নয়াদিল্লি: ভারতে টিকাকরণ কর্মসূচি শুরু হওয়ার পর নির্দিষ্ট দিনের ব্যবধানে কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু পরবর্তী ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকার এই ভ্যাকসিনের দুটি ডোজের মধ্যে ব্যবধান বাড়িয়ে দেয়। এখন এই ভ্যাকসিন ১২-১৬ সপ্তাহের ব্যবধানে দেওয়া হচ্ছে। কেন্দ্রের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, বিশেষজ্ঞ এবং বৈজ্ঞানিকদের পরামর্শ অনুযায়ী এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তবে এখন এই ইস্যুতে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে আবার কারণ বিজ্ঞানীদের একাংশের জানিয়েছে, ভ্যাকসিনের ব্যবধান বাড়াতে পরামর্শ দেওয়া হয়নি।
টিকাকরণ ইস্যুতে ন্যাশনাল টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজারি গ্রুপের সব সদস্য ভ্যাকসিনের ব্যবধান বাড়ানোর কথা বলেছিল বলে জানিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু আন্তর্জাতিক এক সংবাদ সংস্থা জানাচ্ছে যে ওই গ্রুপের কমপক্ষে তিনজন বিশেষজ্ঞ ভ্যাকসিনের ডোজের ব্যবধান বাড়ানোর পক্ষে কথা বলেনি। এদিকে কেন্দ্রীয় সরকার দাবি করেছে, ব্রিটেনে যারা ভ্যাকসিন নিচ্ছেন তাদের দুটি ডোজের ব্যবধান ১২-১৬ সপ্তাহ করা হয়েছে এবং সেই কারণেই বৈজ্ঞানিক যুক্তি খুঁটিয়ে দেখে ভারতেও একই নিয়ম চালু করা হয়েছে। যদিও এখন ব্রিটেনে দুটি টিকার ব্যবধান কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের দাবি, দেশের তথ্যের ওপর ভিত্তি করেই ভ্যাকসিনের দুটি ডোজের ব্যবধান ১২-১৬ সপ্তাহ বহাল রাখা হয়েছে। যদিও বিজ্ঞানীদের একাংশ বলছে, কোভিশিল্ড ভ্যাকসিনের দুটি টিকার ব্যবধান বাড়ানোর সুপারিশের জন্য যে তথ্যের প্রয়োজন ছিল তা কমিটির হাতে ছিল না। কিন্তু এখন ইতিমধ্যেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং ব্যবধান বাড়ানো হয়েছে। তাদের বক্তব্য, দুটি টিকার মধ্যে ব্যবধান ৮-১২ সপ্তাহের থাকা উচিত বলে মনে করছিল বিজ্ঞানী মহল কিন্তু ব্যবধান বাড়ানোর বিষয়টি নিয়ে এসেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। এটি কতটা কার্যকরী সেই তথ্য এখনো হাতে আসেনি বিজ্ঞানীদের বলে জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞানীরা আরো জানাচ্ছেন, টিকার ব্যবধান বাড়িয়ে দিলে কোন ক্ষতি হবে না কিন্তু ব্যবধান বাড়ানোর পরামর্শ তাদের তরফ থেকে দেওয়া হয়নি। নির্দিষ্টভাবে বলতে গেলে, স্পষ্ট ভাবে দুটি টিকার মধ্যে ব্যবধান উল্লেখ করা হয়নি। এর আগে যখন কেন্দ্রীয় সরকার টিকার ব্যবধান বাড়িয়ে দিয়েছিল তখন বিরোধীরা অভিযোগ তুলেছিল যে দেশে টিকার আকাল রয়েছে বলেই কেন্দ্র এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে যাতে সেই সমস্যা ঢেকে দেওয়া যায়। যদিও কেন্দ্রীয় সরকার নিজেদের সিদ্ধান্তে অনড় ছিল এবং এখনও রয়েছে। তবে কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন নিয়ে বিতর্ক কিছুতেই থামছে না।