নয়াদিল্লি: দেশে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ চূড়ান্ত আকার নেওয়ার সময় থেকেই প্লাজমা থেরাপিতে জোর বাড়ছিল। হাসপাতালে ভর্তি করানো ভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য এই থেরাপি ব্যবহার হয়েছে অনেকবার। কিন্তু এখন যে তথ্য সামনে আসছে তাতে দেখা যাচ্ছে এই প্লাজমা থেরাপি করোনা ভাইরাস সংক্রমণ এবং তার জেরে মৃত্যু ঠেকাতে খুব একটা কার্যকরী নয়। তাই করোনাভাইরাস চিকিৎসা থেকে প্লাজমা থেরাপিকে বাদ দিয়ে দিল কেন্দ্রীয় সরকারের গঠিত টাস্ক ফোর্স। গত সপ্তাহে আইসিএমআর করোনাভাইরাস টাস্ক ফোর্সে থাকা বিজ্ঞানী চিকিৎসক এবং বিশেষজ্ঞরা বৈঠক করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
সূত্রের খবর, এই বৈঠকে প্লাজমা থেরাপিকে অযৌক্তিক এবং অবৈজ্ঞানিক বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। বৈঠকের সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে করোনাভাইরাস চিকিৎসা ক্ষেত্রে এই থেরাপি আর ব্যবহার করা যাবে না। আইসিএমআর লক্ষ্য করেছে, করোনাভাইরাস প্রথম ঢেউয়ে প্লাজমা থেরাপি কিছুটা কার্যকরী ভূমিকা পালন করলেও পরবর্তী ক্ষেত্রে তা আদতে কোন কাজ দিচ্ছে না। অর্থাৎ দ্বিতীয় ঢেউয়ে প্লাজমা থেরাপি করোনাভাইরাস চিকিৎসায় আশানুরূপ ভূমিকা পালন করতে পারেনি। মাঝারি এবং মৃদু উপসর্গের রোগীদের ক্ষেত্রে কিছুটা উপকার হলেও যাদের শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক হয়েছে তাদের ক্ষেত্রে এই থেরাপি কাজে লাগছে না। সেই কারণেই সামগ্রিকভাবে করোনাভাইরাস চিকিৎসার ক্ষেত্রে প্লাজমা থেরাপিকে বাদ দিয়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার গঠিত জাতীয় কমিটি। ইতিমধ্যে আশঙ্কা করা হয়েছে যে খুব শীঘ্রই করোনাভাইরাস তৃতীয় ঢেউ আসতে চলেছে ভারতে। তার আগে প্লাজমা থেরাপি করোনাভাইরাস চিকিৎসা থেকে বাদ দিয়ে দেওয়া আদতে সুবিধা দেবে না জটিলতা বাড়বে তা নিয়েও একটা সংশয় দেখা দিয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আগেই জানিয়েছে যে এই বছর করোনা ভাইরাস সংক্রমণ আরো জটিল আকার ধারণ করবে ভারতবর্ষে। তৃতীয় ঢেউ আটকাতে গেলে সার্বিকভাবে টিকাকরণ প্রয়োজন। কিন্তু এই মুহূর্তে দেশের টিকার অভাব দেখা দিয়েছে এবং একই সঙ্গে অক্সিজেন এবং বেডের অভাব রয়েছে। অন্যদিকে আবার, চিকিৎসক মহল দাবি করেছে যে করোনাভাইরাস তৃতীয় ঢেউয়ে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হবে শিশুরা। সব মিলিয়ে পরিস্থিতিকে আরো জটিল হতে পারে তার একটা আশঙ্কা ইতিমধ্যেই করা হচ্ছে। যদিও বিগত কয়েকদিনে দেশের করোনা ভাইরাস সংক্রমণ কিঞ্চিৎ কমেছে বলে একটা স্বস্তির বাতাবরণ তৈরি হয়েছে।