পশুদের মতো মানুষেরও আছে প্রজনন ঋতু, বলছে গবেষণা

পশুদের জগতে প্রজনন ঋতু রয়েছে। যেমন কুকুরের ভাদ্র মাস। অন্য পশুদেরও বছরের বিভিন্ন সময়ে জেগে ওঠে প্রজননের বাসনা। কিন্তু মানুষের যৌনতা সারা বছরের। ঋতু নিরপেক্ষ ভাবে মানুষ মিলিত হতে পারে— এমন এক ধারণা দীর্ঘ কাল ধরে বহমান। কিন্তু একটু তলিয়ে ভাবলেই মনে পড়ে, মানুষও একটি প্রাণী। অন্যান্য জীবের মতো মানুষেরও প্রজনন ঋতু থাকা উচিত প্রকৃতির

পশুদের মতো মানুষেরও আছে প্রজনন ঋতু, বলছে গবেষণা

পশুদের জগতে প্রজনন ঋতু রয়েছে। যেমন কুকুরের ভাদ্র মাস। অন্য পশুদেরও বছরের বিভিন্ন সময়ে জেগে ওঠে প্রজননের বাসনা। কিন্তু মানুষের যৌনতা সারা বছরের। ঋতু নিরপেক্ষ ভাবে মানুষ মিলিত হতে পারে— এমন এক ধারণা দীর্ঘ কাল ধরে বহমান। কিন্তু একটু তলিয়ে ভাবলেই মনে পড়ে, মানুষও একটি প্রাণী। অন্যান্য জীবের মতো মানুষেরও প্রজনন ঋতু থাকা উচিত প্রকৃতির নিয়ম মেনে।

১৯ শতক থেকে প্রাণীবিদ্যার গবেষকরা সন্ধান করেছেন মানুষের প্রজনন ঋতুর। দীর্ঘ দীর্ঘ হিসেব কষা হয়েছে মূলত শিশু জন্মের হারকে ভিত্তি করে। দেখা গিয়েছে, এক এক ভূগোলে এক এক সময়ে শিশু জন্মের হার বেশি। ১৯৯০-এর দশকে গবেষকরা দেখেন, পোল্যান্ডের মতো দেশে জুলাই-অগস্ট মাসটি বিয়ের সিজন। সেখানে শিশু জন্মের হারটি বেড়ে যায় বসন্তে। হিসেব মতো এটা একেবারেই ঠিকঠিক। কিন্তু অনেক দেশেই বিয়ের ঋতু আর প্রজনন ঋতু সমাপতনিক নয়।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ‘কিউরিওসিটি.কম’ জানাচ্ছে, মার্কিন দেশের উত্তরাংশে গ্রীষ্মে শিশু জন্মের হার বিপুল। কিন্তু ওই একই দেশের দক্ষিণাংশে শিশু জন্মের হার বাড়ে অক্টোবর-নভেম্বরে। সাম্প্রতিক গবেষণায় জানা যাচ্ছে, শিশু জন্মের হার ফিনল্যান্ডে এপ্রিল, ডামাইকায় নভেম্বরে বেড়ে যায়। এই সময়ের থেকে ১০-১৫ মাস বিয়োগ করেই পাওয়া যায় ওই সব অঞ্চলের বাসিন্দাদের মিলিত হওয়ার কাল।

‘দ্য কনভারসেশন’ নামে এক ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক গবেষণা নিবন্ধে দেখানো হয়েছে, মানবিক প্রজননের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের তাপমাত্রা ও দিনের দৈর্ঘ্যের সম্পর্ক রয়েছে। চরম আবহাওয়ার এলাকাগুলিতে শিশু জন্মের হার বছেরে দু’বার বাড়ে। ১৯০০ সাল থেকে পাওয়া পরিসংখ্যান থেকে এই সিদ্ধান্তে এসেছেন গবেষকরা। তার উপরে গ্রামাঞ্চলে ছবিটা বেশ খানিকটা আলাদা শহরের থেকে। এর কারণ হিসেবে গবেষকরা দেখিয়েছেন, প্রকৃতির সঙ্গে গ্রামীণ মানুষের নিবিড় সম্পর্ক তাঁদের যৌন আচরণেও প্রভাব ফেলে। প্রাণীবিজ্ঞানীরা দেখান, অন্যান্য প্রাণীদের প্রজনন ঋতু অনেক সময়েই নির্ভর করে দিনের দৈর্ঘ্যের উপরে। হরিণরা মলিত হয় শরৎকালে। স্ত্রী হরিণ শীতে গর্ভিণী হয়। বসন্তে হরিণ শিশুরা জন্মায়। ছোট দিনের ঋতুকেই বেশির ভাগ স্তন্যপায়ী তাদের গর্ভ-সময়ের কাল হিসেবে বেছে নিয়েছে। মানুষের ক্ষেত্রেও একই প্রবণতা দেখা যায় বলে জানাচ্ছেন গবেষকরা। তবে মানুষের প্রজননের ক্ষেত্রে সংস্কৃতিও একটা বড় বিষয়, তা স্বীকার করছেন গবেষকরা।

সাংস্কৃতিক ও সামাজিক কারণে আজ মানুষের প্রজনন ঋতুকে আলাদা করে চেনা যায় না। শিল্পায়ন ও নগরায়ন মানুষের অনেক অভ্যাসের মতো যৌনতাকেও প্রভাবিত করেছে, এ কথা যেন মনে থাকে— বিষয়টি স্মরণে রাখা প্রয়োজন, জানিয়েছেন গবেষকরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

six − six =