chief scientist
কলকাতা: ফের বিষ দাঁত দেখাতে শুরু করেছে করোনা৷ মারণ ছোবলে যাচ্ছে প্রাণ৷ শীতের মরশুমে আরও একবার ভাইরাসের বাড়বাড়ন্ত৷ এই অবস্থায় কোভিডকে সাধারণ সর্দিকাশি ভাবে নেওয়াটা একেবারেই সঠিক হবে না। এর দীর্ঘকালীন প্রভাব পড়তে পারে শরীরের উপর। সতর্ক করে দিলেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র প্রাক্তন প্রধান বিজ্ঞানী সৌম্যা স্বামীনাথন।
কোভিডের দাপট থেকে কিছুটা রেহাই পেয়েছিল বিশ্ববাসী৷ ভয়বহ স্মৃতি ভুলিয়ে মানুষের জীবনে ফিরেছিল স্বাভাবিক ছন্দ৷ কিন্তু কোভিড যে সম্পূর্ণভাবে বিদায় নেয়নি, সে কথা বারে বারেই আমাদের স্মরণ করিয়ে আসছেন বিশেষজ্ঞরা৷ হাতেনাতে মিলল তাঁদের ভবিষ্যৎবাণী৷ আরও একবার ফুঁসে উঠল কোভিড-১৯ এর ভাইরাস৷ তবে কি ফের মেনে চলতে হবে কোভিড বিধি? সে বিষয়েও নিজের মতামত জানিয়েছেন সৌম্যা।
সম্প্রতি একটি সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকারে হু-র প্রাক্তন প্রধান বিজ্ঞানী সৌম্যা জানান, এই মুহূর্তে কোভিডকে হালকা ভাবে নেওয়াটা একেবারেই ঠিক নয়। করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক, মানসিক সমস্যা প্রবণতা বৃদ্ধির সম্ভাবনা দেখা যেতে পারে।
পাশাপাশি সৌম্যা এ-ও বলেন, ২০২০ সালে কোভিডের প্রথম ঢেউ আছড়ে পড়ে৷ ২০২১ সালে আক্রমণ হানে ডেল্টা৷ এই দুই তরঙ্গের মোকাবিলায় দেশে চিকিৎসা পরিকাঠামো অনেকটাই উন্নত হয়েছে। ফের যদি অতিমারির বেপরোয়া কোনও ঢেউ ঢেয়ে আসে, তাহলে অনায়াসেই তা সামলে নিতে পারবে ভারত৷ তবে কোনও ভাবেই কোভিডকে হালকা চালে নেওয়া উচিত হবে না৷ সতর্কবাণী সৌম্যার। তাঁর মতে, কোভিডের হাত থেকে বাঁচতে নাগরিকদের সচেতন হতে হবে। বয়স্ক মানুষজন এবং যাঁদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, তাঁদের মাস্ক পরার অনুরোধ জানিয়েছে হু-র বিজ্ঞানী।
দেশে আচমকাই বাড়তে শুরু করেছে কোভিডের সংক্রমণ। বেশ কয়েকটি রাজ্য ইতিমধ্যেই মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করেছে। ফের একবার তাড়া করতে শুরু করেছে ভয়াবহ সেই স্মৃতি। এবার আতঙ্কের নাম জেএন.১৷ এটি করোনা ভাইরাসের নতুন উপরূপ৷ এর কারণেই লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমণ। তবে হু বলছে, নতুন এই উপরূপ যে খুব মারাত্মক হতে চলেছে,এখনও তা বলা যাচ্ছে না৷ কারণ, এর স্বপক্ষে যথেষ্ট প্রমাণ মেলেনি।
আমাদের দেশে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা এখন কেরলে৷ সে রাজ্যে করোনার গ্রাফ উর্ধ্বমুখী৷ কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে সক্রিয় কোভিড রোগীর সংখ্যা ২,৬৬৯। বুধবার দেশে নতুন করে কোভিড সংক্রমিত হয়েছেন ৬১৪ জন। গত মে মাস থেকে দেশে এক দিনে এত জন সংক্রামিত এই প্রথম৷ এই সংক্রমণের নেপথ্যে ভিলেন চরিত্র করোনা ভাইরাসের সেই নতুন উপরূপ জেএন.১৷
উত্তর গোলার্ধে এখন শীতকাল। সেই কারণেই জেএন.১-এর প্রভাবে শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যা বাড়তে পারে বলে জানাচ্ছে হু। বহু মানুষকেই এই সমস্যায় ভুগতে হতে পারে বলেও সতর্ক করা হয়েছে। কিন্তু সৌম্যা বিষয়টিকে ততটাও হালকা ভাবে নিতে নারাজ। তিনি বার বার সতর্ক করে বলেছেন, কোভিডকে সাধারণ সর্দিকাশি ভাবা একেবারেই ঠিক নয়। যদিও সৌম্যা বলেন, ‘জেএন.১ হল ওমিক্রনেরই একটি উপরূপ। তাই আশা করা যায়, ওমিক্রনের মতোই এটি কাজ করবে৷ যা কিনা এতটা ভয়ঙ্কর নয়৷’’