নয়াদিল্লি: নতুন বছরের প্রথম দিনেই বড়োসড়ো স্বস্তির খবর শুনিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে অক্সফোর্ড করোনাভাইরাস ভ্যাকসিনকে। জরুরী ভিত্তিতে খুব তাড়াতাড়ি এই ভ্যাকসিন প্রদান শুরু করবে সেরাম ইনস্টিটিউট, জানা গিয়েছে এমনটাই। তবে কতজন বা কারা কারা প্রথমে এই ভ্যাকসিন পাবেন সেই নিয়ে বিস্তারিত তথ্য দিয়েছে নীতি আয়োগ। জানানো হয়েছে, প্রাথমিক পর্যায়ে প্রথমে ৩০ কোটি মানুষকে টিকা দেওয়া হবে যার সম্পূর্ণ খরচ বহন করবে কেন্দ্রীয় সরকার।
নীতি আয়োগের তরফে জানানো হয়েছে তা হল, প্রাথমিক পর্যায়ে যে ৩০ কোটি মানুষকে টিকা দেওয়া হবে তাদের মূলত চারটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়েছে। প্রথমে রয়েছেন ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী এবং আশা কর্মীরা। দ্বিতীয় পর্যায়ে রয়েছেন পুলিশ, পৌরসভার কর্মীরা। তৃতীয় পর্যায়ে রয়েছে এমন মানুষ যাদের বয়স ৫০ বছরের বেশি। আর চতুর্থ পর্যায় রয়েছেন কোমর্বিডিটি রোগীরা, তাদের বয়স ৫০ বছরের কম বা বেশি হতে পারে। একই সঙ্গে এমন মানুষকেও ভ্যাকসিন দেওয়া হবে যাদের কাজের সূত্রে সর্বক্ষণ মেলামেশা করতে হয়। এইচআর পর্যায় মিলিয়ে মোট ৩০ কোটি মানুষকে প্রথম পর্যায়ে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। এই ভ্যাকসিন প্রদানের খরচ সম্পন্ন বহন করবে কেন্দ্রীয় সরকার। তারপরে দেশজুড়ে ভ্যাকসিন বিতরনের জন্য হাব তৈরি করা হবে। শেষ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, দেশের ২৯ হাজারের বেশি জায়গায় শিবির তৈরি করা হবে যেখান থেকে টিকাকরণ প্রদান করা হবে। টিকা বিতরনের জন্য কমপক্ষে ৩১ টি হাব তৈরি হবে বলে জানা গিয়েছে।
কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, প্রাথমিক পর্যায়ের ভ্যাকসিন প্রদানের কাজ হওয়ার পর দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে সাধারণ মানুষের জন্য টিকা প্রদানের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে তার আগে কিভাবে এই টিকার ইঞ্জেকশন দেওয়া হবে, যারা দেবেন তারা কিভাবে প্রস্তুতি নেবেন, যাদেরকে টিকা দেওয়া হবে তারা যদি অসুস্থ হয়ে পড়েন বা তাদের যদি কোনো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হয় তাহলে কিভাবে পরিস্থিতি সামলানো যাবে, সব মিলিয়ে এই টিকার ড্রাই রান করা হবে। এছাড়াও টিকা প্রদানের জন্য বিভিন্ন ধরনের মহড়া চালানো হবে। উল্লেখ্য, নভেম্বর মাসে জরুরী ভিত্তিতে ভ্যাকসিন প্রদানের অনুমতি চেয়েছিল সেরাম ইনস্টিটিউট কিন্তু সেই সময় তা খারিজ করে দেয় কেন্দ্রীয় ড্রাগ কন্ট্রোল এবং তার অধিনস্ত ভ্যাকসিন রেগুলেটরি কমিটি। সেই সময় বলা হয়, চূড়ান্ত পর্যায়ের ট্রায়াল’ না হওয়া পর্যন্ত ছাড়পত্র দেওয়া সম্ভব নয়। তবে এই মুহূর্তে অক্সফোর্ড দাবি করছে তাদের ভ্যাকসিন ৯৫ শতাংশ কার্যকরী। অন্যদিকে সেরামের কর্ণধার তিনিও বলেছেন কোভিশিল্ড যথাযথভাবে ট্রায়ালে সফল হয়েছে এবং এর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়নি। তাই টিকাকরণের জটিলতা থাকার কথা নয়। সেই দাবি অনুযায়ী অবশেষে সব রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর এই ভ্যাকসিনকে অনুমোদন দিলো কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রীর নেতৃত্বে গঠিত রেগুলেটরি কমিটি।