নিয়োগ দুর্নীতিতে ইডির নজরে আরও এক ‘রহস্যময়ী’! অয়ন ‘ঘনিষ্ঠ’ শ্বেতা চক্রবর্তী কে?

নিয়োগ দুর্নীতিতে ইডির নজরে আরও এক ‘রহস্যময়ী’! অয়ন ‘ঘনিষ্ঠ’ শ্বেতা চক্রবর্তী কে?

c7d6bbbe0f9d20772ef624db1c14c596

কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতির পরতে পরতে রহস্যময়ীর যোগ৷ শান্তনু ঘনিষ্ঠ প্রোমোটার অয়ন শীল গ্রেফতার হতেই উঠে এল আরও এক নারীর নাম৷ কুন্তল, শান্তনুর পর এবার অয়ন শীলেরও একাধিক সুন্দরী বান্ধবীর সন্ধান পেলেন ইডি-র গোয়েন্দারা৷ তাঁদের মধ্যে যে নামটি সবচেয়ে বেশি উঠে আসছে, তিনি হলেন শ্বেতা চক্রবর্তী৷ প্রোমোটার অয়নের এই বিশেষ বান্ধবীর একাধিক তথ্য গোয়েন্দাদের হাতে এসেছে৷ উদ্ধার হয়েছে শ্বেতার গাড়ির নম্বর ও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের নথি৷  সূত্রের খবর, শ্বেতাকে এসএইভি গাড়ি উপহার দিয়েছিলেন অয়ন।

আরও পড়ুন- ন্যূনতম আবেদন ফর্ম না ভরেও পুরসভায় চাকরি, নেপথ্যে অয়ন! বিস্ফোরক দাবি

ইডি সূত্রে দাবি, সল্টলেকে তল্লাশি অভিযান শুরুর আগেই অয়নের সঙ্গে কথা হয়েছিল শ্বেতার৷ তিনি অয়নকে সতর্ক করে মেসেজও করেছিলেন। মেসেজে অয়নকে বলা হয়, ‘পালিয়ে যাও৷’ অয়নের সল্টলেকের অফিস থেকে যে সকল নথি মিলেছে তাতে শ্বেতার নাম জ্বলজ্বল করছে৷ তাঁর নামে থাকা অ্যাকাউন্ট থেকে লক্ষ লক্ষ টাকার লেনদেন হয়েছে৷ কোন সূত্রে তাঁর ব্যাঙ্কের নথি অয়নের অফিসে, তা খতিয়ে দেখছে ইডি৷ 

মডেল হিসাবে শ্বেতা টলিপাড়ার পরিচিত মুখ। সিনেমা এবং টেলিফিল্মেও কাজ করেছেন। জানা গিয়েছে, শ্বেতার বাড়ি নৈহাটির বিজয় নগরে। ২০১৭ সাল থেকে অয়ন শীলের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে তাঁর। অয়ন শীলের স্ত্রীর মাধ্যমেই নাকি এই মডেলের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছিল তাঁদের। পরে শান্তনু ‘ঘনিষ্ঠ’ অয়ন শীলের প্রোমোটিংয়ের ব্যবসার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হন শ্বেতা। অয়নের গ্রেফতারির পর এখন ইডির নজরে রয়েছে তিনিও।

মডেলিংয়ের পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে কামারহাটি পৌরসভার সিভিল ইঞ্জিনিয়ার বিভাগেও চাকরি করেছেন শ্বেতা৷ এই টাকা সেই চাকরিরই সঞ্চয় বলে দাবি করেছেন তাঁর বাবা৷ এদিকে, অয়ন শীলের বাড়ি থেকে যে সমস্ত নথি উদ্ধার করেছেন ইডি-র আধিকারিকরা তাতে পুরসভায় নিয়োগ দুর্নীতির যোগ স্পষ্ট৷ তেমনটাই দাবি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার। ওই নথি থেকেও প্রথম শ্বেতা চক্রবর্তীর সূত্র খুঁজে পান গোয়েন্দারা৷  জানা যায়, অয়নের প্রযোজনা সংস্থার ছবিতেও অভিনয় করার কথা ছিল শ্বেতা চক্রবর্তী নামের এক অভিনেত্রীর। 

নিয়োগ দুর্নীতিতে শ্বেতার নাম জড়াতে হতবাক পাড়াপড়শিরাও৷ তাঁদের কথায়, এমনিতে শান্তশিষ্ট স্বভাবের মেয়ে শ্বেতা৷ তবে উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপন করতেন৷ নিয়োগ দুর্নীতিতে ওঁর নাম থাকবে, তা কোনও দিন কল্পনাও করতে পারিনি৷ 

প্রসঙ্গত, অয়নের সল্টলেকের অফিসে তল্লাশি চালিয়েও একটি ম্যাকবুক, একটা কম্পিউটার-সহ একাধিক সামগ্রী উদ্ধার করা হয়েছে। যেগুলির মধ্যে রয়েছে চাকরিপ্রার্থীদের নামের তালিকা৷ রবিবার প্রায় টানা ৩৭ ঘণ্টা তল্লাশির পর অয়নকে গ্রেফতার করে ইডি৷ অভিযোগ, তাঁর কাছ থেকে নিয়োগ পরীক্ষার ওএমআর শিট ছাড়াও উদ্ধার করা হয়েছে বেশ কিছু অ্যাডমিট কার্ড এবং অন্যান্য নথিও। ইডি সূত্রে দাবি, অয়নের কাছ থেকে যে সব ওএমআর শিটের প্রতিলিপি উদ্ধার হয়েছে, সেগুলি পুরসভায় নিয়োগ সংক্রান্ত পরীক্ষার।  ২০১২ এবং ২০১৪ সালের চাকরির পরীক্ষার অ্যাডমিট কার্ডও অয়নের বাড়িতে খুঁজে পেয়েছেন ইডি আধিকারিকেরা।