কলকাতা: মহার্ঘ ভাতা নিয়ে স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনালের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে দ্বারস্থ হল রাজ্য সরকার। তবে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা আদৌ মহার্ঘ ভাতা পাবেন কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে রাজ্য সরকারি কর্মচারী সংগঠনগুলি।
আগামী ৩ অথবা ৪ ডিসেম্বর হাইকোর্টে ডিএ সংক্রান্ত মামলার শুনানির সম্ভাবনা প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে। মামলার বয়ান অনুযায়ী আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য ও আইনজীবী ফিরদৌস শামীম জানান, ২০১৮ সালে কনফেডারেশন অফ স্টেট এমপ্লয়িজ পক্ষ থেকে স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনালে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা নিয়ে মামলা দায়ের করে। সেই মামলার শুনানি শেষে স্যাট জানিয়ে দিয়েছিল, মহার্ঘ ভাতা রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের অধিকার নয় , দয়ার দান। ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় কনফেডারেশন অফ স্টেট এমপ্লয়িজ। সেই মামলার শুনানিতে বিচারপতি দেবাশিস করগুপ্ত ডিভিশন বেঞ্চ রায় দিয়েছিলেন, রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ডিএ তাদের অধিকার। তবে কি হারে তারা ডিএ পাবেন তা ঠিক করবে স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইবুনাল।
বিচারপতি দেবাশিস করগুপ্ত রায়ের পুনর্বিবেচনা আর্জি জানায় রাজ্য সরকার। কিন্তু সেই আরজি খারিজ করে দেন বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন ও বিচারপতি শেখর ববি সরফের ডিভিশন বেঞ্চ। এরপর স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনালে ফের মামলা করে কনফেডারেশন অফ স্টেট এমপ্লয়িজ। স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইবুনাল গত ২৬ জুলাই ২০১৯ সালে রাজ্যের মুখ্যসচিবকে নির্দেশ দেন, কী হারে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা দেবেন, তা নীতি নির্ধারণ করতে। দ্বিতীয়ত, বকেয়া মহার্ঘ ভাতার টাকা কবে তারা দেবে তা ছয় মাসের মধ্যে কিংবা ষষ্ঠ বেতন কমিশন চালু হওয়ার আগে তা মিটিয়ে দিতে বলা হয়েছিল।
স্যাট রাজ্যকে নির্দেশ দিয়েছিল, কেন্দ্রীয় হারে দিতে হবে মহার্ঘ ভাতা। ষষ্ঠ বেতন কমিশনের আগেই সরকারি কর্মচারীদের ডিএ মিটিয়ে দিতে হবে। কিন্তু স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনালের এই রায় রাজ্য সরকার কার্যকর না করায় রাজ্য সরকারের মুখ্যসচিবের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করেন সরকারি কর্মচারি সংগঠন। করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই ভার্চুয়ালি শুনানির মধ্যে ১৬ ডিসেম্বর ২০২০ রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া ডিএ মিটিয়ে দিতে হবে বলে নির্দেশ দেন স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুন্যাল। এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে আরও একবার হাইকোর্টের দ্বারস্থ হল রাজ্য সরকার।
