প্রত্যেকটি মানুষই কোনও না কোনও বদভ্যাসে ভোগেন। বদভ্যাস বলতে এমন কোনও অভ্যাস, যা থেকে আপনি মুক্ত হতে চাইছেন, কিন্তু পারছেন না কিছুতেই। কারো অভ্যাস দাঁতে নখ কাটা। কেউ বা কথায় কথায় আঙুল মটকান, কেউ আবার অপ্রয়োজনেও গলা খাঁকারি দেন। আজকের ডিজিটাল যুগে অনেকে আরও নতুন ধরনের বদভ্যাসে আক্রান্ত হয়েছে— মোবাইলটিকে কিছুতেই চোখের আড়াল করতে পারছেন না। এইসব অভ্যেস থেকে মুক্তি পাওয়া সহজ নয়। এখানে রইল ৩টি সহজ কাজের হদিশ যেগুলির মাধ্যমে মুক্তি পেতে পারেন বদভ্যাস থেকে-
যে কোনও বদভ্যাস সম্পর্কে প্রথমে সচেতন হন: এটি সবচেয়ে জরুরি পদক্ষেপ। যে কোনও বদভ্যাস থেকে মুক্ত হতে প্রথমেই সেই বিষয়টি সম্পর্কে সচেতনতা প্রয়োজন। কখন সেই বিশেষ কাজটি আপনি করছেন তা খেয়াল রাখুন। দাঁতে নখ কাটা যদি আপনার অভ্যাস হয়, তা হলে খেয়াল রাখুন কোন পরিস্থিতিতে কখন সেই কাজটি আপনি করছেন।
বিষয়টি লিপিবদ্ধ করুন: কাজটি কষ্টকর, আর সেই জন্যই জরুরি। আর মনস্তাত্ত্বিকরা বলছেন, এই কাজ করলে ফল মিলবে। দিনে কতবার প্রয়োজন ছাড়াই আপনি মোবাইল অন করে ফেসবুক বা হোয়াটস অ্যাপের নোটিফিকেশন চেক করছেন, বা দাঁতে নখ কাটছেন, কখনই বা করছেন সেই কাজ, সেই সময়ে আপনার মানসিক পরিস্থিতি কেমন থাকছে— সেগুলোও লিখে রাখুন। সুবিধা মনে হলে প্রতিদিন রাত্রেও সারাদিনের হিসেব লিপিবদ্ধ করে রাখতে পারেন। পরবর্তী ধাপে খেয়াল করুন, এই কাজগুলো করার সময়ে আপনার মনের অবস্থা কেমন থাকছে। যখন বিশেষ উদ্বেগে ভুগছেন, তথনই কি নিজের অজান্তে দাঁতে নখ কাটা শুরু করেন? খেয়াল করুন সেটা।
বদভ্যাসের কোনও বিকল্প তৈরি করুন: যাদের নখ কাটা অভ্যাস তাঁর চিউইং গাম চিবনো শুরু করুন। কিন্তু তাতে কি অন্য রকম বদভ্যাসে জড়িত হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায় না? মনস্তাত্ত্বিকরা বলছেন, না, তেমন আশঙ্কা নেই। বিশেষ কোনও পরিস্থিতিতে কোনও একটি বিশেষ কাজ করতেই অভ্যস্ত হয়ে পড়ে মানবমস্তিস্ক। কিন্তু তার বিকল্প কোনও কাজ করলে সেই কাজটিতে মস্তিস্ক সেভাবে আকৃষ্ট হয় না। কাজেই তাতে অভ্যস্ত হওয়ার প্রশ্ন ওঠে না। আপনি যখন মূল অভ্যাসটি থেকে মুক্তি পেয়ে যাবেন তখন তার বিকল্প কাজটিও করা ছেড়ে দিন। অর্থাৎ, নখ কাটার অভ্যেস থেকে মুক্তি মিললে ছেড়ে দিন চিউইং গাম চিবনোও। অনেকের অভ্যেস থাকে, কারণে-অকারণে গলা খাঁকারি দেওয়া। এঁরা যখনই গলা খাঁকারি দেওয়ার প্রয়োজন বোধ করবেন তখনই একটু অন্যভাবে নিঃশ্বাস নেওয়ার চেষ্টা করুন। যদি অপ্রয়োজনেও মোবাইল ঘাঁটা অভ্যেস হয় তাহলে পকেট থেকে মোবাইল বার করার ইচ্ছে হলেই অন্য দিকে মন দিন। চুলটা ঠিক করে নিন, কিংবা বাসে থাকলে জানলার বাইরে মন দিন। এভাবে কিছুদিন চলার পরেই দেখবেন বদভ্যাসটি থেকে মুক্তি মিলবে। এছাড়া নিয়মিত ধ্যান বা রিল্যাক্সিং এক্সারসাইজেও এক্ষেত্রে উপকার মিলবে।