নয়াদিল্লি: গত বছর মার্চ মাস। দিল্লির নিজামুদ্দিন নিয়ে হইহই শুরু হয়ে গেছে গোটা দেশে। দাবি করা হচ্ছিল, দেশের করোনা ভাইরাস সংক্রমণ বৃদ্ধির জন্য নিজামুদ্দিনের জমায়েত দায়ী। যে সময় ওই জমায়েত হয়েছিল তখন অবশ্য দেশে কোন রকম নিষেধাজ্ঞা জারি হয়নি বা ভাইরাস সংক্রমণ বিপুলভাবে ছড়ায়নি। আজ ঠিক এক বছর পর করোনা ভাইরাস সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ে নাজেহাল অবস্থা দেশের। গত বছরের থেকেও দিনপ্রতি সংক্রমণ রেকর্ড মাত্রায় বেড়ে গিয়েছে। বিগত কয়েকদিনে টানা দিন প্রতি সংক্রমণ ১,৫০,০০০-এর উপর। তবে এখন স্বাভাবিক নিয়মে চলছে কুম্ভ মেলা। একইসঙ্গে নির্বাচনের জন্য একাধিক রাজ্যে পরপর প্রচার। সংক্রমণ নিয়ে ইতিমধ্যেই অশনি সংকেত দেখতে শুরু করে দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
শেষ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘন্টায় ভারতে নতুন করে ভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা ১,৬১,৭৩৬ জন, এই একই সময় মৃত্যু হয়েছে ৮৮০ জনের! এর আগে এক তথ্যে উঠে এসেছিল যে, একজন ভাইরাস আক্রান্ত মানুষ কমপক্ষে ৪০০ জনকে সংক্রামিত করতে পারে। এখন হয়তো এই ব্যাপারটা নিয়ে কেউ মাথা ঘামাচ্ছেন না কারণ কুম্ভমেলায় ইতিমধ্যে ব্যাপক জনসমাগম হয়েছে। আপাতত কমপক্ষে ২৮ লক্ষ পুণ্যার্থী স্নান সেরেছেন বলে খবর। এদিকে তাদের মধ্যে মাত্র ১৮,১৬৯ জনের ভাইরাস পরীক্ষা হয়েছে যাদের মধ্যে ইতিমধ্যেই ১০২ জন করোনা পজিটিভ! কিন্তু এই বিষয় নিয়ে কোনরকম হেলদল দেখাচ্ছে না কেন্দ্রীয় সরকারের। প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রতিরক্ষামন্ত্রী থেকে শুরু করে একাধিক রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বাংলা এবং অন্যান্য রাজ্যে নির্বাচনী প্রচার সারছেন একের পর এক।
আরও জানা গিয়েছে, এই নির্বাচনী প্রচারের জন্য বাংলায় করোনা ভাইরাস সংক্রমণ বেড়ে গিয়েছে প্রায় ৩৫০ শতাংশ! একইসঙ্গে বেলেঘাটা আইডি থেকে শুরু করে একাধিক হাসপাতালে বেডের ঘাটতি শুরু হয়ে গিয়েছে। চিকিৎসক মহল বারবার সতর্ক করা সত্ত্বেও সাধারণ মানুষ সচেতন হচ্ছেন না। এখনও পর্যন্ত দেশে মোট করোনা পজিটিভের সংখ্যা ১ কোটি ৩৬ লাখেরও বেশি। মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যার নিরিখে এখন বিশ্বের দ্বিতীয় স্থানে ভারত। প্রথম স্থানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সেখানে মোট করোনা পজিটিভ কেসের সংখ্যা ৩ কোটি ১৮ লাখেরও বেশি।