নয়াদিল্লি: ভারতের টিকাকরণ কর্মসূচি শুরু হওয়ার পর সেরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়ার করোনা ভাইরাস ভ্যাকসিন কোভিশিল্ড নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি না হলেও ভারত বায়োটেকের কোভ্যাক্সিন নিয়ে বিতর্ক ছিল। এতদিন পর্যন্ত এই ভ্যাকসিনের ট্রায়াল রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসেনি। তার আগেই বহু কোটি মানুষ এই ভ্যাকসিন নিয়ে নিয়েছেন। যদিও সম্প্রতি এই ভ্যাকসিনের ট্রায়াল রিপোর্ট প্রকাশ্যে এসেছে যাতে দাবি করা হয়েছে, ৭৭ শতাংশ কার্যকর ভারতের তৈরি এই ভ্যাকসিন। এখন চূড়ান্ত পর্বের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল রিপোর্ট বলছে, এই ভ্যাকসিন করোনাভাইরাস ডেল্টা প্রজাতির বিরুদ্ধেও যথেষ্ট কার্যকর। এমনটাই দাবি করছে প্রস্তুতকারক সংস্থা ভারত বায়োটেক।
দাবি করা হচ্ছে, করোনা ভাইরাসের ‘ডেল্টা’ প্রজাতির বিরুদ্ধে এই কোভ্যাক্সিন টিকা ৬৫.২ শতাংশ কার্যকরী। অন্যদিকে উপসর্গহীন কোভিডের ক্ষেত্রে এই টিকা কার্যকরী ৬৩.৬ শতাংশ। এর পাশাপাশি আরও দাবি করা হয়েছে, এই টিকা ব্যবহারের পর সাধারণ মানুষের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার হার ১২ শতাংশ এবং ০.৫ শতাংশ বা তারও কম ক্ষেত্রে গুরুতর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কোভ্যাক্সিনের চূড়ান্ত ট্রায়াল রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পরেও টিকা প্রস্তুতকারী সংস্থার স্বস্তি হচ্ছে না কারণ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা একে এখনও অনুমোদন দেয়নি। তবে মনে করা হচ্ছে খুব শীঘ্রই সেই অনুমোদন মিলবে। আপাতত ব্রাজিল, মেক্সিকো, ইরান, ফিলিপিন্সের মতো দেশ এই টিকাকে অনুমোদন দিয়েছে, কিন্তু ‘হু’ না দেওয়ায় যারা এই ভ্যাকসিন নিয়েছে তাঁরা সমস্যায় পড়ছে। কারণ দেশের বাইরে গেলে এই ভ্যাকসিন প্রাপকদের মান্যতা দেওয়া হচ্ছে না।
আরও পড়ুন: ‘বাংলার জঙ্গলরাজ যেন টিকাকরণে প্রভাব না ফেলতে পারে!’ তোপ হর্ষের
কী কী ভ্যাকসিন নেওয়া থাকলে বিভিন্ন দেশে যাওয়ার জন্য ছাড়পত্র পাওয়া যাবে তার একটি তালিকা বানিয়েছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। সেই তালিকার মধ্যে ছিল সেরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়ার কোভিশিল্ড, মডার্না, ফাইজার, অ্যাস্ট্রোজেনেকা, জনসন এন্ড জনসন এবং সিনোফার্ম ভ্যাকসিন। এখন এই রিপোর্টের পর আশা করা হচ্ছে এইসব ভ্যাকসিনের পাশে চলে আসবে কোভ্যাক্সিনের নাম। একই সঙ্গে এই ভ্যাকসিন নিয়ে যে বিতর্ক এতদিন ধরে চলছিল তার একটা মীমাংসা হতে চলেছে বলেও আন্দাজ করা হচ্ছে। যদিও চূড়ান্ত পর্বে ট্রায়াল রিপোর্ট না বেরোনোর আগেই এত মানুষকে এই ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে বলে চাপা একটা অস্বস্তি কাজ করছে অনেকের মধ্যে।