আন্দোলনের ভরকেন্দ্র হয়ে ওঠা রাজধানী থেকে শেষ পর্যন্ত ফায়দা তুলবে কারা? কোন পথে বঙ্গ রাজনীতি?

আন্দোলনের ভরকেন্দ্র হয়ে ওঠা রাজধানী থেকে শেষ পর্যন্ত ফায়দা তুলবে কারা? কোন পথে বঙ্গ রাজনীতি?

নিজস্ব প্রতিনিধি: কোন পথে বঙ্গ রাজনীতি? এটাই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হয়ে উঠেছে। হঠাৎই রাজধানী দিল্লি আন্দোলনের ভরকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। তৃণমূল ও বিজেপি যুযুধান দু’পক্ষই দিল্লিতে নিজেদের মতো করে ন্যারেটিভ তৈরি করছে। উল্লেখ্য বাংলার বকেয়া টাকা কেন্দ্রীয় সরকার দিচ্ছে না, এই অভিযোগ তুলে বকেয়া টাকা অবিলম্বে পাওয়ার দাবিতে সোম ও মঙ্গলবার দু’দিন ‘দিল্লি চলো’র ডাক দিয়েছে তৃণমূল।

 

সোমবার তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে দলের সমস্ত সাংসদ ও রাজ্যের নেতা-মন্ত্রীরা মহাত্মা গান্ধীর সমাধিক্ষেত্র রাজঘাটে ধর্নায় বসেছেন। তাঁদের হাতে রয়েছে প্ল্যাকার্ড। যাতে লেখা অবিলম্বে রাজ্যের বকেয়া টাকা মিটিয়ে দেওয়া হোক। অন্যদিকে রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার দিল্লির বুকে সাংবাদিক সম্মেলন করে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লাগামছাড়া দুর্নীতির অভিযোগ করেছেন। সুকান্তের অভিযোগ, তৃণমূলের সীমাহীন দুর্নীতির কারণেই কিছু ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গের বকেয়া টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্র। এখানেই শেষ নয়, বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ এদিনই দিল্লি পৌঁছে তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে রাজঘাটে শান্তিপূর্ণ অবস্থান বিক্ষোভ করেছেন। অর্থাৎ পশ্চিমবঙ্গের দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করলে দেখা যাচ্ছে রাজধানী দিল্লি আন্দোলনের ভরকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।

 

এর পাশাপাশি কলকাতাতেও বিধানসভায় বিজেপির বিধায়করা তৃণমূলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে অবস্থান বিক্ষোভে বসেন। গোটা ঘটনা বিশ্লেষণ করলে দেখা যাচ্ছে তৃণমূল যেখানে বকেয়ার বিরুদ্ধে সরব হয়েছে, বিজেপি সেখানে তৃণমূলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অস্ত্রকে হাতিয়ার করেই বাজিমাত করতে চাইছে। কিন্তু এসবে রাতারাতি বাংলার মানুষের কতটা উপকার হবে সেটা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

 

সদ্য নবান্ন সূত্রে খবর পাওয়া গিয়েছে, ক্লাব সংগঠনগুলিকে রাজ্য সরকার আর আর্থিক অনুদান দেবে না। অনুদানের টাকা পাওয়ার পর তার খরচ  সংক্রান্ত হিসেব অধিকাংশ ক্লাব দিতে পারেনি বলেই এই কড়া পদক্ষেপ করছে রাজ্য। আর সেই বিষয়টিকে হাতিয়ার করেই রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার দাবি করেছেন, পশ্চিমবঙ্গ টাকার হিসেব দিতে পারছে না বলেই কিছু ক্ষেত্রে তাদের বকেয়া টাকা আটকে রাখা হয়েছে। এই অবস্থায় একটাই প্রশ্ন তুলছে রাজ্যবাসী, তৃণমূল-বিজেপির এই রাজনৈতিক চাপানউতোর কবে বন্ধ হবে? রাজ্য ও কেন্দ্র, দুটি ক্ষেত্রেই যে সমস্ত প্রকল্প আছে সেগুলির নিরবচ্ছিন্ন সুবিধা কবে থেকে পাবেন বাংলার মানুষ? এর উত্তর কিন্তু কারও জানা নেই। লোকসভা নির্বাচনের আর বেশি দেরি নেই। তার আগে কী রাজ্যের উন্নয়নের স্বার্থে চাপানউতোর বন্ধ হবে? এর উত্তর খুঁজছেন সবাই। দিল্লিতে যা চলছে তার পিছনে রাজনৈতিক স্বার্থই প্রধান হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে রাজনীতির কারবারিদের একাংশ মনে করছেন। আর এই রাজনীতির জন্যেই তৃণমূল ও বিজেপি কেউ কাউকে যেন এক ইঞ্চিও জমি ছাড়তে রাজি নয়, এমন প্রেক্ষাপট অত্যন্ত স্পষ্ট। এর শেষ কোথায় সেটাই এখন দেখার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *