কলকাতা: করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের পর যেভাবে হঠাৎ থমকে গিয়েছিল জনজীবন, তার রেশ কাটিয়ে উঠে এখনও অনেকটাই স্বাভাবিক হয়েছে চারপাশ। লকডাউন পরবর্তী আনলক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অর্থনীতির চাকা সচল করতে একের পর এক খুলে গেছে অফিস-আদালত-মন্দির, সবই। কিন্তু এ রাজ্যে একটা দিকে চোখ রাখলে এখনও অতিমারীর প্রভাব বেশ বোঝা যায়, তা হল শিক্ষাব্যবস্থা।
লকডাউনের পর সব কিছু খুলে গেলেও রাজ্যের শিশু-কিশোর সমাজের ভবিষ্যতকে এখনও পর্যন্ত ঝুঁকির মাঝে ঠেলে দেওয়া হয় নি। সমস্ত স্কুল কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়েই অফলাইন মাধ্যমে পঠনপাঠন বন্ধ রয়েছে। সরকারি বেসরকারি সব জায়গাতে এখনও অনলাইনেই চলছে পড়াশোনা। নতুন বছরের শুরুতে, যখন করোনা ভাইরাসের প্রতিষেধক ভ্যাকসিন প্রায় মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে গিয়েছে, তখন স্কুল কলেজ খোলার বিষয়েই অবশেষে মুখ খুলল রাজ্য সরকার।
রাজ্য সরকারের শিক্ষা দপ্তর এদিন রাজ্যের সমস্ত স্কুলগুলিকে স্বল্পকালীন নোটিশে পঠনপাঠন চালু করার জন্য তৈরি থাকার নির্দেশ দিয়েছে, এমনটাই জানা গেছে সূত্রের খবরে। তাহলে কি খুব শিগগিরই পুরোদমে স্কুল খুলে যাচ্ছে? জানা গেছে, মূলত উঁচু শ্রেণীর পড়ুয়া বিশেষ দশম এবং দ্বাদশ শ্রেণীর বোর্ড পরীক্ষায় যারা বসতে চলেছে তাদের জন্যেই রাজ্য সরকারের এই নোটিশ। ছোটোদের জন্য স্কুল খোলার কথা এখনি ভাবা হচ্ছে না।
স্কুল খোলার বিষয়ে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত এখনও গৃহীত হয় নি। রাজ্যের মুখ্য সচিবালয়েই এ নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। তবু স্কুল গুলিকে তৈরি থাকার নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা দপ্তর। এ ব্যাপারে রাজ্য সরকারের একজন সিনিয়র অফিসার জানিয়েছেন, “সরকারি স্কুল গুলিকে এমন ভাবে তৈরি থাকতে বলা হয়েছে এবং স্কুল চত্বর স্যানিটাইজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যাতে সরকারি নির্দেশিকা এলেই ল্যাবরেটরিতে প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস চালু করা যায়।”
প্রসঙ্গত, রাজ্য সরকারের উচ্চশিক্ষা বোর্ড (WBCHSE) এবং সিবিএসই (CBSE) বোর্ড আগামী মার্চ মাসেই প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষা আয়োজন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এমতাবস্থায়, ছাত্র ছাত্রীদের যথাযথ প্র্যাকটিক্যাল প্রশিক্ষণ দেওয়া এবং তাঁদের পাঠ্যসূচী সংক্রান্ত যাবতীয় দ্বিধা দূর করার জন্য শারীরিক ভাবে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হওয়া একান্ত জরুরি। সে বিষয়েই শীতকালীন ছুটির আগে থেকেই ব্যবস্থা করা শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে শিক্ষা দপ্তর। উল্লেখ্য, ইতিমধ্যে কেরালা, কর্ণাটক এবং আসামে স্কুল খুলে গিয়েছে৷