ফের শিক্ষক বিদ্রোহে তপ্ত বাংলা, বেতন বঞ্চনার ক্ষোভের সুনামি বিকাশ ভবনে!

এর আগে গত ৩ নভেম্বর বেতন বৈষম্যের প্রতিবাদে শহিদ মিনারে ৩ দিনের ধর্নায় বসেন গ্রাজুয়েট শিক্ষকদের একাংশ৷ এবার লক্ষ্য বিকাশ ভবন৷

 

কলকাতা: ক্ষোভ আগেই ছিল৷ চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে ছিল বেতন বঞ্চনার যন্ত্রণা৷ বঞ্চনা ঘোচাতে ধর্না, মিছিল, মিটিং, প্রতিবাদ-বিক্ষোভ করেও মেলেনি সমাধান৷ উল্টে বর্ধিত বেতনেও বঞ্চনা আরও তীব্র হয়েছে৷ প্রাথমিক শিক্ষক, পার্শ্ব শিক্ষক, বৃত্তিমূলক শিক্ষকদের ধর্না কর্মসূচির পর আদালতের অনুমতি নিয়ে এবার রাজপথ কাঁপিয়ে ধর্না কর্মসূচিতে নামছেন রাজ্যের কয়ের হাজার গ্র্যাজুয়েট শিক্ষক৷ কেন্দ্রীয় সরকারের প্রশিক্ষিত ও স্নাতক শিক্ষকদের বেতনক্রম অনুযায়ী বেতনের দাবিতে প্রায় এক সপ্তাহ ধর্না কর্মসূচিতে নামছে গ্র্যাজুয়েট টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন৷

বিকাশ ভবনের সামনে ধর্না বিক্ষোভের কর্মসূচি জন্য রাজ্য প্রশাসনের তরফে অনুমতি না পেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় গ্র্যাজুয়েট শিক্ষকদের সংগঠন গ্র্যাজুয়েট টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন৷ কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের এলজাসে মামলার নিষ্পত্তি ঘটে৷ শিক্ষকদের কর্মসূচিতে অনুমোদন দেয় আদালত৷

কলকাতা হাইকোর্টের তরফে আগামী কাল থেকে  ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিকাশ ভবনের সামনে ধর্না কর্মসূচির অনুমোদন পেতেই শুরু হয় চূড়ান্ত প্রস্তুতি৷ সোমবার বিকাশ ভবনে ধর্না কর্মসূচিতে অংশ নিতে ইতিমধ্যেই উত্তরবঙ্গ থেকে রওনা হয়েছেন কয়েক হাজার শিক্ষক৷ দক্ষিণবঙ্গে শিক্ষকরাও ধর্নায় অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন৷

কিন্তু, স্কুল ফেলে কেন এই ধর্না কর্মসূচি? বৃহত্তর গ্র্যাজুয়েট টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনে তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকারের প্রশিক্ষিত ও স্নাতক শিক্ষকদের যে বেতনক্রম দেওয়ার বিষয়ে কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দিলেও তা এখন কার্যকর করা হয়নি৷ কেরিয়ার অ্যাডভান্সমেন্ট স্কিম কার্যকর করার দাবি দীর্ঘ দিন ধরে তুলে ধরার চেষ্টা করা হলেও তা মান্যতা পায়নি৷

কেন এই আন্দোলন? এর কারণ হিসেবে শিক্ষক সংগঠনের তরফে জানানো হয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ম অনুযায়ী টিজিটি ও পিজিটি ক্যাটাগরির শিক্ষকদের ব্যাসিক পে’র মধ্যে পার্থক্য থাকার কথা ২৭০০ টাকা৷ কিন্ত বর্তমানে এই রাজ্যে সেই পার্থক্য কয়েক গুন বেড়ে গিয়েছে৷ শিক্ষক সংগঠনের দাবি, রাজ্য সরকার গ্রাজুয়েট শিক্ষকদের পাস ক্যাটাগরিতে অন্তর্ভুক্ত করে রাখায় এই পার্থক্য বেড়েই চলেছে৷ গ্রাজুয়েট শিক্ষকদের টিজিটি স্কেল না মিটিয়ে ষষ্ঠ পে কমিশন কার্যকর হওয়ায় সেই পার্থক্য আরও বেড়েছে৷ এই বেতন বঞ্চনার বিরুদ্ধে হাইকোর্টের মামলা দায়ের ও রায় ঘোষণার পরও সমস্যা সমাধান হয়নি বলে অভিযোগ শিক্ষকদের৷ হাইকোর্টের তরফে টিজিটি স্কেল মেটানোর নির্দেশ সত্ত্বেও রাজ্য সরকার হাইকোর্টের রায় মেনে গ্রাজুয়েট শিক্ষকদের বেতন বৈষম্য মেটাচ্ছে না বলেও অভিযোগ শিক্ষক সংগঠনের৷ আর তার জেরেই ফের বিদ্রোহ শিক্ষকদের৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *