৩১ দিনে ২০ দিনে ছুটি! রাজ্য সরকারি কর্মীদের ‘ছুটি ছুটি চল নেব লুটি …’

৩১ দিনের মাস৷ ২০ দিন ছুটি! আজব ঘটনা নয়৷

a1a4746b8ceff3b92fe48adef4b10f56

৩১ দিনে ২০ দিনে ছুটি! রাজ্য সরকারি কর্মীদের ‘ছুটি ছুটি চল নেব লুটি …’

কলকাতা: ৩১ দিনের মাস৷ ২০ দিন ছুটি! আজব ঘটনা নয়। পশ্চিমবঙ্গ সরকারি কর্মীচারীরা উৎসবের মরশুমে এই ‘ছুটি-সুখ’ উপভোগ করছেন। ঠিক সেই সময়, যখন কেন্দ্রীয় দেনার ‘নাগপাশে’ আটক রাজ্য সরকার প্রাণপণ মুক্তির পথ খুঁজছে।

রাজ্য সরকার এবং রাজ্যের ‘প্রধান মুখ’ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বার বার রাজ্যের আর্থিক দুর্গতির কথা বলেছেন। বর্তমান সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে অনেকেই এই ছুটির উৎসবে অস্বস্তি বোধ করেছেন। বাদ যায়নি রাজ্য সরকারি কর্মচারী সংগঠনগুলিও।

রাজ্য সরকার এবং রাজ্যের ‘প্রধান মুখ’ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বার বার রাজ্যের আর্থিক দুর্গতির কথা বলেছেন। বর্তমান সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে অনেকেই এই ছুটির উৎসবে অস্বস্তি বোধ করেছেন। বাদ যায়নি রাজ্য সরকারি কর্মচারী সংগঠনগুলিও। বিজেপি প্রভাবিত সরকারি কর্মচারী পরিষদ থেকে শুরু করে বাম প্রভাবিত রাজ্য কো-অর্ডিনেশন কমিটি আশঙ্কার লাল মেঘ দেখেছে।

রাজ্য সরকারি কর্মচারী পরিষদের আহ্বায়ক দেবাশীষ শীল লিখেছেন, “অতএব, বলাই যেতে পারে যে এরাজ্যে বৃদ্ধাশ্রম এবং হলিডে হোমের সরকার চলছে। উন্নত দেশের কথা ছেড়েই দিন, আমাদের দেশে আমাদের দেশে আর কোথাও এমন ধারার সরকার আছে? এই না হলে এগিয়ে বাংলা। আর হবে নাই বা কেন। যে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ফলাও করে বলেন যে উন্নয়নের সব কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে সেখানে তো একটাই গান বাজবে। তা হল, “আমাদের ছুটি ছুটি চল নেব লুটি ওই আনন্দঝর্ণা …।”

২ অক্টোবর,২০১৯ থেকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের সরকারী কর্মচারীদের পুজোর ছুটি ছিল। ১৬ অক্টোবর, বুধবার অফিস খুলেছে। এদিকে আবার শনিবার ও রবিবারের ছুটি ধরে আগামী ২৬ অক্টোবর,২০১৯ থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত ফের ছুটি থাকছে। অর্থাৎ ৩১ দিনের একটি মাসে ২০ দিন ছুটি।

দেবাশীষবাবুর বক্তব্য, “কিন্তু তাতেই বেধেছে গোল। বাড়তি বেতনের চার বছরের বকেয়া রাজ্য সরকরী কর্মচারীদের মেরে দেওয়া হল। আদালতের রায় থাকা সত্ত্বেও বকেয়া ডিএ মেটানোর নামগন্ধ নেই। প্রতিবাদ করলেই বদলী নামক অস্ত্রটির যথেচ্ছ প্রয়োগ করা হয়। একশ দিন, চুক্তিভিত্তিক ইত্যাদি ধরণের কাজ হল ৯০ লক্ষের বেশী কর্মসংস্থানের সরল পাটিগণিত। তাই আনন্দ নিরুদ্দেশ। এই ভয়ঙ্কর অবস্থা থেকে দরকার মুক্তি।”

রাজ্য কো-অর্ডিনেশন কমিটির তরফে বিজয় শংকর সিনহা জানান, উৎসবের মরসুমে রাজ্য সরকারি ছুটি বেড়েছে। আগে দুর্গাপুজোর মহা সপ্তমীর দিন থেকে লক্ষ্মীপুজোর দিন পর্যন্ত ছুটি থাকত। কিন্তু, এখন ছুটির সংখ্যা বেশি। ছুটি নিয়ে কর্মীদের আপত্তি থাকার কথা নয়। কিন্তু প্রেক্ষপট বুঝতে হবে। রাজ্য সরকারের লক্ষাধিক পদ খালি। কর্মচারীদের ছুটি দিয়ে প্রমাণ করা হচ্ছে যে, কর্ম সংস্থানের দরকার নেই। ছুটি দিয়েও সরকার চলবে। এদিকে, কেন্দ্রীয় সরকারের হিসাব অনুযায়ী দেশে বেকার যুবক-যুবতীর সংখ্যা বাড়ছে। পশ্চিমবঙ্গেও পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। শিল্প আসছে না। অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো নয়।

অন্যদিকে, রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের রাজ্যের আহ্বায়ক তপন গড়াই বলেন, “ছুটি যেমন দেওয়া হয়েছে, সরকারি অফিসের কর্মসংস্কৃতিও বেড়েছে। বাম আমলে লক্ষ্মী পুজো পর্যন্ত ছুটি থাকত। কিন্তু কাজ কি হতো? কর্মসংস্কৃতি কোথায় ছিল? আজ সরকারি অফিসে কেউ হাতের ফাইল শেষ না করে বেরোতে পারে না। এখন বেশি ছুটি, কাজও বেশি হয়। বাম আমলে ছুটি ছিল, কিন্তু কাজ ছিল না।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *