এবার দেশের জনতার শরীরে করোনা টিকা প্রয়োগের কাজ শুরু করল রাশিয়া

 

রাশিয়ার অ্যান্টি-করোনভাইরাস ক্রাইসিস সেন্টার এদিন সাংবাদিকদের জানিয়েছে, ক্লিনিকাল ট্রায়ালের পর করোনা সংক্রমণের বিরুদ্ধে টিকাকরণের জন্য প্রথম সাতটি কেন্দ্র খোলা হয়েছে। যেখানে গত পাঁচ দিনের ২৫০ জন মস্কোবাসীর টিকাকরণ হয়েছে। এই টিকা গ্রহণকারীদের চিকিৎসকেরা বিশেষভাবে পর্যবেক্ষণ করেন এদের মধ্যে – ৭৫% অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে এপর্যন্ত কোনও উপসর্গ বা অসুস্থতা দেখা যায়নি।

মস্কো:  বিশ্বের প্রথম করোনা ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারক হিসেবে দাবি করার পর প্রতিশ্রুতি মত এবার সাধারণ মানুষের মধ্যেও টিকাকরণ প্রক্রিয়া শুরু করে দিল রাশিয়া। টিএএসএস-এর একটি প্রতিবেদন অনুসারে, সোমবার রাশিয়ার সরকার জানিয়েছে যে আড়াইশরও বেশি  মস্কোবাসী গত পাঁচ দিনে তাঁদের প্রথম করোনা ভ্যাকসিন স্পুটনিক ভি এর ডোজ পেয়েছেন। তাদের মধ্যে বেশিরভাগই স্বাস্থ্যবান।

রাশিয়ার অ্যান্টি-করোনভাইরাস ক্রাইসিস সেন্টার এদিন সাংবাদিকদের জানিয়েছে, ক্লিনিকাল ট্রায়ালের পর করোনা সংক্রমণের বিরুদ্ধে টিকাকরণের জন্য প্রথম সাতটি কেন্দ্র খোলা হয়েছে। যেখানে গত পাঁচ দিনের ২৫০ জন মস্কোবাসীর টিকাকরণ হয়েছে। এই টিকা গ্রহণকারীদের চিকিৎসকেরা বিশেষভাবে পর্যবেক্ষণ করেন এদের মধ্যে – ৭৫% অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে এপর্যন্ত কোনও উপসর্গ বা অসুস্থতা দেখা যায়নি।

শুক্রবার, রাশিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রী মিখাইল মুরাশকো সাংবাদিকদের বলেছিলেন যে, রাশিয়ার কোভিড -১৯ টি ভ্যাকসিনের প্রথম ব্যাচটি ১৪সেপ্টেম্বরের মধ্যে দেশের সমস্ত অঞ্চলে সরবরাহ করা হবে বলে। মুরশকো আরও বলেছিলেন, সরবরাহের ধারাবাহিকতা পরীক্ষার জন্য ভ্যাকসিনের প্রথম ব্যাচগুলি ইতিমধ্যে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন সরবরাহ প্রক্রিয়া পরীক্ষা করা হচ্ছে যাতে কর্মীরা এটি জানতে পারে। প্রথম ছোট ছোট ব্যাচগুলি ইতিমধ্যে সমস্ত অঞ্চলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে, সেক্ষেত্রে প্রথমে যে অঞ্চলগুলিতে এই ভ্যাকসিন পাঠানো হবে তার মধ্য লেনিনগ্রাদ অঞ্চলটিও রয়েছে। ভ্যাকসিনের প্রথম নমুনাগুলি সোমবারের মধ্যেই সরবরাহ করা হবে বলেও জানিয়েছিলেন মুরশকো। 

স্পুটনিক ভি ভ্যাকসিনের প্রথম ব্যাচটি জনসাধারণের উদ্দেশ্যে বাজারে ছাড়ার একসপ্তাহের মধ্যেই এই অগ্রগতি হয়েছে বলে জানিয়েছে রাশিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রক। প্রসঙ্গত, গত ১১ ই আগস্ট, বিশ্বের প্রথম করোনা ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে রাশিয়া। সোভিয়েত ইউনিয়নের উৎক্ষেপণ করা  বিশ্বের প্রথম উপগ্রহকে শ্রদ্ধা জানিয়ে এর নাম রাখা হয় “স্পুটনিক ভি”। যদিও আন্তর্জাতিকভাবে অনুমোদিত সমস্ত পরীক্ষা ও নিয়ামক পদক্ষেপ গ্রহণ না করা পর্যন্ত এই ভ্যাকসিনের ব্যবহারের বিরুদ্ধে সতর্ক করেছেন পশ্চিমী বিশেষজ্ঞরা । বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকেও এই ভ্যাকসিনের অফিশিয়াল ছাড়পত্র দেওয়া হয়নি। এখনও পর্যন্ত ভ্যাকসিনটির তৃতীয় পর্যায়ের ক্লিনিকাল ট্রায়াল চলছে।

 

দ্য ল্যানসেট মেডিকেল জার্নালে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, ভ্যাকসিনটি প্রথম পর্যায়ের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে এমন একটি অ্যান্টিবডি প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছিল, যেখানে সমালোচকদের যোগ্য জবাব হিসাবে মস্কো দারুন প্রশংসা পেয়েছিল। দ্য ল্যানসেট আরও জানিয়েছিল, চলতি বছরের জুন-জুলাইয়ে স্পুটনিক ভি এর ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে যুক্ত স্বেচ্ছাসেবকদের মধ্যে ভ্যাকসিনটি দারুন কার্যকরী হিসেবে প্রমাণিত হয়েছিল। একশো শতাংশ অংশগ্রহণকারীর দেহেই করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে নতুন অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে এবং এর মারাত্মক কোনও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও দেখা যায়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

19 − fourteen =