নয়াদিল্লি: কেন্দ্রীয় সরকার ৩০কোটি Corbevax আগাম বরাত দিয়ে রেখেছে কেন তা নিয়ে নানা মহলে কৌতুহল তৈরি হয়েছে। ওই? হায়দ্রাবাদের কোম্পানি বায়োলজিক্যাল-ই এই করোনা টিকার নির্মাতা। তারা তৃতীয় ফেজের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শেষ করার আগেই সরকার ১৫০০ কোটি টাকার বরাত দিয়ে রেখেছে। এতে মাত্র দেশের 15 কোটি জনতাকে টিকা দেওয়া যাবে। কিন্তু, তাতেও পিছু হঠতে রাজি নয় সরকার। কারণ দেশে টিকার আকাল রয়েছে। সিরাম ইনস্টিটিউডের কোভিশিল্ড এবং ভারত বায়োটেকের কোভ্যাকসিন সারা দেশের জন্য.অপ্রতুল। রাশিয়ার তৈরি স্পুটনিক-ভি সবে দেওয়া শুরু হয়েছে কিছু জায়গায়। বিদেশী টিকা প্রস্তুতকারকরা সরকারকে ভরসা দিতে পারছে না। এই পরিস্থিতিতে দেশের এই কোম্পানি মোদি সরকারকে ভরসা দিতে পেরেছে।
বিভিন্ন টিকা বিভিন্ন ভাবে তৈরি হয়েছে। ভারত বায়োটেকের কোভ্যকসিন একটি নিষ্ক্রিয় টিকা দিয়ে তৈরি। আবার কোভিশিল্ড ভাইরাল ভেক্টরের সাহায্যে তৈরি হয়েছে। আমেরিকায় ফাইদার এবং মর্ডানার করোনা টিকা এম-আরএনএ থেকে তৈরি হয়েছে। বায়োলজিক্যাল-ই এর টিকা Corbevax তৈরি হয়েছে সার্স কোভ -২ এর প্রোটিন স্পাইক দিয়ে। অর্থাত, করোনা ভাইরাসের কাঁটার মতো আংশটি নিয়ে গবেষণা চালিয়ে এই চিকা তৈরি হয়েছে। অনেকের প্রশ্ন, এই টিকা কী সম্পূর্ণ ভারতের তৈরি। উত্তর, না। আমেরিকার বাইলর ল্যাবে টিকা গবেষণা শেষ হয়েছে। ভারতে নির্মাণ এবং ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল হয়েছে। জুলাইয়ের মধ্যে তৃতীয় দফার ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শেষ হয়ে যাবে। তারপরেই দেশের বাজারে পাওয়া যাবে এই টিকা। তবে সব থেকে বাল ব্যপার হল এই যে, এই টিকার দুটি দোজের দাম হবে পারে 400 টাকারও কম। ভারতে বিক্রিত সব থেকে কম দামী টিকা হতে পারে এটি।
কেন্দ্রীয় সরকার ২০২০ সালের মাঝামাঝি সময় থেকে সমস্ত বড় আন্তর্জাতিক টিকা প্রস্তুতকারকদের সঙ্গে নিরবিচ্ছিন্ন সমন্বয় বজায় রেখেছে। ফাইজার, জনসন অ্যান্ড জনসন, মর্ডানার –এর সঙ্গে একাধিকবার আলোচনাও করেছে। ভারতে তাদের টিকা সরবরাহ বা তৈরি করতে কেন্দ্রীয় সরকার সমস্ত সহায়তা দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। তবে এই নয় যে, তাদের সরবরাহ করা টিকাগুলি বিনামূল্যে পাওয়া যাবে। আমাদের বুঝতে হবে যে আন্তর্জাতিক টিকা কেনা,মানে ‘বাড়ির তাকে সাজিয়ে রাখা’র মতো যে কোনো সামগ্রী কেনার বিষয় নয়। বিশ্বব্যাপী টিকার সীমিত সরবরাহ রয়েছে। সংস্থাগুলি সীমাবদ্ধ মজুত থেকে তাদের নিজস্ব পরিকল্পনা, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তা বরাদ্দ করছে।তাদের বেশ কিছু বাধ্যবাধকতাও রয়েছে। আমাদের নিজস্ব টিকা প্রস্তুতকারীরা যেমন আমাদের জন্য নিদ্বির্ধায় কাজ করছে তেমনই বিদেশী সংস্থাগুলিও তাদের নিজের দেশগুলির প্রতি অগ্রাধিকা দিচ্ছে।এরই মধ্যে যত দ্রুত সম্ভব ফাইজার টিকার উপস্থিতি সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় সরকার প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। ভারত সরকারের প্রচেষ্টার ফলস্বরূপ স্পুৎনিক টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগের কাজে গতি এসেছে। সময়োচিত অনুমোদনের সঙ্গে সঙ্গে রাশিয়া ইতিমধ্যে দুটি সংস্থার টিকা ও সহযোগী প্রযুক্তি আমাদের সংস্থার কাছে পাঠিয়েছে, যাতে এদেশেই খুব শীঘ্রই এই টিকাগুলি উৎপাদনের কাজ শুরু করা যায়। আমরা সমস্ত আন্তর্জাতিক টিকা প্রস্তুতকারকদের কাছে ভারতে আসার জন্য অনুরোধ জানিয়েছি,যাতে তারা ভারত এবং বিশ্বের জন্য এই টিকা তৈরি করতে পারে।