ইমিউনিটি বাড়াতে কোন বয়সের বাচ্চাকে কী খাওয়ানো উচিত? দেখে নিন..

ইমিউনিটি বাড়াতে কোন বয়সের বাচ্চাকে কী খাওয়ানো উচিত? দেখে নিন..

6c6ff9b071744f3c0a2928fcc08f399c

 কলকাতা:  জন্মের পর থেকে শিশুর বৃদ্ধি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়৷ সন্তানের পুষ্টির অভাব হলে বৃদ্ধিও বাধাপ্রাপ্ত হয়৷ তাঁই প্রথম থেকেই সন্তানের পুষ্টি ও সুস্থতার উপর নজর দিতে হয় অভিভাবককে। এখন জানা দরকার  কোন বয়সের বাচ্চাকে কী ধরনের খাদ্য দেওয়া দরকার?

আরও পড়ুন- গরম, হঠাৎ বৃষ্টি, হালকা ঠান্ডাভাব! অন্য ভাইরাসের দাপট বাড়ছে

০-৬ মাস: প্রথম ৬ মাস শিশুকে শুধুমাত্র মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানোই উচিত৷ কারণ ব্রেস্ট মিল্ক-এ থাকে ইমিউনোগ্লোবিউলিন, অ্যান্টিবডি যা প্রাথমিক টিকার কাজ করে। এছাড়া মাতৃদুগ্ধে রয়েছে প্রোটিন, ভিটামিন, খনিজ, ইপিএ, ডিএইচএ-এর মতো পুষ্টিকর উপাদান।

৬-১২ মাস: বাচ্চার বয়স ছ’মাস পেরলেই ধীরে ধীরে তাকে মাতৃদুগ্ধ পান করার অভ্যাস কমিয়ে আনতে হবে৷ বদলে অল্প অল্প করে বিভিন্ন ধরনের খাবার দেওয়া শুরু করতে হবে৷ শুরুর দিকে জলে গুলে পাতলা করে সাপ্লিমেন্ট ফুড খাওয়ানো যেতেই পারে। এছাড়া ফলের রসের সঙ্গে জল মিশিয়ে পাতলা করেও পান করানোটাও শিশুর জন্য খুবই উপকারী৷ বাচ্চা যখন তরল খাদ্য হজম করতে শিখে যাবে, তখন তাকে দিন সুজি, পোরিজ পেস্ট৷ এছাড়াও আলু, গাজর ইত্যাদি ডালে ফেলে সেদ্ধ করে তার সঙ্গে ভাত মিশিয়ে ভালো করে চটকে খাওয়াতে পারেন। ফলের মধ্যে কলা শিশুদের জন্য খুবই উপকারী। অনেকে আপেল সেদ্ধ করেও খাওয়াতেও পছন্দ করেন৷ এভাবে কয়েক মাস অভ্যাসের পর শিশুকে দিন অর্ধেক ডিমের কুসুম। শিশুর বয়স ১ বছরের কাছাকাছি হলে ডিমের সাদা অংশ ও মাছ অল্প অল্প করে খাওয়ান। বাচ্চার দাঁত উঠার পর, তার পাতে এমন কোনও খাবার রাখুন যেটা সে  চিবাতে পারে৷ 

১-৩ এবং ৪-৬ বছর: আইসিএমআর-এর গাইডলাইন অনুযায়ী ১ থেকে ৩ বছরের একটি বাচ্চার গড়ে দৈনিক ১০৬০ কিলোক্যালোরির প্রয়োজন। গড়ে দৈনিক প্রোটিন প্রয়োজন ১৬.৭ গ্রাম। অবার ৪ থেকে ৬ বছর বয়সের শিশুদের ক্ষেত্রে গড় দৈনিক ক্যালোরির চাহিদা ১৩৫০ কিলোক্যালোরি। প্রোটিন প্রয়োজন ২০.১ গ্রাম। তাই এই বয়সের বাচ্চাদের পাতে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে রাখতে হবে মাছ, ডিম, সয়াবিন, বিভিন্ন ধরনের ডাল এবং দই। পারলে ডালের মধ্যে দিয়ে দিন পালং-এর কয়েকটা ছোট টুকরো। প্রতিদিন একটা করে মরশুমি ফল খাওয়ানোটা কিন্তু আবশ্যক। রোজ কয়েকটা বাদাম খাওয়াতে পারলে খুবই ভালো হয়। বিশেষত আমন্ড৷ শিশুর মধ্যে যদি কনস্টিপেশনের ধাত থাকে, তাহলে পর্যাপ্ত পরিমাণে জল খাওয়ান। দৈনিক তরলের চাহিদা পূরণ করতে ঘরে বানানো ফ্রুট জ্যুস, মিল্ক শেক দিতে পারেন আপনার খুদে সন্তানকে৷ 

৭-১২ বছর: ৭-৯ বছর বয়সি ছেলে-মেয়েদের দৈনিক ক্যালোরির চাহিদা ১৬৯০ কিলোক্যালোরি। প্রোটিনের চাহিদা ২৯.৫ গ্রাম। ১০ বছর পেরলেই ছেলেদের ক্যালোরির চাহিদা বেড়ে হয় ২১৯০ কিলোক্যালোরি। প্রোটিনের চাহিদা থাকে ৩৯.৯ গ্রাম। অন্যদিকে ১০ থেকে ১২ বছরের একটি মেয়ের দৈনিক ২০১০ কিলো ক্যালোরির প্রয়োজন হয়। প্রোটিনের চাহিদা পৌঁছয় ৪০.৪ গ্রামে। তবে শরীরের অস্থির কাঠামোর বৃদ্ধির জন্য ওদের ক্যালশিয়ামের চাহিদা এই সময় অনেকটাই বেড়ে যায়। আবার দেহে রক্তের মাত্রা বাড়ায় বৃদ্ধি পায় আয়রনের চাহিদাও। তাই এই বয়সে ক্যালশিয়ামের জন্য দুধ, ডিম খুবই জরুরি৷ পাশাপাশি ডায়েটে রাখতে হবে আয়রন সমৃদ্ধ ব্রকোলি, পালং, মাছের মতো খাবার। এই বয়সে বাচ্চাদের প্রাতঃরাশে অনীহা দেখা দেয়৷ তাই এই সময় ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ওদের দিন পোরিজ, দালিয়ার খিচুড়ি, চিকেন ও সব্জির পুর দিয়ে স্যান্ডুইচ প্রভৃতি। এতে যেমন পেট ভর্তি থাকবে, তেমন পুষ্টিও মিলবে৷। গ্রীষ্মে ডিহাইড্রেশন রুখতে খাওয়ান ফ্রুট জ্যুস, মিল্ক শেক ৷ প্রতিদিন পাতে দই রাখাটাও খুব জরুরি৷