কলকাতা: বিশ্বায়নের যুগে ভৌগলিক দূরত্ব যেন আর দূরত্বই নয়। অনায়াসে ভৌগলিক দূরত্বকে অস্বীকার করে বিশ্বের পূর্ব ও পশ্চিম গোলার্ধের মানুষ এক হয়ে গেছে। এখন পরিস্থিতি এমন হয়ে গিয়েছে, পূর্ব গোলার্ধের কাজ করছেন পশ্চিম গোলার্ধের মানুষরা। আর পশ্চিম গোলার্ধের কাজ করছেন পূর্ব গোলার্ধের মানুষরা। সব ঠিক রয়েছে। কিন্তু গোলার্ধের হের ফেরের জন্য দিন রাতের হিসেব গুলিয়ে যাচ্ছে। যার ফলে বাড়ছে নাইট শিফটের হার। আর জরুরি বিভাগে কাজ করলে এমনিতেই দিন রাতের হিসেব গুলিয়ে যায়।
মূলত সংবাদকর্মী, তথ্যপ্রযুক্তির কর্মী, বেসরকারি সুরক্ষা কর্মী, পুলিশ ও কলসেন্টারের কর্মীরা নাইট শিফট করে থাকে। নাইট শিফট মানের রাতে একটা অংশ নয়। নাইট শিফটের অর্থ সারা রাত জেগে কাজ করা। ঘুমের সুযোগ পাওয়া যায় সকালের দিকে বা বেলার দিকে। এই নাইট শিফট শরীরের জন্য মোটেই ভালো নয়। এমনটাই বলছেন বিশেষজ্ঞরা। নাইট শিফটের জেরে শরীরে একাধিক ক্ষতি হতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা সাবধান করছেন। নাইট শিফটের সময় কিছু নিয়ম মেনে চললে শরীরকে সুস্থ রাখা যাবে বলেও মনে করছেন তাঁরা।
চিকিৎসকরা বলেন, আমাদের শরীরের ভিতর একটা ঘড়ি থাকে।বিজ্ঞানের ভাষায় যে ঘড়িকে বলা হয় সার্কাডিয়ান ক্লক। এই ঘড়ির সময় অনুসারে আমরা দিনের বেলায় জেগে থাকি আর রাতে ঘুমাই। কিন্তু নিয়মিত রাত জেগে নাইট শিফট করলে সার্কাডিয়ান ক্লক আর ঠিকঠাক কাজ করবে না। নিয়মিত নাইট শিফট করলে অনেক সময় ওজন বেড়ে যায়। এছাড়া ডায়াবেটিস, রক্তচাপের মতো সমস্যা দেখা দেয়। শরীরকে অবহেলা করলে চলবে না। তাই নিয়মিত নাইট শিফট করলে মেনে চলতে হবে বেশ কিছু নিয়ম।
প্রয়োজন পর্যাপ্ত ঘুম: রাতে হোক সকালে, আমাদের শরীরে প্রতিদিন পর্যাপ্ত ঘুমের প্রয়োজন। পর্যাপ্ত ঘুম না হলে শরীরে একাধিক সমস্যা দেখা দেয়। তাই নিয়মিত নাইট শিফট থাকলেও সকালে কম করে ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা ঘুমের প্রয়োজন। পর্যান্ত ঘুম হলে অনেক শারীরিক সমস্যা থেকে দূরে থাকা যায়।
উপযুক্ত ডায়েট: সারারাত না ঘুমালে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে হজমের সমস্যা দেখা দেয়। তাই নিয়মিত নাইট শিফট চললে ভারি বা মশলাদার খাবার এড়িয়ে চলাই শ্রেয়। এতে হজমের সমস্যা বাড়াবাড়ি আকার ধারণ করতে পারে। তাই হালকা খাবারই নিয়মিত নাইট শিফটের জন্য ভালো। বেশি করে সবজি, ফল, কম মশলার খাবার শরীরকে সতেজ রাখবে।
রাতে চা, কফি নয়: অনেক সময় নাইট শিফট করার সময় ঘুম পায়। চোখ টেনে আসে। নিজেকে জাগিয়ে রাখার জন্য রাতে অনেকে ঘন ঘন চা কফির শরনাপন্ন হয়। কিন্তু এই চা কফি মুহূর্তের জন্য জাগিয়ে রাখতে পারে, কিন্তু ভবিষ্যতে অনিদ্রার কারণ হতে পারে রাতে চা ও কফি খাওয়া। এছাড়াও রাতে ঘন ঘন চা বা কফি খেলে বাড়তে বাড়তে দুশ্চিন্তা বা রক্তচাপ। এই ধরনের পানীয়গুলো মূলত জলের অভাব তৈরি করে। সেখান থেকেই নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়।