কলকাতা: মোদি সরকারের জমানায় নিত্যপ্রয়োজনীয় চাল-ডাল-সবজি থেকে শুরু করে রান্নার গ্যাস বা পেট্রল-ডিজেলের দাম আকাশ ছুঁয়েছে৷ মূল্যবৃদ্ধিতে টেক্কা দিতে বাদ যায়নি অতি প্রয়োজনীয় ওষুধও৷ তার দামেও হাত পুড়ছে আমআদমির। ন্যাশনাল ফার্মাসিউটিক্যাল প্রাইসিং অথরিটির মতো কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা থাকলেও, গত ছ’মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় ওষুধের দাম বেড়েছে ১০ থেকে ৫০ শতাংশ। সুগার, প্রেশার, হাঁপানি, বমি, তড়কা বা মৃগি, শ্বাসকষ্ট, অ্যালার্জি, রাইনাইটিস, কী নেই সেই তালিকায়৷ দুই বা ততোধিক মলিকিউলের কম্বিনেশন মেডিসিন কিনতে পকেটে টান পড়ার জোগাড়৷
বাঙালির অন্যতম অসুখ গ্যাস-অম্বল-চোঁয়া ঢেকুরের ওষুধ র্যাংনিটিডিন এবং প্যান্টোপ্রাজোলও রয়েছে দাম বাড়ার তালিকায়। মাসখানেক আগেও বহুল প্রচলিত একটি ব্র্যান্ডের ৩০টি র্যারনিটিডিন ট্যাবলেটের স্ট্রিপ ২৪ টাকায় পাওয়া যেত। এখন তা কিনতে মানুষকে ৩৬ টাকা দিতে হচ্ছে। একলাফে ৫০ শতাংশ দাম বেড়েছে। পাশাপাশি প্রচলিত ব্র্যান্ডের ১৫টি ওষুধযুক্ত একটি প্যান্টোপ্রাজোল ট্যাবলেটের পাতা কিনতে ১৪ টাকা বেশি গুনতে হচ্ছে। হজমের গোলমালের সঙ্গে বমি বমিভাব লাগলে প্যান্টোপ্রাজোল-ডোমপিরিডন কম্বিনেশনের একটি অতি চেনা ব্র্যান্ডের ১৫টির স্ট্রিপ কিছুদিন আগেও ১৭০ টাকায় পাওয়া গেলেও, এখন ১৯০ টাকা দিয়ে কিনতে হচ্ছে। সুগারের জন্য মেটফরমিন ও ভিলডাগ্লিপটিনের কম্বিনেশন ওষুধের দামও ১২ টাকা বেড়েছে। প্রেশারের ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত অ্যামলোডিপিন ও টেলমিসারটনের একটি কম্বিনেশনের এক পাতার দাম ১৫৬ থেকে বেড়ে ১৭২ টাকা হয়েছে।
অল ইন্ডিয়া কেমিস্ট অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউটার্স ফেডারেশনের সর্বভারতীয় সম্পাদক জয়দীপ সরকার জানান, গত এপ্রিল মাসে সরকারি নিয়মে বার্ষিক ১০ শতাংশ করে দাম বাড়ার পরও মাসখানেক আগে কেন্দ্রের বিশেষ অনুমতি ক্রমে কিছু কোম্পানি ওষুধের মূল্য ৪০-৫০ শতাংশ বাড়িয়ে দিয়েছে। বেঙ্গল কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সম্পাদক সজল গঙ্গোপাধ্যায়ও একই কথা বললেন। তাঁর কথায়, ‘দাম ঠিক করাটা আমাদের হাতে নেই। কিন্তু তা নিয়ে রোজই ক্রেতাদের অভিযোগ শুনতে হচ্ছে আমাদের।’ অবিলম্বে ওষুধের দাম কমানোর জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আর্জিও জানিয়েছেন তাঁরা।