নিউইয়র্ক: ভিড়ে ঠাসা রাস্তা। গাড়ির চাকা যেন গড়াচ্ছেই না। লম্বা জ্যামে পড়ে তখন একেবারে অস্থির অবস্থা৷ এমন যানজটের মাঝে হঠাৎই গিয়ার বদলাল আপনার গাড়ি৷ উড়ে গেল আকাশ পথে৷ ভাবছেন হয়তো কোনও কল্পবিজ্ঞান কিংবা ফিকশন মুভির কথা বলছি৷ কারণ ‘ব্লেড রানার’, ‘দ্য ফিফথ এলিমেন্ট’, ‘স্পেসবলস’ সহ বহু ছবিতে উড়ন্ত গাড়ির দৃশ্য দেখা গিয়েছে৷ যা দেখে এমন কল্পনা অনেকের মনেই বাসা বাঁধে। কিন্তু না৷ এবার এই ভাবনাই বাস্তব হল মার্কিন মুলুকে। বাজারে আসছে উড়ন্ত গাড়ি। আলেফ অ্যারোনটিক্সের ফ্লায়িং কারকে সম্প্রতি অনুমোদন দিয়েছে আমেরিকার বাইডেন সরকার। প্রথম দেশ হিসেবে আমেরিকাই এমন কোনও উড়ন্ত যানকে ছাড়পত্র দিল।
২০২২ সালের অক্টোবর মাসে প্রথম ফ্লাইং কারের মডেল প্রকাশ্যে এনেছিল অ্যালেফ অ্যারোনটিক্স। তারপর থেকেই উড়ন্ত গাড়ি নিয়ে বিশ্বজুড়ে হইহই পড়ে যায়। ইতিমধ্যেই ৪৪০টি গাড়ির প্রি অর্ডার করা হয়ে গিয়েছে। তবে এই গাড়ির পরিষেবা শুরু হতে হতে ২০২৫ সাল হয়ে যাবে বলে জানিয়েছে নির্মাতা সংস্থা।
তাদের দাবি, এই গাড়ির মাধ্যমে শুধু ভিড় এড়ানোই সহজ হবে না, সড়ক দুর্ঘটনার সম্ভাবনাও অনেকটা হ্রাস পাবে। এই গাড়িতে চড়তে খরচ পড়বে ৩ লক্ষ ডলার৷ যা ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় আড়াই কোটি টাকা। গাড়ি প্রস্তুতকারী সংস্থা আরও দাবি, ব্যক্তিগত গ্রাহক এবং কর্পোরেট গ্রাহক মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত তাঁরা ৪৪০টি উড়ন্ত গাড়ির অর্ডার পেয়েছেন৷
ক্যালিফোর্নিয়া ভিত্তিক সংস্থা আলেফ অ্যারোনটিক্সের তরফে একটি বিবৃতি জানানো হয়েছে, এই গাড়ি ১০০ শতাংশ বৈদ্যুতিন। উড়ন্ত গাড়িতে একসঙ্গে দু’জন চড়তে পারবেন৷ এই গাড়িগুলি শহর ও গ্রাম সর্বত্রই চলতে পারবে। এমনকী, যে কোনও জায়গা থেকেই টেক-অফ করতে পারবে। এর জন্য আলাদা পার্কিং লটেরও প্রয়োজন হবে না। সাধারণ গাড়িগুলির মতোই পার্কিং স্পেসে পার্ক করা যাবে। তবে গাড়িটি চালানোর জন্য চার্জ করতে হবে। একবার সম্পূর্ণ চার্জ করা হলে সড়ক পথে ৩২০ কিলোমিটার এবং উড়লে ১৭৭ কিলোমিটার পথ পাড় করবে৷ উড়ন্ত গাড়ির গতি থাকবে সর্বোচ্চ ২৫ মাইল প্রতি ঘণ্টা৷
তবে এই উড়ন্ত গাড়িতে আর কী কী ফিচার্স রয়েছে, কেবিন স্পেস কত কিংবা ওজন কত, সে সম্পর্কে সংস্থার তরফে কোনও তথ্য প্রকাশ করা হয়নি৷ আশা করা হচ্ছে আধুনিক এয়ারক্রাফটের মতোই ফিচার্স থাকবে এই গাড়িতে৷ দাবি করা হচ্ছে, আগামীদিনে গাড়ির বাজারে বিপ্লব আনতে চলেছে এই ফ্লায়িং কার।