কলকাতা: একটি লেখা সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘোরাফেরা করছে। সেখানে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের বেশ কিছু নেতা নেত্রীর নাম রয়েছে। তাঁরা হলেন – লগ্নজিতা চক্রবর্তী, মনিশঙ্কর মণ্ডল বা জয়া দত্ত। একটি সাধারণ অভিযোগ রয়েছে এদের সকলের বিরুদ্ধে। সেটা হল, তৃণমূল করার জন্য, রাজ্য সরকারের নেক নজরে থেকে এরা চাকরি পেয়েছেন।
লগ্নজিতা চক্রবর্তী- ছিলেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক। বর্তমানে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাসিসট্যান্ট প্রফেসর পদে চাকরি করছেন। ওই ভাইরাল পোস্টে লেখা হয়েছে, অনেক যোগ্যকে টপকে লগ্নজিতা চাকরি পেলেন। কালীঘাটের আদেশ কার্যকর করলেন সুবিরেশ ভট্টাচার্য -যিনি উত্তরবঙ্গ বিশ্ব বিদ্যালয়ের উপাচার্য।
একই গল্প মনিশঙ্করের। ভাইরাল পোস্টে লেখা হয়েছে, তিনি তৃণমূল ছাত্রপরিষদের রাজ্য সহ সভাপতি ছিলেন, অমিত শাহকে কাল পতাকা দেখিয়েছিলেন। সেই কারণেই সরকারি চাকরির পুরস্কার পেয়েছেন। বর্তমানে তিনি সংস্কৃত কলেজের এসিস্টেন্ট প্রফেসর।
ভাইরাল পোস্টে লেখা হয়েছে, “দত্ত জয়া – তৃণ ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি ছিলেন । রবীন্দ্র ভারতীতে distance courseএ MA করে প্যানেলে থাকা first class gold medalist কে টপকে asst. registrar পদে ওয়েস্ট বেঙ্গল state university তে যোগ দেবেন । কালীঘাটের আদেশে । এগিয়ে বাংলার মানচিত্রে এভাবেই মমতায়ন বা পার্থায়ন হয়ে চলেছে প্রতিদিন । কোন “বুদ্ধিজীবীকে” এসব নিয়ে মুখ খুলতে দেখছেন ? কেউ কোনোদিন ? কোন বিরোধী রাজনৈতিক দল কোন কথা বলছে এ নিয়ে ? কোন সংবাদ মাধ্যমে দু’ লাইন সমালোচনা বেরোচ্ছে এসব নিয়ে ? কোন রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনকে দেখছেন এ নিয়ে প্রতিবাদে কলেজ স্ট্রীটে মিছিল করতে ?”
আরও লেখা হয়েছে, “বলবেন তো খবরগুলো পাননি, তাই………? চেষ্টা করেছেন কোনোদিন এই অনাচারগুলো খুঁজে বার করতে…? ভেবে দেখেছেন কি কত উজ্জ্বল ছাত্র ছাত্রী বঞ্চিত হচ্ছেন এই নৈরাজ্যের ফলে ?”
লেখা হয়েছে, “ভাবার সময় কোথায় ? NRC, CAA, NPR নিয়ে মেতে থাকুন । কে কত দেশপ্রেমিক তার লড়াইয়ে ব্যস্ত থাকুন । আজাদি আর জয় শ্রীরামে বিভোর থাকুন । সেই সুযোগে হেঁশেলে ঢুকে লুঠ আর ছিনতাই হয়ে যাক একে একে ‘তরুণের স্বপ্ন’ গুলো।”
ভাইরাল পোস্টে উত্তরবঙ্গ বিশ্ব বিদ্যালয়ের উপাচার্য সুবিরেশ ভট্টাচার্জ'র ব্যাপারে লেখা হয়েছে, “বাঙালির আসলে এটাই প্রাপ্য । স্কুল সার্ভিসে অন্তহীন ঘোটালা করে সুবিরেশ এখন উপাচার্য । মন দিয়ে তৃণ ছাত্র পরিষদও করছেন । প্রভুদের খুশী রাখতে তাঁদের সঙ্গে ধর্নায়ও বসছেন । কলেজ সার্ভিস কমিশনকে দুর্নীতির সাগরে ডুবিয়ে দীপক কর এখন ‘উপাচার্য’ হয়ে তৃণ ছাত্র পরিষদে মন দিয়েছেন। রবীন্দ্র ভারতীতে বাণ্টি বাবলি, যাদবপুরে মাফিয়া বিনয়, সুরেন্দ্রনাথে কান কাটা দেবুরা রাজত্ব চালাচ্ছেন উপাচার্যরা ‘পরিষদে’ মন দিচ্ছেন।”
বাদ যাননি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোনালী চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়। ভাইরাল পোস্টে তাঁর ব্যাপারে লেখা হয়েছে, “কলকাতার ‘সোনালী’ এখন আচার্যের সঙ্গে লুকোচুরি খেলায় ব্যস্ত থাকছেন। এই ভাবেই ‘মমতায়ন আর পার্থায়ন-’এর ক্রনিক জন্ডিসে আক্রান্ত আজ বাংলার শিক্ষাঙ্গণ ।”
পোস্টের বলা হয়েছে, ” ‘হেপাটাইটিস’কেও রাজনীতিবিদ কিম্বা বুদ্ধিজীবীরাও সবাই কি অদ্ভুত ভাবে সয়ে নিয়েছেন। আর তারই সুযোগে শুধু ট্রেজারি নয়, সততার সঙ্গে শাসক, প্রতিদিন লুঠ করে নিয়ে চলে যাচ্ছে বাঙালির মেধা, শিক্ষা আর যোগ্যতাকে । ফলে প্রায় নিয়ম করে প্রতিদিন এক রাশ যন্ত্রণা বুকে নিয়ে বাংলার মেধা পাড়ি দিচ্ছে বাঙ্গালোর, হায়দারাবাদ, চেন্নাইয়ের ফ্লাইটে, প্রাপ্য স্বীকৃতির খোঁজে । কেউ ভাববেন না এসব নিয়ে ??’’
ভাইরাল পোস্টের সত্যতা যাচাই করেনি আজ বিকেল ডট কম৷