে যায়৷ কিন্তু, কেন টাকা কম পড়ে জানেন? দিদির নেতারাই সেই টাকা খেয়ে নেয়৷’’
বাংলার গণতন্ত্র আক্রান্ত বলে অভিযোগ তোলেন তিনি৷ বলেন, ‘‘আজ আমাদের সভা করতে দেওয়া হচ্ছে না৷ মমতা দিদি বিজেপিকে ভয় পেয়ে গিয়েছে৷ তাই আমাদের বাধা দেওয়া হচ্ছে৷’’ পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রসঙ্গ তুলে বলেন, ‘‘পঞ্চায়েতে মনোনয়ন জমা দিতে দেওয়া হয়নি৷ গণনাকেন্দ্রেও ভোট চুরি হচ্ছে৷ এটাই কী বাংলার গণতন্ত্র?’’ এদিন মুখ্যমন্ত্রীকে বলেন, ‘‘দেশভক্তি কাকে বলে আমাদের দেখে শিখুন৷’’
BJP President Amit Shah in Malda: Bomb and weapon making industries are prevalent in Bengal. Where Rabindra Sangeet used to play, bomb blasts fill the air. The BJP shall bring the glory back to Bengal. This is what a real speech from a leader sounds like. pic.twitter.com/uUJPceTMC9
— ANI (@ANI) January 22, 2019