কলকাতা: শীতের মরশুমে নতুন করে ভয় ধরাতে শুরু করেছে করোনার নতুন প্রজাতি জেএন.১৷ দেশের বিভিন্ন রাজ্যে ছড়িয়ে পড়েছে করোনার এই উপরূপের সংক্রমণ৷ করোনা নতুন করে থাবা বসিয়েছে কলকাতা-সহ রাজ্যের জেলাগুলিতেও৷ ক্রমেই বাড়ছে করোনার নয়া ভ্যারিয়ান্ট জেএন.১ উপপ্রজাতিতে আক্রান্তের সংখ্যা৷ দিন কয়েক আগে শহরে ৬ মাসের এক শিশুর শরীরে করোনার নতুন উপরূপের সন্ধান মিলেছিল। চিকিৎসকরা বলছেন, বয়স্ক হোক বা বাচ্চা, শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম হলেই বাড়বে জেএন.১-এ আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা। এমতাবস্থায় মেনে চলুন চিকিৎসকদের পরামর্শ-
* ৫ থেকে ১৮ বছর বয়সীরা অবশ্যই ফেস-মাস্ক ব্যবহার করুন। তবে পাঁচ বছরের নীচে শিশুদের মাস্ক পরাতে হলে চিকিৎসকদের পরামর্শ নিতে হবে।
* ওবেসিটি, টাইপ-১ ডায়াবেটিস, ক্রনিক কার্ডিওপালমোনারির মতো রোগ থাকলে নিয়মিত চেকআপ করানোটা জরুরি৷ শিশুরা কোনও জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকলে বা কোমর্বিডিটি থাকলে বাড়তি সতর্ক থাকতে হবে।
* শিশুদের যতটা সম্ভব বাড়িতেই রাখুন। এই সময় গণপরিবহন এড়িয়ে চলাই ভালো। সার্জিক্যাল মাস্কের বদলে ছোটদের নন-মেডিক্যাল ত্রিস্তরীয় ফ্যাব্রিক মাস্ক পরালে বেশি ভাল৷
* হাল্কা জ্বরের সঙ্গে সর্দি-কাশি, খেতে অনীহা, দুর্বল হয়ে পড়া, ঝিমুনি আসা-শিশুদের মধ্যে এই সকল উপসর্গ দেখা দিলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন৷ অবশ্যই অক্সিজেনের মাত্রা পরীক্ষা করে নিন। অক্সিজেনের মাত্রা ৯৫% এর নীচে নেমে গেলে ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলুন৷
করোনা সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচতে চিকিৎসকরা আরও জানাচ্ছেন-
* উপসর্গহীন বা মৃদু সংক্রমণের ক্ষেত্রে রোগীকে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল ওষুধ বা প্রোফ্যাইল্যাক্টিক ওষুধ দেওয়া যাবে না। ভাইরাল লোড খুব বেশি থাকলে, সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল ওষুধ দেওয়া যেতে পারে, তবে নির্দিষ্ট ডোজে। মৃদু সংক্রমণের ক্ষেত্রে শিশুদের জ্বর হলে প্যারাসিটামলের ডোজ দেওয়া যেতে পারে।
* শিশুরা কোভিড-এ আক্রান্ত হলেও, সংক্রমণ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মৃদুই হচ্ছে। সেক্ষেত্রে তাদের বাড়িতেই আইসোলেশনে রাখা যেতে পারে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ভাবে তাদের রাখতে হবে৷ বাচ্চাদের উষ্ণ গরম জলে গার্গল করান৷
*দু’বছরের বেশি বয়সি শিশুদের দিনে দু’বার, অর্থাৎ সকাল ও রাতে ব্রাশ করানোর পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিসকরা৷ পাঁচ বছরের ওপরে বাচ্চারা প্রতিদিন প্রাণায়াম ও হাল্কা যোগব্যায়াম করলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে৷ শ্বাসপ্রশ্বাসের গতিও স্বাভাবিক থাকবে।
* এর পাশাপাশি হাত ধোওয়া, সোশ্যাল ডিস্টেন্সিং মেনে চলার দিকে নজর রাখতে হবে।
* শিশুদের এই সময় পুষ্টিকর খাবার দিন৷
* বাড়ির বড়দের থেকেও বাচ্চাদের মধ্যে সংক্রমণ ছড়াতে পারে। তাই বড়রা আক্রান্ত হলে বাচ্চাদের থেকে দূরে থাকুন৷ কোনও রকম উপসর্গ দেখা দিলেই আইসোলেশনে চলে যান৷
চিকিৎসকরা বলছেন- জেএন ১ ভয়ানক নাকি নেহাতই নিরীহ, তা এখনও পুরোপুরি নিশ্চিত হয়ে বলতে পারেননি বিজ্ঞানী বা চিকিৎসকরা। তাই প্রিভেনশন ইজ বেটার দ্যান কিয়োর বা প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ ভাল- এই নীতিই মেনে চলতে হবে।