মানবদেহে দেশীয় করোনা টিকার দ্বিতীয় দফায় প্রয়োগ শুরু করল জাইডাস ক্যাডিলা

২য় পর্যায়ে এক হাজারেরও বেশি সুস্থ-সবল প্রার্থীদের ওপর পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করা হবে জাইকোভ-ডি। আগামী ফেব্রুয়ারি বা মার্চের মধ্যে জাইকোভ-ডিএর বিলম্বিত-পর্যায়ে ট্রায়ালগুলি সম্পন্ন করার পরিকল্পনা রয়েছে এবং শুরুতে এক বছরে ১০০ মিলিয়ন ডোজ উৎপাদন করতে পারবে জাইডাস ক্যাডিলা।

নয়াদিল্লি: অনুমোদন এবং পরিকল্পনা অনুসারে বৃহস্পতিবার থেকেই শুরু হয়ে গেল ভারতে তৈরি দ্বিতীয় করোনা প্রতিষেধক জাইকোভ-ডি এর মানবদেহে দ্বিতীয় পর্যায়ের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ। আহমেদাবাদে জাইডাস ক্যাডিলা সংস্থার নিজস্ব গবেষণাগারে তৈরি করা হয়েছে এই কোভিড ভ্যাক্সিন। এই পর্যায়ে এক হাজারেরও বেশি সুস্থ-সবল প্রার্থীদের ওপর পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করা হবে এই প্রতিষেধক।

গত ২ জুলাই তাদের প্রতিষেধকের প্রথম পর্যায়ের হিউম্যান ট্রায়ালের জন্য কেন্দ্রীয় ওষুধ নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমোদন পেয়েছিল গুজরাট ভিত্তিক এই ফার্মাসিউটিক্যাল জায়ান্ট। এরপর ১৫ জুলাই থেকে শুরু হয় প্রথম পর্যায়ের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ।

জাইডাস ক্যাডিলার চেয়ারম্যান ডঃ পঙ্কজ আর প্যাটেল বলেন,”জাইকোভি-ডি এর সুরক্ষা নিশ্চিত করতে প্রথম পর্যায়টি একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। ভ্যাকসিন প্রয়োগের পর সুরক্ষার দিকটি নিশ্চিত করতে প্রথম পর্যায়ের ক্লিনিকাল ট্রায়ালের ভ্যাকসিন প্রার্থীদের একটি ক্লিনিকাল ফার্মাকোলজিকাল ইউনিটে ২৪ ঘন্টার জন্য গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয়েছিল এবং তারপর ৭ দিন অপেক্ষার পর ভ্যাকসিনটি বেশ নিরাপদ বলেই মনে হয়েছে।”

সংস্থার মতে, এই ভ্যাকসিন প্রার্থীদের জন্য নিরাপদ তার ডিএনএ ভ্যাকসিন প্ল্যাটফর্মের জন্য। এক্ষেত্রে জিনগতভাবে পরিচালিত প্লাজমিড (ছোট ডিএনএ অণু) ইনজেকশনের মাধ্যমে প্রয়োগ করার জন্য প্রয়োজন  ডিএনএ ক্রম সঙ্কেত যুক্ত অ্যান্টিজেন(রক্তস্রোতের মধ্যে বাইরের থেকে প্রবিষ্ট পদার্থ যা রোগজীবাণু প্রতিরোধক পদার্থ সৃষ্টি করে) যা নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে প্রতিরোধের প্রয়োজনীয় প্রতিক্রিয়া অনুসারে কাজ করে।

জাইডাস ক্যাডিলা জানিয়েছে দ্বিতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালে  ভ্যাকসিন প্রার্থীদের হিউমোরাল অর্থাৎ দেহরস এবং সেলুলার ইমিউন অর্থাৎ দেহকোষের প্রতিরোধ প্রতিক্রিয়ার মূল্যায়ন হবে। ভ্যাকসিন দ্বারা নির্ধারিত অ্যান্টিবডিগুলির ভাইরাস নিষ্ক্রিয়করণের সম্ভাবনা ও নিরপেক্ষতার তথ্যগুলিও এই পর্যায়ে পরীক্ষা করা হবে। এটি শেষ ডোজ  দেওয়ার ৬ মাস পর্যন্ত দেহরস প্রতিক্রিয়ার স্থায়িত্বও মূল্যায়ন করা হবে, বলেও সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

সেক্ষেত্রে আগামী ফেব্রুয়ারি বা মার্চের মধ্যে ভ্যাকসিনের জন্য বিলম্বিত-পর্যায়ে ট্রায়ালগুলি সম্পন্ন করার পরিকল্পনা রয়েছে এবং শুরুতে এক বছরে ১০০ মিলিয়ন ডোজ উৎপাদন করতে পারবে এই সংস্থা। প্রসঙ্গত, ইতিমধ্যেই প্রথম পর্যায়ের ক্লিনিকাল ট্রায়াল সম্পন্ন করেছে আইসিএমআরের সহযোগিতায় ভারত বায়োটেকের তৈরি করোনা প্রতিষেধক কোভ্যাকসিন। অন্যদিকে মঙ্গলবার ভারতে দ্বিতীয় এবং তৃতীয় পর্যায়ের ক্লিনিকাল ট্রায়ালের  অনুমোদন পেয়েছে সিরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়ার তৈরি অক্সফোর্ড ভ্যাকসিন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

one × 1 =