পুলিশে রাজনীতি, বাংলায় বাড়ছে জঙ্গি সংগঠন! নির্বাচন নিয়ে উদ্বিগ্ন রাজ্যপাল

পুলিশে রাজনীতি, বাংলায় বাড়ছে জঙ্গি সংগঠন! নির্বাচন নিয়ে উদ্বিগ্ন রাজ্যপাল

 নয়াদিল্লি: কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করে রাজ্যের সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। এদিন দু’দফায় অমিত শাহের কৃষ্ণমেনন মার্গের বাড়িতে যান রাজ্যপাল। প্রথমে বেলা দুপুর ১২.৩০টায় বৈঠকের কথা থাকলেও পরে তা ১২.৪৫ করা হয়। সেই মতো ১২.৩০টা নাাগাদ অমিত শাহের বাড়িতে উপস্থিত হন রাজ্যপাল। তবে তার ১০ মিনিট পর বেরিয়ে যান রাজ্যপাল। সেই সময় অন্য কাজে ব্যস্ত থাকায় সময় দিতে পারেননি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। পরে সন্ধ্যায় অমিত শাহের সঙ্গে রাজ্যপালের বৈঠক হয়৷ এদিনের বৈঠকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে রাজ্যের সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। দিন চারেক আগেই রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে আসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরেই ধনকরের দিল্লি যাত্রা স্বাভাবিকভাবেই জল্পনা তৈরি করে। গুঞ্জন শুরু হয়েছে একাধিক বিষয়ে, যার মধ্যে রয়েছে রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসনের গুনজনও৷ যদিও সেসব নিয়ে মুখ খোলেননি রাজ্যপাল।

বৈঠকের পর সাংবাদিক সম্মেলনে রাজ্য প্রশাসনের বিরুদ্ধে বিষোদগার করেন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান। তাঁর অভিযোগ, ‘‘রাজনৈতিক মদতে কাজ করছেন পুলিশ ও প্রশাসনিক কর্তারা।’’ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন অবাধ ও শান্তিপূর্ণ করতে প্রশাসনকে নিরপেক্ষ করার প্রয়োজন রয়েছে বলেও এদিন মত প্রকাশ করেন রাজ্যপাল ধনকর। ২০২১ সালকে বাংলায় নির্বাচনের বছর বলে একাধিকবার উল্লেখ করেন রাজ্যপাল। বাংলায় যেভাবে রক্তপাতের রাজনীতি শুরু হয়েছে, এবার সেই সংস্কৃতির পরিবর্তন করার সুযোগ রয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। এদিন রাজ্যপালের বক্তব্য জুড়ে ছিল নির্বাচন করানো। তিনি বলেন, ‘‘নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য দেশে সুন্দর ব্যবস্থা রয়েছে, ভারতীয় নির্বাচন কমিশন খুবই দক্ষ। তবে প্রত্যেক নাগরিকেরও ভূমিকা রয়েছে।’’

তাঁর কথায়, “রাজ্যের রাজ্যপাল হিসেবে আমার কাজ, সংবিধানের রক্ষা, মেনে চলা।  ১৫৯ নম্বর ধারা অনুয়ায়ী, আমার দায়িত্ব পশ্চিমবঙ্গের মানুষের জন্য কাজ করা।” প্রশাসনিক ক্ষেত্র রাজ্যের শাসকদলের অঙ্গুলিহেলনে চলছে বলে এদিন আবারও অভিযোগ করেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। বারবার এই অভিযোগ তুলে কেন্দ্রের দ্বারস্থ হয়ে কি কোনও লাভ হচ্ছে? তাতে কি সত্যিই কোনও কাজ হচ্ছে? রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর অবশ্য মনে করেন, তাঁর তৎপরতাতেই অনেক ক্ষেত্রে কাজ হয়েছে। তাঁর মতে, প্রশাসনের বেশিরভাগ আধিকারিকই স্বচ্ছভাবে কাজ করে থাকেন। শাসকদলের অনুগত হিসেবে কাজ করার প্রশাসনিক কর্তাব্যক্তির সংখ্যা নেহাত কম বলেই মনে করেন তিনি। এদিন তিনি তাঁর সরকারের পুলিশের বিরুদ্ধে রাজনীতির অভিযোগ তোলেন৷ রাজ্যপালের দাবি, ‘‘রাজ্যের সুরক্ষার পরিবেশ ঝুঁকির মুখে৷ আল কায়দা ছড়িয়ে পড়ছে৷ অবৈধভাবে বোমা তৈরি হচ্ছে৷ প্রতিদিন মৃত্যু হচ্ছে৷ আমি জানতে চাই তারা, রাজ্যে প্রশাসন কী করছে? রাজ্যে ডিজিপির অবস্থান জনগণের সামনে উন্মুক্ত৷ এ কারণেই আমি বলছি, পুলিশের মধ্যে রাজনীতি বিস্তার করছে৷’’

 

গত ডিসেম্বরে ১৬ তারিখে ডায়মন্ডহারবারে যান রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। এদিন ফের একবার সেই প্রসঙ্গ তুলে ধরে ডায়মন্ডহারাবারের তৃণমূল সাংসদের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন রাজ্যপাল। এদিন আবারও একবার বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার কনভয়ে হামলার প্রসঙ্গ তুলে ধরে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে খোঁচা দেন রাজ্যপাল। তাঁর অভিযোগ, সাংবিধানিক প্রটোকল মেনে চলেন না ডায়মন্ডহারবারের তৃণমূল সাংসদ।  রাজ্যে খুন সন্ত্রাস এবং প্রশাসনের রাজনীতিকরণ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। ২০২১ সালে এই সংস্কৃতির পরিবর্তনের ডাক দেন রাজ্যপাল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *