নয়াদিল্লি: বিএসএনএল বিক্রি করা হবে না৷ করা হবে না বেসরকারিকরণ৷ এমটিএনএল ও বিএসএনএলকে সংযুক্তিকরণের কথা বলে রাষ্ট্রায়ত্ত এই টেলিকম সংস্থাকে বাঁচানোর বিষয়ে তোড়জোড় শুরু করেছিল কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকার৷ মন্ত্রিসভায় একগুচ্ছ প্রস্তাব ঢাকঢোল পিটিয়ে ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয়মন্ত্রী রবি শংকর প্রসাদ৷ কিন্তু কেন্দ্রের ওই ঘোষণায় বিএসএনএলের পুনরুজ্জীবন দেওয়ার লক্ষ্যের আড়ালে ছিল ভয়ঙ্কর ইঙ্গিত! এবার সেই ইঙ্গিতকে কার্যত বাস্তবায়নের পথেই হাঁটতে চলেছে কেন্দ্র৷ জারি নয়া নির্দেশ৷
জানা গিয়েছে, খরচে লাগাম দিতে এবার সরাসরি কর্মী ছাঁটাই পর্ব শুরু করছে কেন্দ্র৷ রেলের পর এবার বিএসএনএলের কর্মীদের আগামী ৩১ জানুয়ারির মধ্যে স্বেচ্ছাবসর কার্যত বাধ্যতামূল করা হচ্ছে৷ আগামী বছর ৩১ জানুয়ারি থেকে স্বেচ্ছাবসরের নির্দেশ কার্যকর হবে৷ স্বেচ্ছাবসরের জন্য আবেদন করতে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে কর্মীদের৷ আগামী ৩ ডিসেম্বর বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত স্বেচ্ছাবসর আবেদন জানানো যাবে৷ সোমবার রাত থেকে চালু হয়েছে এই স্বেচ্ছাবসরের নির্দেশ৷
আগামী বছর ৩১ জানুয়ারির মধ্যে যে কর্মীদের বয়স ৫০ হয়ে যাচ্ছে, তাঁদের একপ্রকার স্বেচ্ছাবসর নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে৷ ইতিমধ্যেই স্বেচ্ছাবসরের আবেদন গ্রহণ করতে শুরু করেছে বিএসএনএল৷ কর্মীদের জন্য নির্দিষ্ট ওয়েব পোর্টাল থেকে স্বেচ্ছা অবসরের আবেদন জানানো যাবে৷ ইতিমধ্যেই কর্মী ইউনিয়নের সংগঠনের তরফে বৈঠক করেন কেন্দ্রীয়মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ৷ সেখানেই বিএসএনএলের কর্মীদের স্বেচ্ছাবসরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়৷
গত ২৩ অক্টোবর, বিএসএনএল ও এমটিএনএল বাঁচাতে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া যায়, তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায়৷ সেখানে বেশ কিছু প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা মন্ত্রিসভা৷ সিদ্ধান্ত হয়েছে, বিএসএনএল ও এমটিএনএলকে বাঁচাতে ১৫ হাজার কোটি টাকার বন্ড বাজারে ছাড়া হবে৷ ওই টাকা বিএসএনএলের উন্নয়নে কাজে লাগানো হবে৷ একইসঙ্গে ফোর-জি স্পেকট্রাম বিএসএনএলের জন্য খুলে দেওয়া হবে৷ তুলে দেওয়া হবে ফ্রি-পরিষেবা৷ ৪৮ হাজার কোটি টাকার যে জমি রয়েছে বিএসএনএলের হাতে, সেই সম্পত্তি বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ সেই জমি বিক্রির টাকায় বিএসএনএলের খরচ জোগান দেওয়া হবে৷
বিএসএনএলের কর্মীদের বেতন কমানোরও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে৷ ৫ শতাংশ বেতন কমানো ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে বলে খবর৷ একইসঙ্গে কর্মীদের স্বেচ্ছাবসরের প্রস্তাব দেওয়া হবে৷ কর্মীদের স্বেচ্ছাবসরের প্রস্তাব দিয়ে ১০ হাজার টাকা বাঁচানো যাবে৷ একইসঙ্গে বিএসএনএল ও এমটিএনএলকে সংযুক্তিকরণ করিয়ে দেওয়া হবে৷ যদিও এমটিএনএল একটি বিদ্যুৎ সংস্থার অধিনস্থ৷ বিষয়ের সঙ্গে সংযুক্তিকরণের ক্ষেত্রে আইনি জটিলতা থাকতে পারে সেই বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷
বিএসএনএলের পুনরুজ্জীবনে বিষয়ে রবিশঙ্কর প্রসাদ জানিয়েছেন, ‘‘বিএসএনএল ও এমটিএনএলের বিষয়ে আমাদের কেন্দ্র সরকারের মতামত খুবই পরিষ্কার৷ এই দুই সংস্থা ভারতের সম্পদ৷ ভারতীয় সেনার নেটওয়ার্ক বিএসএনএলের মাধ্যমে চলে৷ ব্যাংকের নেটওয়ার্ক বিএসএনএলের অধিকাংশ দখল রয়েছে৷ এমটিএনএল সক্রিয় দিল্লি ও মুম্বইয়ে৷ আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এই দুই সংস্থা কখনও বন্ধ করা হবে না৷ কোন বিলগ্নিকরন বা বেসরকারিকরণ হবে না৷ কোনও তৃতীয় সংস্থার হাতে এই সংস্থার তুলে দেওয়া হবে না৷ আমরা এই সংস্থাকে বিক্রি করে দেব না৷ এটা কেন্দ্র সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷’’