কলকাতা: দীর্ঘ দিন ধরেই তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পরার আশঙ্কা করা হচ্ছিল৷ মনে করা হচ্ছিল, অক্টোবর, নভেম্বর এবং ডিসেম্বর মাসে শীর্ষে থাকবে সংক্রমন৷ সর্বোপরী তৃতীয় ঢেউয়ে আক্রান্ত হতে পারে শিশুরা৷ এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন অনেক বিশেষজ্ঞই৷ দেখা যাচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকায় বহু শিশুর শরীরেই থাবা বসিয়েছে করোনা ভাইরাসের নয়া স্ট্রেন ওমিক্রন৷ বিদেশ থেকে ভারতেও ঢুকে পড়েছে এই স্ট্রেন৷ ইতিমধ্যেই ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়েছেন ২১ জন৷ এই পরিস্থিতিতে কী ভাবে সুরক্ষিত রাখতে হবে শিশুদের? কেন শিশুদের উপর প্রভাব ফেলবে এই ভ্যারিসেন্ট, তা জেনে নেওয়া প্রয়োজন৷
আরও পড়ুন- ডিসিজিআইয়ের কাছে বুস্টার ডোজের অনুমোদন চাইল সিরাম
আমাদের দেশে ১৮ উর্ধ্ব অধিকাংশেরই টিকাকরণ হয়ে গিয়েছে৷ ফলে তাঁরা অনেকটাই সুরক্ষিত৷ তাঁদের শরীরে করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করার মতো ইমিউনিটি তৈরি হয়ে গিয়েছে৷ কিন্তু এখনও শিশুদের টিকাকরণ শুরু হয়নি৷ এর ফলে সংক্রমণ প্যাটার্নে বড়সড় বদল ঘটতে পারে৷ অন্যদিকে, মিউটেশন ঘটায় ভাইরাস আরও বেশি সংক্রামক হয়ে ওঠে৷ ডেল্টা-র ক্ষেত্রেও তা লক্ষ্য করা গিয়েছিল৷ ওমিক্রনের ক্ষেত্রেও তেমনটাই ঘটতে পারে৷ যাদের শরীরে এখনও ইমিউনিটি তৈরি হয়নি, সই কমিউনিটির উপর আরও বেশি করে হামলা চালাকে পারবে৷
শিশুদের কী ভাবে রক্ষা করতে হবে? এ প্রসঙ্গে চিকিৎসক প্রভাস প্রসূন গিরি বলেন, দক্ষিণ আফ্রিকায় শিশুদের শরীরে ওমিক্রনের সংক্রমণ নিয়ে এখনই উদ্বেগের কিছু নেই৷ কারণ যে সকল প্রাপ্ত বয়স্কের শরীরে ওমিক্রনের হদিশ মিলেছে, তাঁদের শরীরে করোনার চিরাচরিত লক্ষণগুলি সে ভাবে দেখা যায়নি৷ এক্ষেত্রে বলা যেতে পারে ওমিক্রনই করোনার শেষ রূপ বদল৷ অর্থাৎ শেষ মিউটেশন৷ এর ফলে গোষ্ঠীর মধ্যে ‘হার্ড ইমিউনিটি’ গড়ে উঠবে৷
তিনি আরও জানান, সংক্রমের হাত থেকে শিশুদের রক্ষা করতে গেলে প্রথমেই জোড় দিতে হবে টিকাকরণে। যত শীঘ্র সম্ভব শিশুদের টিকাকরণের ব্যবস্থা করতে হবে সরকারকে। এক মাস হয়ে গিয়েছে৷ ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের জন্য নির্দিষ্ট টিকায় ছাড়পত্র মিললেও টিকাকরণ শুরু করা সম্ভব হয়নি৷ ২ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের জন্য তৈরি কোভ্যাক্সিন টিকার ট্রায়ালও শেষ হয়ে গিয়েছে।
অন্যদিকে, দেখা গিয়েছে শিশুদের জন্য তৈরি জাইকোভ ডি টিকার তিনটি ডোজের মধ্যে দুটি ডোজ নেওয়ার পরেই শিশুদের শরীরে যথেষ্ট ইমিউনিটি তৈরি হয়ে যাচ্ছে। ফলে ডিসেম্বর থেকেই যদি শিশুদের টিকাকরণ শুরু করা যায়, তাহলে দুই-এক মাসের মধ্যে অনেক শিশুকেই টিকা দেওয়া সম্ভব হবে৷ গোষ্ঠীর মধ্যেও ‘হার্ড ইমিউনিটি’ গড়ে উঠবে। টিকাকরণই শিশুদের রক্ষার একমাত্র উপায়৷