জোহানেসবার্গ: ২১৬ দিন ধরে এক মহিলার শরীরে করোনা ভাইরাসের উপস্থিতির কথা জানা গেল৷ তাও আবার ওই মহিলা এইচআইভি পজিটিভ৷ যদিও তিনি এদেশের বাসিন্দা নন৷ সম্প্রতি এই মহিলার কথা জানিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার গবেষকরা৷ শুধু যে ২১৬ দিন ধরে তিনি করোনা আক্রান্ত ছিলেন তাই নয়, ওই সময়ের মধ্যে ভাইরাস ৩০ বারের বেশি নিজের চরিত্র বদলেছে বা মিউটেশন ঘটিয়েছে। গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে করোনা নামক মারণ ব্যাধি গোটা দুনিয়াকে নাড়িয়ে দিলেও, এমন ঘটনা এর আগে চোখে পড়েনি গবেষকদের। সেজন্য এহেন ঘটনায় বিশ্বজুড়ে গবেষক ও বিশেষজ্ঞরা চিন্তিত৷
মেডিক্যাল জার্নাল ‘মেডআরএক্সআইভি’-তে বৃহস্পতিবার প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে ওই মহিলার এমন রোগের কথা উল্লেখ করা হয়েছে৷ সেখান থেকেই জানা গিয়েছে, ২০০৬ সালে তাঁর শরীরে প্রথম এইচআইভি বাসা বাঁধে৷ সেই থেকে তাঁর শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ক্রমশই কমতে থাকে৷ ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হন। তারপর থেকে তাঁর শরীরে ১৩ বার ভাইরাসের স্পাইক প্রোটিন মিউটেশন ঘটিয়েছে। এখানেই শেষ নয়, আরও ১৯ রকমের জিনগত পরিবর্তনও হয়েছে ভাইরাসটির।
এর থেকেই স্পষ্ট যে ভাইরাসটি ৩০ বারেরও বেশি বার মিউটেশন ঘটিয়েছে ওই মহিলার শরীরে। তবে ওই মহিলার শরীর থেকে করোনা আরও কারও দেহেও সংক্রমিত হয়েছে কিনা, তা এখনও সঠিকভাবে জানা যায়নি। বিশেষজ্ঞদের মতে, অন্য কোনও ব্যক্তির তুলনায় কেউ এইচআইভি পজিটিভ রোগী করোনা আক্রান্ত হলে, তাঁর মারা যাওয়ার সম্ভাবনা ২.৭৫ গুণ বেশি থাকে। যদিও এই আক্রান্ত মহিলার জীবনী শক্তি রয়েছে। তাঁর শরীরে দক্ষিণ আফ্রিকা কিংবা ব্রিটেনের করোনার প্রজাতিগুলি সন্ধান মিলেছে৷ এই ঘটনা সামনে আসার পর স্বভাবতই বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এই ধরনের কেস থেকে কোভিড-১৯-এর মিউটেশনের ক্ষমতা সম্পর্কে আরও নতুন তথ্য পাওয়া সম্ভব হবে৷