কলকাতা: করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার পর কারোর স্বাদ, গন্ধ চলে যায়, আবার কারোর যায় না। কারোর খুব জ্বর বা সমস্যা হয়, আবার কারোর কিছুই হয় না, সে উপসর্গহীন থাকে। কিন্তু এমন কেন? একই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর উপসর্গে তারতম্য কেন হয়? এই প্রশ্নের উত্তর এখন হয়তো মিলল। কারণ বিজ্ঞানী, গবেষকরা বিশেষ দুটি জিনের সম্পর্কে জানতে পেরেছেন যা এই ভেদাভেদের জন্য দায়ি।
গবেষণায় উঠে এসেছে, মানবদেহের বিশেষ দু’টি জিনের অতি সক্রিয়তার কারণ এই তারতম্য ঘটে। মানুষের স্বাদক্ষমতা ও ঘ্রাণশক্তির ক্ষেত্রে এই জিন দু’টির ভূমিকা রয়েছে। আর কোভিড আক্রান্ত হওয়ার পর তাতেই প্রভাব পড়ে। পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, এই দুটি জিনের ‘ক্রোমোজোম ৪’ নামের বিশেষ একটি অংশের অতি সক্রিয়তার জন্য করোনা আক্রান্ত রোগীরা স্বাদ, গন্ধ হারিয়ে ফেলেন। কমপক্ষে তাদের স্বাদ, গন্ধ হারানোর সম্ভাবনা ১১ শতাংশ বেড়ে যায়। সব রোগীর ক্ষেত্রে এই জিনে একই রকম প্রভাব যেহেতু পড়ে না, তাই সকলে সমান ভাবে প্রভাবিত হন না। কেউ কেউ স্বাদ, গন্ধ হারান, কেউ হারান না। আমেরিকা ও ব্রিটেনে কোভিডে আক্রান্তদের মধ্যে স্বাদক্ষমতা ও ঘ্রাণশক্তি হারিয়ে ফেলা প্রায় ৭০ হাজার কোভিড রোগীর জিনোম পরীক্ষার পর এই উপসংহারে আসতে পেরেছেন গবেষকরা। যদিও এখন এই নিয়ে আরও গবেষণা বাকি বলেই জানা গিয়েছে।
এর আগে জানা গিয়েছিল যে, মানুষে মানুষে করোনার প্রভাব ভিন্ন হওয়ার জন্য দায়ি মানুষেরই শরীরে থাকা একটি জিন। এই জিনের প্রভাবেই মানবদেহে করোনা ভয়াবহ হয়ে ওঠে। মানুষের শরীরে এই জিনের উপস্থিতি এবং অতি সক্রিয়তা কোভিডের ভয়াবহ হয়ে ওঠার আশঙ্কা কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেয়। যারা টিকা নিতে চাইছে না, তাদের শরীরে যদি এই জিন থাকে তাহলে তাদের অবশ্যই টিকা নিতে হবে বলেও পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। অর্থাৎ জিনের তারতম্যের ফলেই মানবদহে করোনার ভিন্নতা আরও স্পষ্ট হল।