বেঙ্গালুরু: ‘নারীকে আপন ভাগ্য জয় করিবার কেন নাহি দিবে অধিকার?’
পরিসরটা এখনও খুব একটা বিস্তৃত না হলেও, এই একবিংশ শতাব্দীতে আপন ভাগ্য জয় করার পথে অনেকটাই হেঁটেছে নারীরা৷ করণিক থেকে কর্পোরেট, টোটো থেকে বিমান- বহু ক্ষেত্রেই স্টিয়ারিং হাতে নিয়েছে তাঁরা৷ প্রমীলা ব্রিগেডের সেই সাফল্যের মুকুটে নতুন পালক কর্নাটক পুলিশের গরুড় কম্যান্ডো বাহিনীতে পা রাখা৷ প্রথম মহিলা কম্যান্ডো ব্যাচ হিসেবে ইতিহাস সৃষ্টি করে সন্ত্রাসদমন বাহিনীতে জায়গা করে নেবেন সপ্তদশ তরুণী৷
এক ঝলকে দেখলে, ক্যাম্পে একদল কম্যান্ডোর রোজকার প্রশিক্ষণ, কঠোর অনুশীলন নেহাতই রুটিন বিষয়৷ কিন্তু তা দেখেই চোখ কপালে ওঠে, যখন ভালো করে ঠাহর করা যায় যে, সেই দলে রয়েছেন ১৭ জন মহিলা ৷ বারো ঘণ্টার হাড়ভাঙা খাটুনিতে বন্দুক-গ্রেনেড-আইইডির ব্যবহার শেখা কিংবা খাড়াই পাহাড় বেয়ে ওঠা বা দড়ির ওপর দিয়ে হাঁটা- কোনও কিছু দেখেই পুরুষদের থেকে আলাদা করা যায় না কর্নাটকের বিভিন্ন গ্রামের গরিব পরিবার থেকে উঠে এসে রাজ্য পুলিশের প্রথম মহিলা গরুড় কম্যান্ডো বাহিনীতে নাম লেখানো ওই ১৭ নবনিযুক্তকে৷ ইন্টারনাল সিকিউরিটি ডিভিশনের সেন্টার ফর কাউন্টার টেররিজমের একমাত্র মহিলা সুপার মধুরা বীণা জানিয়েছেন, ‘এঁদের নিয়ে প্রথম সম্পূর্ণ মহিলা কম্যান্ডো টিম গড়ে তোলা হবে এবং যে কোন ধরনের সন্ত্রাসবাদী হামলার মোকাবিলায় বা সন্ত্রাসে আক্রান্তদের রক্ষার জন্য প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন তাঁরা৷’ দু’মাসের প্রশিক্ষণের পর একটা লিখিত পরীক্ষায় বসতে হবে ওই তরুণীদের৷ তার পরই বাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করা হবে তাঁদের৷ উল্লেখ্য, রাজ্যের বিশেষ অপারেশনাল টিম গরুড় ২০১০ সালে তৈরি হলেও, এই প্রথম বাহিনীতে নিয়োগ করার জন্য ৫0 জন মহিলাকে প্রশিক্ষণ দেবে পুলিশ বিভাগ৷
কর্নাটক রাজ্য শিল্প সুরক্ষা বাহিনীর কনস্টেবল উমাশ্রী বললেন, ‘দু’মাস আগে একই বাহিনীর পুরুষদের সঙ্গে যে দু’জন মহিলা প্রথম প্রশিক্ষণ নেওয়া শুরু করেছিল, আমি তার মধ্যে একজন৷ কে পুরুষ, কে মহিলা, তা জরুরি পরিস্থিতির সময় বিবেচনার বিষয় নয়৷’ কালাবুরাগি গ্রামের কৃষকের মেয়ে রিজওয়ানা সবসময় স্বপ্ন দেখতেন পুলিশ বাহিনীতে যোগ দেবেন৷ আজ উর্দিতে তারা দেখে উচ্ছ্বসিত রিজওয়ানার বক্তব্য, ‘আমি জানি, আমি আরও বড় হব৷ তার জন্য আমি প্রশিক্ষণ চালিয়ে যাব৷’ রিজওয়ানারা যে সেই নারীদের প্রতিনিধি, যাঁরা নিজেদের ভাগ্য লেখেন নিজের হাতেই৷