নির্লজ্জ! জঙ্গিদের ‘স্বাধীনতা সংগ্রামী’ তকমা! পাক উপ-প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যে চরমে কূটনৈতিক তরজা

Pakistan calls Pahalgam attackers freedom fighters কাশ্মীরের পহেলগাঁও উপত্যকায় ২২ এপ্রিলের নির্মম জঙ্গি হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এক সংকটময় মোড় নিয়েছে। ২৬…

Pakistan calls Pahalgam attackers freedom fighters

Pakistan calls Pahalgam attackers freedom fighters

কাশ্মীরের পহেলগাঁও উপত্যকায় ২২ এপ্রিলের নির্মম জঙ্গি হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এক সংকটময় মোড় নিয়েছে। ২৬ নিরপরাধ প্রাণের বিনাশ ও সন্ত্রাসের বীভৎসতায় স্তব্ধ গোটা দেশ। এই আবহেই পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী ও উপ-প্রধানমন্ত্রী ইসহাক দার-এর একটি বক্তব্য নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে।

এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, “পহেলগাঁও হামলায় যারা জড়িত, তারা হয়তো স্বাধীনতা সংগ্রামী।” এই মন্তব্যকে ভারতের পক্ষ থেকে কেবল অগ্রহণযোগ্য নয়, বরং সন্ত্রাসবাদের প্রকাশ্য প্রশ্রয় হিসেবেই দেখা হচ্ছে।

সন্ত্রাসবাদকে আড়াল করতে ‘ফ্রিডম ফাইটার’ আখ্যা?

এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক স্তরে পাকিস্তান আবারও সেই পুরনো ছকের দিকে ফিরে গেল, যেখানে সন্ত্রাসবাদীদের “মুক্তিযোদ্ধা” বলে আখ্যা দিয়ে তাদের কার্যকলাপকে ন্যায়সঙ্গত প্রমাণ করার চেষ্টা করা হয়। পহেলগাঁও হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছে The Resistance Front (TRF), যা নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তইবা (LeT)-র ছত্রছায়ায় পরিচালিত। অথচ এমন একটি সংগঠনের মদতপুষ্ট জঙ্গিদের “স্বাধীনতা সংগ্রামী” হিসেবে চিহ্নিত করা কেবল ইতিহাসবিরোধী নয়, শান্তিপ্রিয় আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলের মুখেও চপেটাঘাত।

ভারতের কূটনৈতিক প্রত্যাঘাত: জলচুক্তি স্থগিতের সিদ্ধান্ত Pakistan calls Pahalgam attackers freedom fighters

জঙ্গি হামলার জবাবে ভারত একটি ঐতিহাসিক ও কূটনৈতিক গুরুত্বসম্পন্ন সিদ্ধান্ত নেয়। ১৯৬০ সালের সিন্ধু জলচুক্তি—যা ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে একটি মজবুত জলবণ্টন ব্যবস্থার প্রতীক ছিল—তা অস্থায়ীভাবে স্থগিত করা হয়।

বুধবার রাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে ক্যাবিনেট কমিটি অন সিকিউরিটি (CCS)-এর এক জরুরি বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পাকিস্তানকে প্রদত্ত জলপ্রবাহ এখন থেকে পুরোপুরি ভারতের নিজস্ব স্বার্থ বিবেচনায় নিয়ন্ত্রণে রাখা হবে বলে জানানো হয়।

‘যুদ্ধের প্ররোচনা’, পাল্টা হুঁশিয়ারি পাকিস্তানের

ভারতের এই কূটনৈতিক পদক্ষেপের জবাবে ইসলামাবাদ একে ‘যুদ্ধের কার্যত ঘোষণাস্বরূপ’ বলে বর্ণনা করেছে। বিদেশমন্ত্রী ইসহাক দার বলেন— “পাকিস্তানের ২৪ কোটির বেশি মানুষ সিন্ধু নদীর জলের ওপর নির্ভরশীল। জলপ্রবাহ থামানো যুদ্ধের নামান্তর। আমরা এর বিরুদ্ধে পাল্টা জবাব দিতে বাধ্য হব।”

একইসঙ্গে পাকিস্তানের ন্যাশনাল সিকিউরিটি কমিটি (NSC) থেকে প্রকাশিত এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে জানানো হয়, “ইন্দাস চুক্তির অধীনে পাকিস্তানের অধিকার লঙ্ঘিত হলে, তা সরাসরি যুদ্ধ ঘোষণার সমতুল্য বিবেচিত হবে।”

‘পাল্টা মূল্য চোকাতে হবে’—ভারতকে হুঁশিয়ারি প্রতিরক্ষামন্ত্রীর

পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহাম্মদ আসিফ আরও সরাসরি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, “যদি আমাদের নাগরিকদের ক্ষতি হয়, তবে ভারতের নাগরিকরাও নিরাপদ থাকবেন না। আমরা পাল্টা মূল্য আদায় করব।” এই মন্তব্যগুলিকে ভারতীয় কূটনৈতিক মহল ‘আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভঙ্গিতে অবাঞ্ছিত ও উস্কানিমূলক’ বলে আখ্যা দিয়েছে।

দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সামনে অন্ধকার দিন

যখন একদিকে সন্ত্রাসবাদের নির্মূলের লক্ষ্যে গোটা আন্তর্জাতিক সমাজ একজোট হচ্ছে, তখন পাকিস্তানের শীর্ষ নেতৃত্ব থেকে এমন মন্তব্য কেবল উপমহাদেশেই নয়, সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা কাঠামোকেই প্রশ্নের মুখে দাঁড় করায়।

ভারতের স্পষ্ট বার্তা—সন্ত্রাস ও শান্তি একসঙ্গে চলতে পারে না। তাই সন্ত্রাসবাদকে “স্বাধীনতা সংগ্রাম” হিসেবে উপস্থাপন করার প্রয়াস শুধু বিপজ্জনক নয়, বরং সুদূরপ্রসারী কূটনৈতিক পরিণতির জন্ম দিতে বাধ্য।

India: Pakistan’s Deputy PM Ishaq Dar triggered outrage by calling Pahalgam terrorists ‘freedom fighters’. India responded by suspending the Indus Waters Treaty. Tensions rise as the terror group TRF, linked to LeT, claims responsibility for the attack.