নিউইয়র্ক: করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে দু’বছর হল। টিকাকরণ কর্মসূচি বিশ্বজুড়ে শুরু হয়েছে প্রায় এক বছর হতে চলল। কিন্তু তাতেও কোভিড সংক্রমণের রেকর্ড তৈরি হওয়া আটকানো গেল না। বিশ্বে দৈনিক করোনা ভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যায় নয়া রেকর্ড হয়েছে, তা ব্যাপক উদ্বেগ বাড়িয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পরিস্থিতির জন্য একমাত্র দায়ী করোনার নয়া প্রজাতি, ওমিক্রন।
পরিসংখ্যান বলছে, প্রায় এক মাস আগে দক্ষিণ আফ্রিকায় ধরা পড়েছিল ওমিক্রন। সেই সময় থেকে এখনও পর্যন্ত বিশ্বে ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ৪৯ শতাংশ। এদিকে, গত সাত দিনে বিশ্বজুড়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮ লক্ষ ৪১ হাজার! গবেষকদের একাংশের মতে, করোনার এই নয়া প্রজাতির বিরুদ্ধে বর্তমান টিকাগুলি সেইভাবে কাজ করছে না, তাই এইভাবে সংক্রমণ বৃদ্ধি হচ্ছে। আগেই জানান হয়েছিল যে, ওমিক্রন সেইরূপে মারাত্মক না হলেও সবথেকে বেশি সংক্রামক। করোনার আগের রূপগুলির তুলনায় ৭০ গুণ দ্রুত সংক্রামিত হয় এই প্রজাতি। মারণ ক্ষমতা বেশি না থাকলেও ব্যক্তিকে যথেষ্ট কাহিল করে দিতে সক্ষম এটি। যদিও ভ্যাকসিন নেওয়া থাকলে সেই ব্যক্তির ওপর এর বিরাট প্রভাব পড়বে না বলেই মত।
উল্লেখ্য, ওমিক্রন কাবু হতে পারে, এমন চার ধরণের অ্যান্টিবডির খোঁজ মিলেছে মানব শরীরে। যাঁরা আগে করোনাভাইরাসের ভিন্ন রূপে আক্রান্ত হয়েছেন বা সংক্রমিত হওয়ার পর টিকা নিয়ে ফের সংক্রমিত হয়েছেন কিংবা সংক্রমিত না হয়েও কোভিড টিকার ডোজ সম্পন্ন করেছেন, তাঁদের সকলের দেহেই এই চারটি শ্রেণির অ্যান্টিবডির হদিশ পাওয়া গিয়েছে। এর ফলে ভবিষ্যতে করোনার অন্য কোনও রূপ এলেও এই অ্যান্টিবডির গুলির সাহায্যে টিকা বা ওষুধ তৈরি করে সেই প্রজাতিকে হারানো যাবে বলেই মনে করছেন বিজ্ঞানীদের একাংশ। এই নয়া তথ্য প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘নেচার’-এ। আমেরিকার সিয়াটেলের ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব মেডিসিন, ওষুধ সংস্থা ‘হিউম্যাবস বায়োমেড’ ও সুইৎজারল্যান্ডের ‘ভির বায়োটেকনোলজি’ মিলিত ভাবে এই গবেষণা করেছে।