বিশ্বের প্রথম করোনা ভ্যাকসিনের অনুমোদন দিল রাশিয়া, মিলবে সুফল?

 ভ্যাকসিন নিয়ে বেশ আত্মবিশ্বাসী রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এটি “নির্ভরযোগ্য ভ্যাকসিন” বলেই উল্লেখ করেন তিনি। এত  কম সময়ে  তৈরি ভ্যাকসিনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে দেশ তথা বিশ্ববাসীর আশঙ্কা দূর করতে, তাঁর দুই মেয়েকেও দেওয়া হয়েছে এই ভ্যাকসিন এবং তাঁরা ভালো আছেন বলেও জানিয়েছেন পুতিন।

মস্কো: পরিকল্পনা, উদ্যোগ এবং ঘোষণা অনুসারে বিশ্বের প্রথম করোনা প্রতিষেধক প্রস্তুতকারী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করল রাশিয়া। রুশ স্বাস্থ্যমন্ত্রকের সবুজ সংকেত পেল মস্কোর গামালিয়া সায়েন্টিফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউট এবং রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় যৌথভাবে তৈরি গ্যাম-কভিড-ভ্যাক লাইও ভ্যাকসিন। সেক্ষেত্রে করোনার বিরুদ্ধে বিশ্বের প্রথম ভ্যাকসিক হিসেবে রেজিস্ট্রেশন পেল এই রাশিয়ান এই ভ্যাকসিন। 

করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন প্রস্তুত। মঙ্গলবার এমনটাই ঘোষণা করলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। রুশ করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন নিয়ে বেশ আত্মবিশ্বাসী পুতিন। এটি “নির্ভরযোগ্য ভ্যাকসিন” বলেই উল্লেখ করেন তিনি। এত কম সময়ে তৈরি ভ্যাকসিনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে দেশ তথা বিশ্ববাসীর আশঙ্কা দূর করতে, তাঁর দুই মেয়েকেও দেওয়া হয়েছে এই ভ্যাকসিন এবং তাঁরা ভালো আছেন বলেও জানিয়েছেন পুতিন।

রাশিয়ার সংবাদ সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, টেলিভিশনে সরকারী মন্ত্রীদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের সময় প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন জানিয়েছেন “আজ সকালে, বিশ্বে প্রথমবারের মতো নোভেল করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে রাশিয়ার একটি ভ্যাকসিন রেজিস্ট্রেশন পেল। “

 এই ভ্যাকসিন উদ্ভাবন ও প্রস্তুতকরীদের প্রতি ধন্যবাদ জানিয়ে পুতিন বলেন,”বিশ্বের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।” তিনি আরও বলেন, “আমি জানি শক্তিশালী প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে এটি অত্যন্ত কার্যকরী এবং আমি আবারও বলছি এটি সমস্ত প্রয়োজনীয় পরীক্ষায় উত্তীর্ণ।”

 

রাশিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রী মিখাইল মুরাস্কো জানিয়েছেন, শর্তসাপেক্ষে রেজিস্ট্রেশন পেয়েছে গামালিয়ার ভ্যাকসিন এবং এর ট্রায়াল চলবে, একইসঙ্গে চলবে উৎপাদন।মুরাস্কো আরও বলেন, যে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রথম রাশিয়ান ভ্যাকসিন দুটি জায়গায় তৈরির কাজ শুরু হবে একটি গামালিয়া রিসার্চ ইনস্টিটিউট এবং অন্যটি বিনোফার্ম সংস্থায়। স্পুটনিক  সংবাদ সংস্থার প্রতিবেদন অনুসারে, ভ্যাকসিন প্রসঙ্গে রাশিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানিয়েছে ,”দুটি-পর্যায়ের ইনজেকশনের পরিকল্পনা স্থায়ী প্রতিরোধ ক্ষমতা গঠনে সহায়তা করে। ভেক্টর ভ্যাকসিন এবং দুটি-পর্যায়ের প্রয়োগের অভিজ্ঞতা থেকে দেখা গেছে যে প্রতিরোধ ক্ষমতা দুবছর পর্যন্ত স্থায়ী হয়।”

তবে রাশিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রক অনুমোদন দিলেও এখনো বিষয়টি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে আলোচনার পর্যায়ে রয়েছে। রয়টার্সের খবরে অনুসারে, জেনেভায় জাতিসংঘের এক বিবৃতিতে ক্লিনিকাল ট্রায়ালগুলির কথা উল্লেখ করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মুখপাত্র তারিক জাসেরেভিচকে জানিয়েছেন, নতুন অনুমোদিত এই কোভিড ভ্যাকসিন সম্ভব্য গুনগতমানের নিরিখে ছাড়পত্র পেতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আলোচনা প্রক্রিয়া শুরু করেছে রাশিয়ার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ।  তিনি বলেন, “আমরা রাশিয়ার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ভালোভাবেই যোগাযোগ রাখছি এবং এই টিকার সম্ভাব্য আগাম গুনগত মানে ছাড়পত্র পাওয়ার বিষয়ে আলোচনা চলছে, তবে যে কোনও ভ্যাকসিনের পূর্বনির্ধারিতকরণের মধ্যে প্রয়োজনীয় সমস্ত সুরক্ষা এবং কার্যকারিতা সম্পর্কিত তথ্যগুলির কঠোর পর্যালোচনা এবং মূল্যায়ন অন্তর্ভুক্ত।”  

প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহে শুক্রবার রাশিয়ার  উপ-স্বাস্থ্যমন্ত্রী ওলেগ গ্রিডনেভ জানিয়ে ছিলেন প্রথম করোনার প্রতিষেধক প্রস্তুতকারী হিসেবে আগামী ১২ আগস্ট নাম নথিভুক্ত করতে চলেছে রাশিয়া। সেপ্টেম্বর থেকেই শুরু হয়ে যাবে টিকাকরণ বলেও জানিয়েছিলেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fourteen + seventeen =