কলকাতা: ২০১৯ সালের শেষ দিকে যখন প্রথম করোনাভাইরাস সংক্রমণের সন্ধান মিলেছিল তখন পৃথিবীর কেউ ভাবতে পারেনি যে বর্তমানের মত অবস্থা তৈরি হবে। ২০২০ সালের বিভীষিকা ২০২১ সালে আরো ভয়ানক রূপ নিয়েছে করোনাভাইরাস দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে। এরই মধ্যে এই ভাইরাসের একাধিক রূপের হদিস মিলেছে। এদের মধ্যে রয়েছে আলফা, বিটা, গামা। ইতিমধ্যে তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা করা হয়েছে এবং করোনাভাইরাসের নতুন প্রজাতি ‘ডেল্টা’র কারণে এই তৃতীয় ঢেউ হবে বলেও মনে করছেন অধিকাংশ গবেষকেরা। ইতিমধ্যে ভারতে অনেকেই আক্রান্ত হয়েছেন এই নতুন প্রজাতিতে এবং বিশ্বের একাধিক দেশে এই প্রজাতির হদিস মিলেছে। এই নতুন প্রজাতি নিয়ে চিন্তিত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও। কিন্তু আন্তর্জাতিক এক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘নেচার’ দাবি করছে যে এরপর হয়তো করোনার আর ভয়ানক রূপ দেখা যাবে না। শুধুমাত্র এই একটি বাক্য ব্যাপক স্বস্তি দিচ্ছে গোটা বিশ্বকে।
গবেষণা বলছে, করোনাভাইরাস নতুন প্রজাতির ‘ডেল্টা’র অস্ত্রের ধার শীর্ষ বিন্দুতে পৌঁছে গিয়েছে! অর্থাৎ এটাই হচ্ছে করোনাভাইরাস সংক্রমণের সবথেকে ভয়ঙ্কর রূপ। তবে এরপর আর ভয়ঙ্কর হতে পারবে না এই ভাইরাস কারণ এই প্রজাতি তার সমস্ত শক্তি ব্যয় করে দেবে। বিগত এক বছর ধরে করোনাভাইরাস একাধিকবার নিজের রূপ পরিবর্তন করেছে এবং সংক্রমণের মাত্রা বাড়িয়েছে। তবে এখন বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, আরো একবার রূপ বদলের জন্য যতটা পরিমাণ স্পাইক প্রোটিনের পরিবর্তন দরকার ততটা ‘ডেল্টা’য় নেই। তাই এরপর করোনা আরো শক্তিশালী রূপ নিতে পারবে না বলেই মনে করছেন তারা। গবেষকদের একাংশ আরও জানাচ্ছে, করোনাভাইরাসের এই নতুন প্রজাতি ‘ডেল্টা’ই হচ্ছে ভাইরাসের সব গ্রুপের মধ্যে সবথেকে বেশি সংক্রামক। এটাই এই ভাইরাসের সবথেকে ভয়ঙ্কর রূপ। তাই পরবর্তী ক্ষেত্রে এর থেকে বেশি ভয়ঙ্কর হবার সম্ভাবনা তুলনামূলক কম। এর প্রেক্ষিতে দাবি করা হয়েছে, এই ভাইরাস এমন একটি জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে যেখানে তার স্পাইক প্রোটিনে আর কোন মিউটেশন হবে না, ছোটখাটো কোনো রদবদল হওয়ার সম্ভাবনাও কম। তাই অনুমান করা হচ্ছে এটাই হয়তো এই ভাইরাসের সর্বশেষ রূপ। পরবর্তী ক্ষেত্রে, কয়েক মাস বা বছর পর হয়তো সামান্য মিউটেশন হতে পারে অন্য ফ্লু ভাইরাসের মত। তবে তখন সেটি ভয়ঙ্কর হবে না।
আরও পড়ুন- করোনায় আক্রান্তদের নির্জন দ্বীপে পাঠাতে চেয়েছিলেন ট্রাম্প!
প্রসঙ্গত, করোনা ভাইরাসের ডেল্টা প্রজাতির দেখা মিলেছে দেশের ৮৫টি দেশে৷ আরও বিভিন্ন জায়গায় মিলছে খোঁজ৷ মঙ্গলবার করোনার সাপ্তাহিক রিপোর্টে হু জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত বিশ্বের ১৭০টি দেশে আলফা প্রজাতির দেখা মিলেছে৷ ১১৯টি দেশে রয়েছে বিটা প্রজাতি, ৭১টি দেশে রয়েছে গামা ও ৮৫টি দেশে ছড়িয়ে রয়েছে করোনা ভাইরাসের ডেল্টা প্রজাতি৷ এর মধ্যে গত দুই সপ্তাহে ১১টি দেশ থেকে ডেল্টা প্রজাতির ভাইরাসের উপস্থিতির খবর মিলেছে৷