moon
নয়াদিল্লি: পৃথিবীর একমাত্র আত্মজা চাঁদ৷ ছোট থেকে বুড়ো, চাঁদের বাড়ি নিয়ে কমবেশি আগ্রহ সকলেরই৷ কেমন দেখতে চাঁদের আকাশ৷ চাঁদের মাটিই বা কেমন৷ এক কথায়, চাঁদের দুনিয়া নিয়ে বিস্তর আগ্রহ রয়েছে৷ সেই সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই ১৯৬৯ থেকে ১৯৭২ সালের মধ্যে চাঁদের মাটিতে একের পর এক অভিযান চালিয়েছে মার্কিন মহাকাশচারীরা। তাহলে নতুন কোন তথ্যের খোঁজে চাঁদের ঘুটঘুটে অন্ধকার মেরুতে চন্দ্রযান পাঠাল ভারত? বিজ্ঞানীরা কিন্তু বলছেন অন্য কথা৷ তাঁদের মনে, এখনও পর্যন্ত পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহকে ভালো করে চিনেই উঠতে পারেনি তাঁদের। চাঁদের মাটিতে শুধু জল বা খনিজের সন্ধান নয়, আরও অনেক কিছু অপেক্ষা করে আছে৷ ভবিষ্যতে এই চাঁদই হয়ে উঠবে মহাকাশ গবেষণার মূল কেন্দ্র। সম্ভবত এখানেই গড়ে উঠবে আগামী দিনের লঞ্চিং প্যাড। যেখান থেকে খুব সহজে পাড়ি দেওয়া যাবে মঙ্গল কিংবা শুক্রে৷ ঠিক সেই কারণেই তো নতুন করে চন্দ্রাভিমুখী হয়ে উঠেছে নানা দেশ। তবে দক্ষিণ মেরু জয়ের প্রথম নজির ঝুলিলে পুড়েছে ভারতই৷
মনে রাখতে হবে, ২০০৮ সালে ভারতই কিন্তু প্রথমবার নিশ্চিতভাবে বলেছিল, চাঁদের মাটিতে একসময় বইত জলধারা৷ সেই তথ্য জানার পর থেকেই আরও বেশি করে চন্দ্রজয়ে আগ্রহী হয়ে ওঠে চিন, ইজরায়েল, জাপানের মতো দেশগুলি। এমতাবস্থায় আমেরিকা এবং রাশিয়াও নতুন করে চাঁদকে নিয়ে উঠে পড়ে লাগে৷ শুরু করে গবেষণার পরিকল্পনা৷ ইসরোর এক বিজ্ঞানীর কথায়, চাঁদ নিয়ে গত শতাব্দীতে অনেক বেশি রাজনৈতিক রেষারেষি এবং শক্তি প্রদর্শন হয়েছে, গবেষণার ততটা হয়নি। এখন ভারতের পথে হেঁটে গবেষণার পথে হাঁটতে চাইছে বাকি দেশগুলিও। তবে শুধুই কি গবেষণা? নাকি আড়ালে লুকিয়ে অন্য কোনও উদ্দেশ্য?
ইসরোর ওই বিজ্ঞানীর দাবি,বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলির মধ্যে চাঁদের মাটি দখল নিয়ে শুরু হয়েছে ঠান্ডা লড়াই৷ কারণ, এটা বেশ স্পষ্ট যে, পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ প্রযুক্তির প্রয়োগেও মঙ্গল কিংবা সৌরলোকের অন্য কোনও গ্রহ অথবা এর চেয়েও দূরের কোনও লক্ষ্যে যাওয়াটা বেশ কঠিন। সেক্ষেত্রে চাঁদের মাটিকে ব্যবহার করা গেলে, তুলনামূলক ভাবে একাজ অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে। কিন্তু, এর জন্য আরও গভীরে গবেষণা প্রয়োজন। তাই চন্দ্রাভিযানের হুড়োহুড়ি পড়েছে৷
জলের খোঁজ তো চলবেই, এর পাশাপাশি চাঁদে কী কী খনিজ পদার্থ রয়েছে, সেটা জানাটাও মহাকাশবিজ্ঞানীদের অন্যতম লক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেটা জানা সম্ভব হলে চাঁদই হয়ে উঠবে নয়া লঞ্চিং প্যাড। তবে, বিষয়টা এতটা সহজ নয় বলেও উল্লেখ করেছেন ইসরোর ওই বিজ্ঞানী। তিনি জানান, চাঁদের মাটিতে প্রধানত দু’টি জিনিসের সন্ধানে তৎপর বিজ্ঞানীরা। প্রথমত, উপযুক্ত খনিজ৷ যা দিয়ে রকেট বানানো সম্ভব। এবং দ্বিতীয়ত, সেই রকেটের জন্য পর্যাপ্ত জ্বালানি। সেটা মিলে গেলেই পরবর্তী মিশন হবে চাঁদে এআই নির্ভর রোবট পাঠানো। তারাই সেখানে বসে বানাবে রকেট৷ তবে সে সব এখন অনেক দূর৷