কলকাতা: করোনা তো আছেই, তার মধ্যেই গোঁদের ওপর বিষ ফোড়ার মতো মিউকোরমাইসিস বা ব্ল্যাক ফাঙ্গাস, হোয়াইট ফাঙ্গাস, ইয়েলো ফাঙ্গাসের মতো ছত্রাকের ছড়াছড়ি৷ এবার বর্ষা শুরু হতেই নানা রোগের প্রকোপও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন চিকিৎসকরা। তাই আগাম সতর্কবার্তা দিচ্ছে চিকিৎসক মহল।
মুম্বইয়ে ভারী বৃষ্টিপাতের পরে বৃহন্নুম্বাই পুর কর্পোরেশন (বিএমসি) লেপ্টোস্পাইরোসিস নিয়ে সতর্ক করেছে সেখানকার বাসিন্দাদের। গত বছর জুলাইয়ে বৃষ্টির পর করোনার মধ্যেই ১৪টি এমন ঘটনা দেখা গিয়েছিল। ২০১৯ সালে সেই সংখ্যাটা ছিল ৭৪টি। জমা জল থেকে এই রোগ ছড়ানোর আশঙ্কা থাকে৷
লেপ্টোস্পাইরোসিস হওয়ার কারণ
আবহাওয়ার পরিবর্তন হলে বিশেষ করে বর্ষাকালে ব্যাক্টেরিয়া, ছত্রাকের সক্রিয়তাও বাড়তে থাকে৷ এই সময় ডায়েরিয়া, টাইফয়েড, জন্ডিসের মতো রোগের প্রকোপও বেড়ে যায়। ২০১৯ সাল থেকে বর্ষা এলে লেপ্টোস্পাইরোসিস রোগটি ভীষণ ভাবে ভাবে দেখা যাচ্ছে৷ এই রোগ মূলত ইঁদুর, ছুঁচো বা বেজি জাতীয় প্রাণীর বর্জ্য পদার্থ থেকে ছড়ায় বলেই জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা। এই সব প্রাণীরা মাটিতেই বর্জ্য ত্যাগ করে, যা বর্ষার সময় জমা জলে সহজেই মিশে যায়। আর সেই জল থেকেই এই রোগটি মানবদেহে সংক্রমিত হয়৷
বাঁচার উপায় মানে সতর্কতা
এর হাত থেকে বাঁচতে বর্ষাকালে জমা জল এড়িয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। পায়ে ফাঁটা গোড়ালি কিংবা কাঁটাছেঁড়া থাকলে সেখানে এই ব্যাক্টেরিয়া মিশ্রিত জল লেগে দেহে প্রবেশ করে এই ক্ষতিকর এই জীবাণু। তাই জমা জল এড়িয়ে হাঁটাচলা করা, বন্ধ জুতো পরা, সবসময় পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকা, হাত এবং পা সাবান ও জলে ধুয়ে নেওয়া উচিত প্রতিদিন।
কী কী উপসর্গ
প্রাথমিকভাবে জ্বর হয়। হাতে-পায়ে খুব ব্যথা হয়। বমি বমি ভাব এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে ফুসকুড়ি মতোও দেখা যায়। সাধারণ ভাবে এই রোগ ধরা পড়লেও, রক্ত পরীক্ষা করলেই এই রোগের সংক্রমণ বোঝা যায়৷
চিকিৎসা পদ্ধতি
এই রোগের ক্ষেত্রে চিকিৎসা শুরু হয় অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে৷ তবে লেপ্টোস্পাইরোসিস দীর্ঘদিন শরীরে বাসা বেঁধে থাকলে, তা কিডনির ক্ষতি করতে পারে। এটি মারাত্মক আকারও ধারণ করতে পারে। দীর্ঘদিন জ্বর থাকলে তার সঠিক চিকিৎসা না হলে মারাত্মক হতে পারে।