আদেশনামা পেয়েও হচ্ছে না বদলি, বিকাশ ভবনে স্মারকলিপি শিক্ষকদের

আদেশনামা পেয়েও হচ্ছে না বদলি, বিকাশ ভবনে স্মারকলিপি শিক্ষকদের

কলকাতা: দীর্ঘ দিন ধরে রাজ্যে বন্ধ রয়েছে সাধারণ ও আপস বদলি৷ যার জেরে চূড়ান্ত সমস্যায় পড়তে হয়েছে রাজ্যের বহু শিক্ষক-শিক্ষিকাকে৷ দীর্ঘদিন ধরে বিক্ষোভ অভিযোগের পর গত মাসে বদলি প্রক্রিয়া শুরু করার আশ্বাস দেন খোদ শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷ তিনি জানান, নিজের জেলার বদলি হওয়ার সুযোগ পাবেন শিক্ষকরা৷ কিন্তু এখনও সেই নির্দেশ কার্যকর হয়নি৷ আদেশনামা হাতে পেলেও বদলি প্রক্রিয়া শুরু হয়নি৷ এর প্রতিবাদে বুধবার বিকাশ ভবনের প্রধান সচিব, বিদ্যালয় শিক্ষা কমিশনার, ডেপুটি ডিরেক্টর (গ্র্যান্ড-ইন-এড) এবং শিক্ষামন্ত্রীর উদ্দেশে একটি স্মারকলিপি জমা দেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা৷ এছাড়াও মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি ও পশ্চিমবঙ্গ কেন্দ্রীয় স্কুল সার্ভিস কমিশনের সভাপতি তথা সচিবের কাছেও স্মারকলিপি পাঠানো হয়েছে৷ 

আরও পড়ুন- পুলিশের শূন্যপদ পূরণ না করে কেন সিভিক নিয়োগ? জনস্বার্থ মামলা সুপ্রিম কোর্টে

ওই স্মরক লিপিতে বেশ কিছু দাবি জানিয়েছেন শিক্ষকরা৷ তাঁদের দাবি হল, বদলির আদেশনামা হাতে পেয়েও দীর্ঘদিন অপেক্ষারত সমস্ত শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীদের অবিলম্বে বদলির ব্যবস্থা করতে হবে। নর্মাল সেকশনে অনার্স, পিজি-তে কর্মরত সকল শিক্ষক শিক্ষিকাদের নর্মাল সেকশনেই বদলির উপযুক্ত বন্দোবস্ত করতে হবে। এছাড়াও বদলি হওয়া শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের সঙ্গে জেলা মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিদর্শকরা যাতে যথাযথ সহযোগিতা করেন, তা নিশ্চিত করে দ্রুত লিখিত নির্দেশিকা জারি করতে হবে।

দ্রুত শিক্ষক বদলি প্রক্রিয়া কার্যকর করার বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী এবং শিক্ষামন্ত্রী বারংবার আশ্বাস দিলেও, এখনও তা শুরু করা যায়নি৷ এদিন বিকাশ ভবনে উপস্থিত এক শিক্ষিকা জানান, ‘‘হাওড়ার আন্দুল থেকে প্রত্যেক দিন ১৬০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে বর্ধমানের কেতুগ্রামে একটি স্কুলে শিক্ষকতা করতে যান তিনি। দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে শারীরিক অসুস্থতা ও নানান প্রতিকূলতা পেরিয়েই যাতায়াত করতে হচ্ছে তাঁকে৷’’ শিক্ষামন্ত্রীর কাছে বিশেষ ক্ষেত্রে সাধারণ বদলির জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন তিনি৷ ২০১৭ সালে বদলির আদেশনামাও পান৷ কিন্তু সংশ্লিষ্ট জেলা মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক তাঁর বদলির জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। উপস্থিত শিক্ষক-শিক্ষিকারা আরও জানান, এমন বহু শিক্ষক-শিক্ষিকা আছেন, যাঁরা প্রায় কুড়ি বছর ধরে নানা অসুবিধাকে সঙ্গী করেই বাড়ি থেকে বহু দূরে স্কুলে গিয়ে শিক্ষকতা করছেন৷ বিশেষ ক্ষেত্রে সাধারণ বদলির নির্দেশ পাওয়ার পরও তিন-চার বছর অতিক্রান্ত৷ কিন্তু বদলি হয়নি৷ 

আরও পড়ুন- বাংলার বেকারত্বে ফের অস্বস্তি, অক্টোবরে হার বেড়ে ১০%! বলছে সমীক্ষা

শিক্ষকদের প্রতিনিধি অতনু রায় বলেন “সম্প্রতি বেশ কিছু ডি.আই. অফিস বদলির নির্দেশ পাওয়া অনার্স-পিজি শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নর্মাল সেকশনে বদলির ব্যবস্থা করলেও, অধিকাংশ জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকই তা করছেন না। তাঁরা প্রার্থীদের সাফ জানিয়ে দিচ্ছেন, শিক্ষা দফতরের পক্ষ থেকে কোনও লিখিত নির্দেশিকা না থাকায় তারা এ বিষয়ে কোনও পদক্ষেপ করতে পারবেন না।” একই রাজ্যে বদলির বিষয়ে বিভিন্ন জেলার ডিআই অফিসে পৃথক নিয়ম কেন? প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা৷ নভেম্বর মাসের মধ্যে এই সমস্যার সমাধান না হলে, তাঁর মুখ্যমন্ত্রীর দরবারে হাজির হবেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন৷ প্রয়োজনে ভবিষ্যতে যে কোনও পদক্ষেপ করতেও তাঁরা প্রস্তুত৷ 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fifteen − five =