কলকাতা: রাজস্বের মায়া কাটিয়ে তামাক বিরোধী আন্দোলনে সদর্থক পদক্ষেপ গ্রহণের পথে রাজ্য সরকার৷ দেশের ২৩তম রাজ্য হিসেবে আগামী ৭ নভেম্বর ২০১৯ থেকে পশ্চিমবঙ্গেও গুটখা ও পান মশলা বিক্রি নিষিদ্ধ হয়ে যাবে৷রাজ্যের ফুড সেফটি কমিশনার তপনকান্তি রুদ্র এই বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন৷
কেন্দ্রীয় সরকারের বারবার অনুরোধ-উপরোধেও এত দিন রাজস্বের দোহাই দিয়ে গুটখা, খৈনি, পানমশলার ব্যবহারে লাগাম টানেনি রাজ্য৷ এমনকী, দেশের ২২টি রাজ্য চিউইং টোব্যাকো বা চেবানোর তামাককে নিষিদ্ধ করলেও বদলায়নি পশ্চিমবঙ্গের অবস্থান৷ সম্প্রতি চেবানোর তামাককে নিষিদ্ধ করার জন্য মামলা হয় হাইকোর্টেও৷ তামাক নিষিদ্ধকরণের জন্য আরও কিছুটা সময় চাওয়ায় বিচারপতির ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয় রাজ্যের কর্তাদের৷ এর পরই তড়িঘড়ি চেবানোর তামাক কেনা-বেচায় লাগাম টানতে উদ্যোগী হয় রাজ্য সরকার৷
২০০৯ সালে ওয়ার্ল্ড হেলথ অরগ্যানাইজেশন বিশ্বব্যাপী করা গ্লোবাল অ্যাডাল্ট টোব্যাকো সার্ভে রিপোর্ট বলছে, পূর্ব ভারতের প্রায় ৩৮ শতাংশ মানুষ চিউইং টোব্যাকো অর্থাৎ গুটখা, পানমশলা, খৈনি ইত্যাদি ব্যবহার করেন৷ আর স্বাস্থ্যদপ্তরের খতিয়ান বলছে, রাজ্যের প্রায় ৩৩ শতাংশ মানুষ গুটখা বা পানমশলার নেশা করেন৷
নির্বিচারে আক্রান্ত হন ওর্যাল ক্যান্সার, ওরাল ক্যাভিটি ক্যান্সার, ইসোফেগাস ক্যান্সারে৷ শহরেও সমান ভাবে থাবা বসিয়েছে এই ধরনের তামাকজাত দ্রব্য৷ চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল ক্যান্সার ইনস্টিটিউট এর ক্যান্সার রেজিস্ট্রির প্রকাশিত তথ্য বলছে, ২০০৬-’০৭ এ শহরের পুরুষদের মধ্যে যে মুখের ক্যান্সার তিন নম্বরে ছিল, সেই ক্যান্সারই ২০০৮ -’০৯ সালে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে৷ রাজ্যের ক্যান্সার বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দেরিতে হলেও এমন পদক্ষেপে প্রাণ বাঁচবে অসংখ্য মানুষের৷