প্রকৃতিই শ্রেষ্ঠ সম্পদ, আজ বিশ্ব প্রকৃতি সংরক্ষণ দিবস, জানুন ইতিহাস ও গুরুত্ব

প্রকৃতিই শ্রেষ্ঠ সম্পদ, আজ বিশ্ব প্রকৃতি সংরক্ষণ দিবস, জানুন ইতিহাস ও গুরুত্ব

8820bb55db3b270850aad74a4414f665

কলকাতা: প্রকৃতি ভাল থাকলে, তবেই গড়ে উঠবে স্বস্থ্যকর বিশ্ব৷ আর প্রকৃতিকে ভালো রাখার দায় আমাদের সকলের৷ আপনি, আমি প্রত্যেকে মিলে যদি নিজের কর্তব্য পালন করি, তাহলেই প্রকৃতিকে ভাল রাখা সম্ভব৷ আর পরিবেশ রক্ষার গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যেই ২৮ জুলাই বিশ্ব প্রকৃতি সংরক্ষণ দিবস পালন করা হয়। জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ এবং প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করাই এর উপলক্ষ।

জলবায়ু পরিবর্তন একটি বাস্তবিক সমস্যা৷ বিশ্ব উষ্ণায়ন গোটা বিশ্বকে এক কঠিন পরিস্থিতির মুখে দাঁড় করিয়েছে৷ এই অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে হলে প্রকৃতির সংরক্ষণ করতেই হবে৷ বেশ কিছু দেশ বায়ু ও জল দূষণ, মাটি দূষণ, খরা, বন্যা, বন্যপ্রাণীর বিলুপ্তি এবং প্রাকৃতিক সম্পদ হ্রাসের জেরে ভয়ঙ্কর পরিণতির সম্মুখীন৷ বিশ্ব প্রকৃতি সংরক্ষণ দিবসের মূল লক্ষ্য হল বিলুপ্তির পথে থাকা উদ্ভিদ ও প্রাণীর সংরক্ষণ৷ পরিবেশকে বৃহত্তরভাবে বাঁচাতে যে ব্যক্তিগত পদক্ষেপও করা যেতে পারে তার উপর আলোকপাত করাও এই দিনটির অন্যতম লক্ষ্য।

মানবজাতির কার্যকলাপ, প্রাকৃতিক সম্পদের উপর বিধ্বংসী প্রভাব ফেলেছে। শিল্পায়নের জোয়ার আর ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা বৃদ্ধি বনের আচ্ছাদন সরিয়ে ফেলেছে৷ যা জলবায়ু পরিবর্তন এবং পরিবেশের ভারসাম্যকে প্রভাবিত করেছে। সাম্প্রতিক সময়ে, পরিবেশ সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। বিশ্ব প্রকৃতি সংরক্ষণ দিবসের উৎপত্তির নির্দিষ্ট তারিখ বা বছর সম্পর্কে জানা না গেলেও, বিশ্বের বহু দেশই এই দিবসটি পালন করে আসছে। এই দিবসটির উদ্দেশ্য হল সুস্থ জীবনযাপনের বার্তা পৌঁছে দেওয়া এবং বিশ্বব্যাপী সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া৷ 

প্রতি বছর বিশ্ব প্রকৃতি সংরক্ষণ দিবসের জন্য একটি নতুন থিম বেছে নেওয়া হয়। তবে, বিশ্ব প্রকৃতি সংরক্ষণ দিবস ২০২৩-এর থিম এখনও জানা যায়নি। তবে এই দিনটিতে সরকার, সামাজিক সংস্থা, এনজিও এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি প্রকৃতির গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে বেশ কিছু অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। ব্যক্তিগত পর্যায়ে ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা থেকে শুরু করে সরকারি পর্যায়ে নীতি বাস্তবায়ন, প্রতিটি ছোট পদক্ষেপ একটি সুস্থ জীবনের পথ গড়ে তুলতে পারে৷ বর্তমান ও ভবিষ্যত প্রজন্মের সুস্থতা নিশ্চিত করা যেমন আমাদের কর্তব্য তেমনি সুন্দর পৃথিবী গড়ার লক্ষ্যেও আমাদের কাজ করে যাওয়া উচিত। বেশ কিছু অভ্যাস আমাদের প্রকৃতিকে সুস্থ করে তুলতে পারে৷ 

প্রকৃতিকে ভাল রাখতে সবার আগে আমাদের প্লাস্টিক বর্জন করা উচিত৷ প্লাস্টিক ব্যবহারের অভ্যাস বদলাতে না পারলে, আমাদের প্রকৃতি কিছুতেই ভাল থাকতে পারবে না। সমুদ্র, নদীনালা থেকে রাস্তাঘাট- যত্রতত্র প্লাস্টিকের ব্যবহার বর্জন করতে না পারলে শুধুমাত্র শ্বাসকষ্টের কারণে এই ধরিত্রীর বুকে থেকে আগামী দিনে মানব সভ্যতা লোপ পেতে পারে৷ প্লাস্টিকের দেদার ব্যবহারের ফলে ইতিমধ্যেই সমুদ্রের নীচের প্রাণিদের জীবন বিপন্ন হতে চলেছে৷ 

প্রকৃতিকে ধ্বংসের মুখ থেকে বাঁচাতে কৃষিজমিতে দেদার রাসায়নিক ব্যবহার বন্ধ করা প্রয়োজন। এতে মাটি, জল ও মানুষের শরীর-এক সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। মানুষের শরীরে বাসা বাঁধছে নানান জটিল অসুখ। তাই খাদ্যাভাসে বদল আনাটা অত্যন্ত জরুরি৷ 

বিদ্যুত শক্তি বাঁচান। আপনার বাড়িতে এমন আলো জ্বালান যা কম বিদ্যুৎ খরচ করে। এক্ষেত্রে আপনি এলইডি বাল্বও ব্যবহার করতে পারেন। এতে বিদ্যুৎ খরচ কম হয়। আর আপনার এমন অভ্যাসের ফলে শুধু প্রকৃতিই ভাল থাকবে তা নয়। আপনার বিদ্যুতের খরচও কম হবে।

প্রতিদিনই আমাদের বাড়িতে সবজির খোসা, চা পাতা, মশালা সহ সমস্ত বর্জ্য পদার্থ ফেলে দেওয়া হয়। এইগুলি যত্রতত্র ফেলে না দিয়ে বাগানে বা নতুন গাছ লাগিয়ে তাতে সার হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।

প্রকৃতিকে ভাল রাখতে বৃক্ষরোপণ অত্যন্ত জরুরি। বাড়ির সামনে জমিতে থাকলে তাতে অন্তত একটি গাছ লাগান। প্রকৃতিকে ভাল রাখতে গেলে সত্যিই আমাদের গাছের যত্ন নিতে হবে৷ সেই সঙ্গে আশেপাশের পশুপাখিদেরও খেয়াল রাখা উচিত৷

বাড়ির অকেজো জিনিসগুলো এদিক ওদিকে ছুঁড়ে না ফেলে তা দিয়ে ঘর বাড়ি সাজিয়ে ফেলুন। যেমন ধরুন একটা ভাঙা জলের বোতল রয়েছে। সেগুলোর গায়ে ডিজাইন করে গাছ লাগান। দেখতেও ভালো লাগবে। প্রকৃতিও ভাল থাকবে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *