নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজ্য রাজনীতিতে ফের খবরের শিরোনামে কুণাল ঘোষ। বিভিন্ন সময়ে কুণালের মন্তব্য নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে ঝড় বয়ে গিয়েছে। ১-মে শ্রমিক দিবসের দিন তিনি কলকাতা উত্তর কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী তাপস রায়ের উপস্থিতিতে একটি রক্তদান শিবির থেকে এমন মন্তব্য করেছেন বিজেপি প্রার্থী তাপস রায়কে নিয়ে, যা কার্যত তৃণমূলের বিরুদ্ধেই গিয়েছে। এরপরই দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে কুণালকে সরিয়ে দিয়েছে তৃণমূল। যদিও কুণালের দাবি তিনি বহু আগেই রাজ্য সাধারণ সম্পাদক এবং দলের মুখপাত্রের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন।
ঘটনা হল মুখপাত্র থাকার সময়ে প্রত্যাশিতভাবে দলের পক্ষে দাঁড়িয়ে তাঁকে ব্যাট ধরতে হয়েছে। আবার সেই সময়েই এমন কিছু মন্তব্য তিনি করেছেন যাতে প্রবল অস্বস্তিতে পড়েছে তৃণমূল। এই পরিস্থিতিতে কুণাল ফের বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন। দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার কথা তৃণমূল ঘোষণা করার পরই একটি সংবাদমাধ্যমে বেশ কিছু বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন তিনি। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত মন্তব্য। কুণাল বলেছেন,”রাজ্যে চাকরি বিক্রি হচ্ছে, পার্থ চট্টোপাধ্যায় বা তাঁর নাম করে টাকা তোলা হচ্ছে, সে খবর দলের কাছে আগে থেকেই ছিল। এমনকী ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের আগেও চাকরি বিক্রির কথা জানত দল। চাকরি বিক্রি করে কেউ না কেউ অন্যায় করেছে। সেই লোক এখনও মন্ত্রিসভায় আছে। দলের মধ্যে এখনও বহাল তবিয়তে আছে। যিনি চাকরি-বিক্রিতে যুক্ত তিনি এখনও রাজ্যের মন্ত্রী।” বলাবাহুল্য কুণালের এই মন্তব্যে যথেষ্ট আন্দোলিত হয়েছে রাজ্য রাজনীতি।
স্বাভাবিকভাবেই রাজ্য রাজনীতিতে কুণালের এমন অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। তাঁর বিভিন্ন মন্তব্যে দল বহুবার চরম অস্বস্তিতে পড়লেও কুণালকে বলতে শোনা গিয়েছে, তিনি দলের সৈনিক, সব সময় দলের পাশেই থাকবেন। এমনকী পদ থেকে বুধবার তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার পরেও এই একই কথা বলতে শোনা গিয়েছে কুণালকে। কুণালকে নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে সবসময় জল্পনা ও বিতর্ক অব্যাহত থেকেছে। কখনও শোনা গিয়েছে তিনি নাকি বিজেপিতে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। আবার পরক্ষণেই সেই সম্ভাবনার উল্টো কথা শোনা গিয়েছে। সাম্প্রতিক কালে ঘাটালের তৃণমূল প্রার্থী দেব সম্পর্কে বিরুপ মন্তব্য করেছেন তিনি। পাল্টা কুণালকে মোক্ষম জবাব দিয়েছেন দেব। এই প্রথম নয়, কয়েক মাস আগেও দেব-বিরোধী মন্তব্য করতে শোনা গিয়েছে কুণালকে। যা নিয়ে বেশ বিতর্ক হয়। সবমিলিয়ে অতীতে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক বা অন্যতম প্রধান মুখপাত্র হিসেবে থাকলেও দলের পক্ষে বক্তব্য রাখার পাশাপাশি তাঁর বিভিন্ন কথায় সমস্যায় পড়তে হয়েছে তৃণমূলকে। তৃণমূলের অন্দরে কান পাতলেই সেই সময় শোনা যেত কুণাল আসলে দলের ক্ষতি করতে চাইছেন। এই আবহের মধ্যে একটা কথা বলাই যায় যে, কুণাল ‘এপিসোড’ সম্ভবত এখনও শেষ হয়নি। সেখানে আরও বড় চমক হয়ত অপেক্ষা করে রয়েছে। আপাতত সেদিকেই তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল।