কলকাতা: দেখা নেই ডিএর৷ বাড়ছে না বেতন৷ এখনও ঝুলে ষষ্ঠ বেতন কমিশন৷ তার সময়সীমা চলতি সপ্তাহেই শেষ হয়েছে৷ দীর্ঘ দিনের বেতন বঞ্চনা নিয়ে রাজ্য সরকারি কর্মী মহলে তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে অসন্তোষ৷ আর সেই অসন্তোষ এবার প্রভাব ফেলল ইভিএমে৷ পোস্টাল ব্যালট গণনায় দেখা গিয়েছে বিজেপির দখলে গিয়েছে ৩৯টি আসন৷ নির্বাচন কমিশনের এই তথ্য দেখে মাথায় হাত শাসক শিবিরে৷ এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে রাজ্য সরকারি কর্মীদের অসন্তোষ মেটাতে আগামী সপ্তাহেই হতে পারে বড়সড় ঘোষণা৷
সূত্রের খবর, খুব সম্ভবত আগামী সপ্তাহে উৎসব বোনাস ও অগ্রিম দেওয়ার বিজ্ঞপ্তি জারি করতে পারে রাজ্য সরকার৷ মুসলিম কর্মীদের উৎসব বোনাস ও অগ্রিমের টাকা ঈদের আগে দেওয়া হয়৷ আগামী মাসের গোড়ার দিকে ঈদ৷ তার আগেই উৎসব বোনাস ও অগ্রিমের বিজ্ঞপ্তি জারি হবে বলে কর্মিমহলের আশা৷ নির্বাচনী আদর্শ আচরণবিধির সময়সীমা ২৭ মে শেষ হওয়ার কথা৷ তার পরেই উৎসব বোনাস-অগ্রিমের বিজ্ঞপ্তি জারি হতে পারে৷
বোনাসের আশায় কর্মী মহলের একাংশের মধ্যে উৎসব দেখা দিলেও পে কমিশন নিয়ে হতাশা বেড়েছে৷ ছ’মাসের বেতন কমিশন। ৪২মাস গড়িয়ে গিয়েছে। বকেয়া রয়েছে বিরাট পরিমাণ মহার্ঘ ভাতা। এর ওপর রয়েছে চোখরাঙানি। প্রতিহিংসার বদলি। রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বেতন সংক্রান্ত অবস্থার কোনও পরিবর্তন ২০১১ সালের পর আর হয়নি৷ মহার্ঘভাতার দাবি নিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে বহুবার দরবার করে কোনও লাভ না হওয়ায় কর্মচারীরা আদালতে গিয়েছেন৷ কর্মচারীদের মহার্ঘভাতা দেওয়ার ব্যাপারে আদালতের নির্দেশ কার্যকরী করতেও রাজ্য সরকারের কোনও সদিচ্ছাও অমিল৷ আর এই নিয়ে বাড়ছে ক্ষোভ৷
সরকারি কর্মীদের দীর্ঘ দাবি ছিল ষষ্ঠ বেতন কমিশন চালু করা৷ গত ২৫ নভেম্বর বেতন কমিশনের কার্যকালের মেয়াদ ছ’মাসের জন্য বৃদ্ধি করা হয়৷ সেই সময়সীমা শেষ হয়েছে আগামী রবিবার৷ বেতন কমিশন এখনও বিকাশ ভবনের অফিসে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে৷ সূত্রের খবর, কর্মী ও আধিকারিকদের নতুন বেতন কাঠামো চূড়ান্ত করার জন্য বিভিন্ন সরকারি দপ্তর ও সংস্থাগুলির বক্তব্য শোনার প্রক্রিয়া এখনও শেষ হয়নি৷ এই পরিস্থিতিতে কমিশনের কার্যকালের মেয়াদ ফের বৃদ্ধি করতে হবে বলে মনে করা হচ্ছে৷ সূত্রের খবর, বেতন কমিশনের মেয়াদ বৃদ্ধি নিয়ে সরকার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ঘোষণা করতে পারে। লোকসভা ভোটের পর্ব শেষ হওয়ার পর কমিশন বেতন সংক্রান্ত প্রথম পর্যায়ের সুপারিশ সরকারের কাছে পেশ করলেও অন্যান্য কাজ সম্পূর্ণ করার জন্য মেয়াদ বৃদ্ধি করতেই হবে বলে সরকারি মহল মনে করছে৷ তবে, ভোটের ফলাফল দেখে মেয়াদ বৃদ্ধির ঝুঁকি আদৌ রাজ্য নেবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ আছে৷
অন্যদিকে, রাজ্য সরকারের চিন্তা বাড়িয়েছে সরকারি কর্মীদের ভোট৷ জাতীয় নির্বাচন কমিশনের দেওয়া তথ্য বলছে, পোস্টাল ব্যালট গণনার পর দেখা যায় বিজেপির দখলে ৩৯টি আসন৷ তৃণমূল একটি এবং সিপিএমর দখলে যায় একটি আসন৷ পোস্টাল ব্যালট গণনা শেষে বিজেপির দখলে গিয়েছে, আসানসোল, আরামবাগ, বিষ্ণুপুর, দমদম, ঘাটাল, হুগলি, জঙ্গিপুর, মুর্শিদাবাদ, উলুবেড়িয়া, বর্ধমান-দুর্গাপুর, বর্ধমান পূর্ব, শ্রীরামপুর, তমলুক, বালুরঘাট, বাঁকুড়া, বারাসত, বারাকপুর, ঝাড়গ্রাম, জয়নগর, কাঁথি, মথুরাপুর, রানাঘাট-সহ মোট ৩৯ আসন৷ এই ফলাফল সিঁদুরে মেঘ দেখতে শুরু করেছে তৃণমূল৷